ইজরায়েল: গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে ঢুকে গণহত্যা চালানোর মূলচক্রী হামাস নেতা মহম্মদ ডেইফ মৃত৷ গত ১৩ জুলাই দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় ইজরায়েলী বিমানহানায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার বিবৃতি জারি করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে এমনই দাবি করল ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (IDF)৷ গত বুধবারই ইরানের এক হোটেলে খুন করা হয়েছে স্বাধীন প্যালেস্তাইনপন্থী সামরিক সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়েহকে৷ তারপরেই দিনই গাজার হামাস প্রধানকে নিকেশ করার দাবি করল ইজরায়েল৷
এদিন ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর তরফে বিবৃতি জারি করে দাবি করা হয়, ‘IDF (ইজরায়েলী সেনা) ঘোষণা করছে যে, গত ১৩ জুলাই, ২০২৪ IDF ফাইটার জেট খান ইউনিস এলাকায় হামলা চালিয়েছিল এবং গোয়েন্দা সূত্রে পাকা খবর পাওয়া গিয়েছে, সেই হানায় মহম্মদ ডেইফকে নিকেশ করা সম্ভব হয়েছে’৷
ইজরায়েলের দাবি, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে ঢুকে যে গণহত্যা চালিয়েছিল হামাস, তার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন এই ডেইফ-ই৷ ওই গণহত্যায় ১,১৯৭ জন ইজরায়েলী খুন হয়েছিল বলে দাবি করে ইজরায়েল৷
হামাসের দখলে থাকা গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত ১৩ জুলাই খান ইউনিস এলাকায় বিমানহানা চালিয়েছিল ইজরায়েল৷ ওই বিমানহানায় ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছিল৷ কিন্তু, সেসময় গাজার হামাস প্রধান ডেইফের মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি৷
We can now confirm: Mohammed Deif was eliminated.
— Israel Defense Forces (@IDF) August 1, 2024
মনে করা হচ্ছে, ডেইফকে মারার জন্যই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গাজার ওই এলাকায় প্রায় ৯০০ কেজির বোমা ফেলেছিল ইজরায়েল৷ মনে করা হচ্ছে, সেই সময় যে বাড়িতে মহম্মদ ডেইফ এবং তাঁর এক ডেপুটি থাকছিলেন, সেই বাড়ির জায়গায় বোমার আঘাতে তৈরি হয়েছে এক বিরাট গর্ত৷ অর্থাৎ, নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে সেই বাড়ি৷
এই ডেইফ ইজরায়েলে চালানো বহু হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিল৷ গাজায় সক্রিয় হামাস বাহিনীর প্রধান ছিল৷ অপর প্রধান ইয়াহায়া সিনওয়ারের পাশাপাশি সংগঠন চালাতেন তিনি৷ গাজায় হামাসের সশস্ত্র বাহিনীকে ও-ই নিয়ন্ত্রণ করত৷
আরও পড়ুন: ফের বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প! ‘ও ভারতীয় না কৃষ্ণাঙ্গ?,’ কমলা হ্যারিসকে নিয়ে এ কী কটাক্ষ
গত কয়েকদিন ধরেই ফের উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি৷ সম্প্রতি ইজরায়েলের আয়রন ডোম ভেঙে চুরমার করে ফের হামলা চালিয়েছিল হামাস৷ যদিও লেবাননের দিক থেকে আসা ওই হামলার দায় শিকার করেননি হামাস কর্তৃপক্ষ৷
তবে ওই হামলার পর পরই পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ তারপরেই ইরানের হোটেলে হামাস প্রধান হানিয়ার মৃত্যু৷
প্রসঙ্গত, ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার সে দেশের রাজধানী তেহরানে হাজির ছিলেন হানিয়া। হামাস প্রধান হানিয়া ছাড়াও তেহরানের ওই অনুষ্ঠানে ‘আমন্ত্রিত’ হিসাবে হাজির ছিলেন, প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের প্রধান জিয়াদ আল-নখালাহ। লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লার ‘ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল’ নইম কাশেম এবং ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মুখপাত্র মহাম্মদ আবদুলসালাম!
তবে অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা পরেই ইরানের একটি হোটেলের ঘর থেকে হামাস প্রধান হানিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার হয়৷ তার হত্যার পিছনে ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ রয়েছে বলে মনে করছে ইরান ও হামাস৷ ইরানের তরফে ইজরায়েলে পাল্টা হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামনেইনি৷