মুর্শিদাবাদ: আর কিছু দিন বাদেই কালীপুজো। কালীপুজো মানেই আলোর উৎসব। আর এই উৎসবে অনেকেই বাজি ফাটান। তবে গত দু’বছর ধরেই সরকারী নির্দেশ মেনেই গ্রিন বাজি তৈরি করা হচ্ছে। তবে এবছর গ্রিন বাজি তৈরি হলেও বিক্রি নেই। আক্ষেপের সুর কারিগরদের।
মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের বালিয়া গ্রামে পবন মালাকার বংশ পরম্পরায় এই বাজি তৈরি করে থাকেন। তবে গত দু’বছর ধরেই গ্রিন বাজি তৈরি হলেও সেই ভাবে বিক্রি নেই। ফলে ভবিষ্যত প্রজন্ম আর এই ব্যবসায় আসতে চাননা বলেই জানান তাঁরা। তবে এবছর ফুলঝুড়ি, চড়কি, রকেট ও হাত চড়কা বেশ নজর কাড়ছে। ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫হাজার টাকা পর্যন্ত এই বাজি বিক্রি করা হচ্ছে। যদিও মালাকার পরিবার মুর্শিদাবাদ জেলার পুরাতন বাজির কারিগর। যারা এখন তৈরি করলেও সেই ভাবে বিক্রি নেই।
কয়েক দিন পরেই দীপাবলি। আলোর উৎসব ঘিরে দেশ জুড়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি পর্ব। দীপাবলি মানেই ছোটদের মধ্যে বাজি ফাটানোর উত্তেজনা। তবে নিষিদ্ধ বাজি রুখতে পুলিশের ধরপাকড়, সঙ্গে কিছুটা হলেও তৈরি হওয়া সচেতনতা এই দুয়ের জেরে মানুষের মধ্যে সবুজ বাজি কেনার চাহিদা বেড়েছে। CISR-নিরি (ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট)-র দীর্ঘ গবেষণার ফল সবুজ বাজি। এই বাজিতে বেরিয়াম যৌগ ব্যবহার করা হয় না। সাধারণ বাজিতে ব্যবহৃত বেরিয়াম মোনোক্লোরাইড, বেরিয়াম নাইট্রেট ও বেরিয়াম ক্লোরেট আদতে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ আর বায়ুদূষণের কারণ হয়। এই বাজি পোড়ালে বাষ্প বেরিয়ে আসে, তাই খুব বেশি ছাই, ধুলো উৎপন্ন হয় না। এই বাজি ফাটালে ১১০ থেকে ১২৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দ উৎপন্ন হয় না। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, সাধারণ বাজির তুলনায় এই বাজিতে ৩০ শতাংশ দূষণ কম হয়।
আর এই গ্রিন বাজি তৈরি করছেন পবন মালাকার ও তাঁর পরিবার। পবন মালাকারের কথায়, ‘দুর্গাপুজো বা কালীপুজোতে ব্যবসা জমলেও বছরের আর অন্য সময় এই ব্যবসার চাহিদা থাকে না। কয়েক মাস সিজিন থাকলেও বাকি সময় অন্য ব্যবসা করতে হয়।’