মানিক সাহার সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়

Flood Alert: প্রতি বর্ষায় বানভাসি আগরতলা, অবস্থা বদলাতে জরুরি নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

আগরতলা:  প্রতি বর্ষায় জমা জলে ডুবতে থাকে আগরতলা শহর। অবস্থা এমন হয় যে অনেকে বিমান ধরতে পারেন না৷ তাইবর্ষায় উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যাধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণের উপর গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা৷

আসন্ন বর্ষায় উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের সম্ভাব্য প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সচিবালয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহার সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বর্ষায় উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যবস্থাপনা ও প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, নগরোন্নয়ন দফরের সচিব অভিষেক সিং, অর্থ দফতরের সচিব অপূর্ব রায়, পরিকল্পনা (পরিসংখ্যান) দফতরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্র, আগরতলা পুর নিগমের কমিশনার ডা. শৈলেশ কুমার যাদব সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের

আরও পড়ুন- Wriddhiman Saha: “অতীতের ঘটনা মনে রাখতে চাই না, স্ত্রী ও ‘দাদা’-র জন্যেই ত্রিপুরা ছেড়ে বাংলায় ফিরেছি” অকপট ঋদ্ধিমান

সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্ষায় উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যাধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। প্রয়োজনে বহিরাজ্যের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। আগরতলা শহরে বৃষ্টির জল জমে থাকার সমস্যা বর্তমানে অনেকটাই কম। সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শহর ও নগর এলাকায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে স্যাটেলাইট হাসপাতাল এবং পিঙ্ক টয়লেট গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। সভায় মুখ্যমন্ত্রী শহর এলাকায় মশার উপদ্রব আরও কমানোর জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

সভায় নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব অভিষেক সিং জানান, ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি জুন মাসে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক থেকে কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে জুলাই এবং আগস্ট মাসে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি জানান, বর্ষা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নগরোন্নয়ন দপ্তর সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সমস্ত নগর শাসিত সংস্থার বন্যা প্রবণ এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বৃষ্টির জমা জল নিষ্কাশনের জন্য জল নিকাশি পাম্পসেটের ব্যবস্থা রয়েছে। জরুরি ক্ষেত্রে ক্যুইক রেসপন্স ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সমস্ত নগর শাসিত সংস্থাতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ, পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান, জলসম্পদ ইত্যাদি দফতরের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তাছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলায় মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। ড্রেনগুলি নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে। তাছাড়াও নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিব বন্যা নিয়ন্ত্রণে পূর্ত দফতরের (জলসম্পদ) গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে সভায় বিস্তারিতভাবে অবহিত করেন।

  সভায় আগরতলা পুরনিগমের কমিশনার ডা. শৈলেশ কুমার যাদব আসন্ন বর্ষায় আগরতলা পুরনিগম এলাকায় সম্ভাব্য প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাদি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন। তিনি আগরতলা শহরের চিত্র, বৃষ্টিপাতের পরিসংখ্যান, শহরে ড্রেনের চিত্র ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার পদ্ধতি, বন্যায় জল নিকাশী পাম্পগুলির পরিস্থিতি সহ শহরের উন্নয়নে গৃহীত দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন। পুর কমিশনার জানান, আগরতলা পুরনিগম এলাকায় বড় ড্রেনগুলি পরিষ্কারের ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া ম্যানুয়ালিও ড্রেনগুলিকে পরিষ্কার করা হয়। বর্তমানে আগরতলা পুরনিগম এলাকায় জল নিকাশীর জন্য ১৮টি পাম্পিং স্টেশন রয়েছে। তাছাড়াও জল নিকাশী ৬টি ডিজেল পাম্প রয়েছে। আগরতলায় ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের মাধ্যমে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও জল নিকাশী পাম্পগুলির কার্যকারিতা সম্পর্কে অবগত করা হয়। সমগ্র আগরতলা শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে ডিপিআর তৈরি করার প্রক্রিয়া চলছে বলে আগরতলা পুরনিগমের কমিশনার জানান। সভায় নগরোন্নয়ন দপ্তরের অধিকর্তা রজত পন্থ নগরোন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।