বর্ষাকালে রাস্তায়, ড্রেনে বা গর্তে জল জমে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও মশার বংশবৃদ্ধি শুরু হয়। সংক্রমণ ও রোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। বর্ষাকালে মশার কামড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ে। ডেঙ্গির ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবে ছাগলের দুধের চাহিদাও বাড়ছে। বেশিরভাগ মানুষ ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ছাগলের দুধের উপর নির্ভর করছেন। তবে সবার আগে এটা জানা খুবই জরুরি, ছাগলের দুধ সত্যিই কি ডেঙ্গির চিকিৎসায় সহায়ক? না কি এটা নিছকই একটি মিথ!রায়বরেলি জেলার শিবগড়ের সরকারি আয়ুষ হাসপাতালের অফিসার ইনচার্জ ডা. স্মিতা শ্রীবাস্তব বলেছেন, ছাগলের দুধ আমাদের সকলের জন্যই খুব উপকারী। এই দুধে এমন অনেক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যেগুলি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।ছাগলের দুধে রয়েছে ভিটামিন বি৬, বি১২, সি এবং ডি-এর পাশাপাশি ফোলেট বাইন্ডিংয়ের মতো উপাদান যা আমাদের শরীরে ফলিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে কার্যকর। কিন্তু ছাগলের দুধ দিয়ে ডেঙ্গির চিকিৎসার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।ডা. স্মিতা শ্রীবাস্তব বলেন , ডেঙ্গি এমনই একটি রোগ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। যার কারণে আমাদের শরীরের প্লেটলেটের সংখ্যা কমতে শুরু করে। বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলে প্লেটলেট বাড়ানোর জন্য ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবে ছাগলের দুধ বা পেঁপে পাতা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বৈজ্ঞানিক ভাবে এটি একেবারে মিথের মতো। ছাগলের দুধে প্রচুর পরিমাণে সেলেনিয়াম রয়েছে, কিন্তু প্লেটলেটের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সেলেনিয়ামের কোনও বিশেষ অবদান নেই। তাই ডেঙ্গি রোগীদের জন্য ছাগলের দুধকে প্লেটলেট বাড়ানোর সমাধান হিসেবে বিবেচনা করা ভিত্তিহীন।ডা. স্মিতা শ্রীবাস্তব বলেন, তথ্যের অভাবের কারণে, অনেকে শোনা এবং ঘরোয়া প্রতিকারের সাহায্যে ডেঙ্গি নিরাময়ের চেষ্টা করেন। অনেকে আবার গিলয়, পেঁপে পাতা এবং ছাগলের দুধের সাহায্যে ডেঙ্গির চিকিৎসা করার চেষ্টা করেন। ডেঙ্গি জ্বরের সময় গিলয়, পেঁপে পাতা এবং ছাগলের দুধ ব্যবহারে কিছুটা উপকার পাওয়া যায়, তবে এটি সতর্কতার সঙ্গে এবং ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে গ্রহণ করা উচিত। ডেঙ্গি রোগীদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। জুস, সবুজ শাক-সবজি এবং চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ খেলে তবেই এই রোগ সারানো সম্ভব, শুধু ছাগলের দুধে কাজ হবে না।
