সামনেই ধনতেরস, তারপর দীপাবলি। সোনা কেনার মরশুম। কিন্তু দামের আগুনে মধ্যবিত্তের হাতে ছ্যাঁকা লাগার উপক্রম। ১০ গ্রাম সোনা কিনতে গেলে ৮০ হাজার টাকার বেশি খরচ করতে হচ্ছে! কেনা দূরে থাক, দাম শুনেই বুক দুরুদুরু। আপাতত যা জানা যাচ্ছে, তাতে সোনার দাম কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং অদূর ভবিষ্যতে দাম ২ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।ভারতে পুজো-পার্বন হোক বা অনুষ্ঠান, সোনা ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না। তাছাড়া হলুদ ধাতুকে শুভ বলে মান্যতা দেওয়া হয়। এর সঙ্গে শ্রী এবং সমৃদ্ধি জড়িয়ে রয়েছে। সোনার গয়না কেনার পাশাপাশি, সোনায় বিনিয়োগকেও শুভ বলে মনে করা হয়। তাছাড়া রিটার্নও ভাল মেলে। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সালে ১০ গ্রাম সোনার দাম ছিল ২৮ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয় ৩১,২৫০ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরে প্রায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি।এলকেপি রিসার্চের ভাইস প্রেসিডেন্ট যতীন ত্রিবেদী বলছেন, “ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং আর্থিক সংকটের প্রভাব পড়ে সোনার দামে। খুব কম সময়ের মধ্যে দাম দ্রুত বৃদ্ধি পায়।” বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চলছে। ইরানের সঙ্গে যে কোনও মুহূর্তে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে ইজরায়েল। আশঙ্কার প্রহর গুণছে গোটা বিশ্বই। অন্য দিকে, রাশিয়া ইউক্রেন সংঘাত এখনও মেটেনি। সব মিলিয়ে গোটা বিশ্ব জুড়েই টালমাটাল পরিস্থিতি চলছে। এর প্রভাব পড়ছে সোনার দামে।যতীন ত্রিবেদী আরও বলছেন, “ভূ-রাজনৈতিক সংকট তো আছেই। তার সঙ্গে গত পাঁচ বছরে রুপি দূর্বল হয়েছে। কোভিডের মতো মহামারীর মধ্যে দিয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্ব। ফলে সাড়ে তিন বছরে সোনার দাম ৪০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৭০ হাজার টাকায় পৌঁছে গিয়েছিল। অর্থাৎ ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি। এককথায় যা অভাবনীয়।”বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ৯ বছরে সোনার দাম তিন গুণ বেড়েছে। ভবিষ্যতেও যে এমনটা হবে না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহ যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে আগামী ৭ থেকে ১২ বছরের মধ্যে সোনার দাম ২ লাখ টাকায় পৌঁছে যেতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, আগামী ৬ বছরের মধ্যে এমনটা ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ অনিশ্চয়তা ক্রমশ বাড়ছে।১৯৮৭ সালে ১০ গ্রাম সোনার দাম ছিল ২,৫৭০ টাকা। এরপর দাম তিন গুণ বাড়তে সময় লেগেছিল ১৯ বছর। ২০০৬ সালে ১০ গ্রাম সোনার দাম দাঁড়ায় ৮.২৫০ টাকা। তারপর সোনার দাম তিন গুন হতে ৯ বছর সময় নেয়। এখন সোনার যা দাম, সেখান থেকে তিন গুণ বাড়তে বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী ৭ থেকে ১২ বছর সময় লাগবে না কি আরও কম সেটাই দেখার।
