স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলেই বন্ধ করা যাবে না অন্তর্বর্তীকালীন ভরণ-পোষণ; জানাল দিল্লি হাইকোর্ট

Delhi High Court: স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলেই বন্ধ করা যাবে না অন্তর্বর্তীকালীন ভরণ-পোষণ; জানাল দিল্লি হাইকোর্ট

নয়াদিল্লি: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে স্ত্রীকে তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। স্পষ্ট জানিয়ে দিল দিল্লি হাইকোর্ট।

সম্প্রতি একটি মামলার প্রেক্ষিতে দিল্লি হাইকোর্ট বলেছে, শুধুমাত্র বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলেই গার্হস্থ্য হিংসা আইন ২০০৫-এর অধীনে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধা থেকে স্ত্রীকে বঞ্চিত করা যাবে না।

বিচারপতি অনুপকুমার মেন্দিরাত্তা এক ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য করেছেন। ওই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ দিতে অস্বীকার করে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন হাইকোর্টে। জানা গিয়েছে, ট্রায়াল কোর্ট রায় দিয়েছিল স্ত্রীর বাড়ি ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৬,০০০ টাকা, মাসিক অন্তর্বর্তীকালীন ১১,৪৬০ টাকা এবং দুই নাবালিকা কন্যার খরচ বাবদ ৯,৮০০ টাকা দিতে হবে।

আরও পড়ুন– পৌষ সংক্রান্তির আগেই হু হু করে নামছে পারদ! আগামী কয়েকদিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, জেনে নিন

কিন্তু ওই ব্যক্তি স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে থাকার অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাটি খারিজের দাবিও করেন।

সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে আদালত বলেছে, নিম্ন আদালতের দেওয়া খোরপোষ সংক্রান্ত আদেশে হস্তক্ষেপ করার কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ নেই।

আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, রেকর্ড অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি বাড়ি বিক্রি করে স্ত্রী ও সন্তানকে বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন। কোনও ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা না করেই তাঁদের ভাড়া বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আদালত বলেছে, প্রাথমিক ভাবে স্বামীর আচরণ ও কাজকর্ম দেখে ‘গার্হস্থ্য হিংসার’ মামলাই করা উচিত। কারণ, স্ত্রী আর্থিক সংস্থান থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এই আর্থিক সংস্থান স্ত্রীর আইনি অধিকার। শুধু তাই নয়, যে বাড়িতে স্ত্রীর অধিকার রয়েছে সেই বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগটি ডিভি অ্যাক্টের ৩ নম্বর ধারায় ‘অর্থনৈতিক অপব্যবহারের’ আওতায় পড়ে।

আরও পড়ুন– রাম মন্দির প্রসঙ্গে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন বলিউডের এই অভিনেতা; সোশ্যাল মিডিয়ায় ধেয়ে এল কটাক্ষ !

বিচারপতি মেন্দিরাট্টা আরও বলেছেন, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ এবং অনৈতিক ট্রাফিক আইনের বিধানের অধীনে ওই ব্যক্তি এফআইআর করেছেন অনেক পরে। তার আগেই স্ত্রী গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ তুলে আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাই, শুধুমাত্র বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগের ভিত্তিতে ডিভি আইনের অধীনে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। এখনও সেই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সত্যতা প্রমাণিত হয়নি। রেকর্ড অনুসারে, গার্হস্থ্য হিংসা আইনের ১২ নম্বর ধারার অধীনে বিচার বাতিল করার আবেদন যুক্তিগ্রাহ্য নয়।

নিম্ন আদালত উল্লেখ করেছে ওই ব্যক্তির মাসিক আয় ছিল প্রায় ৫৭,৩০০ টাকা। আর বাইরে তাঁর ৩২,৭৩,৬৯৩ টাকার ব্যাঙ্ক ব্যালান্সও ছিল। কিন্তু স্ত্রীর কাছে নিজের এবং সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য আয়ের কোনও উৎস ছিল না। ফলে স্বামীকেই এই ভরণ-পোষণের দায় নিতে হবে।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন

https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F