ব্যবসা-বাণিজ্য ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে অবশ্যই খুলে নিন NPS অ্যাকাউন্ট, দেখে নিন কী কী বিশেষ সুবিধা পাবেন ! Gallery January 19, 2024 Bangla Digital Desk অবসর শব্দটার মধ্যেই কোথাও একটা লুকিয়ে রয়েছে সুখের ইঙ্গিত। কর্মজীবনের ভার এই সময়ে আর থাকে না, থাকে না তেমন সাংসারিক দায়িত্বও। মনে করাই হয় যে অবসর হবে স্বাচ্ছন্দ্যের সময়, নিজের মতো করে কাটানোর দিন। কিন্তু, হাতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা না থাকে, তাহলে তা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে, অবসর সুখের নয়, বরং দুশ্চিন্তার সময় বয়ে নিয়ে আসবে জীবনে। কেন না, কাজ থাকবে না, ফলে, থাকবে না উপার্জনও। যে টাকা জমানো হয়েছিল, তা খরচ হতে থাকবে একটু একটু করে, বাড়বে দিনযাপনের অসুবিধা। যাঁরা পেনশন লাভ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে চিন্তা কিছু কম। কিন্তু যাঁদের সে উপায় নেই, তাঁদের অবসরের আগে থেকেই ভাবতে হবে একটা তহবিল গড়ে তোলার কথা। এ ব্যাপারে আমাদের সবারই কাজে আসতে পারে ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম, সংক্ষেপে এনপিএস। বিগত ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্রাথমিক ভাবে ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (এনপিএস) চালু করা হয়েছিল। মূলত সরকারি কর্মীদের রাজ্য সরকারি এবং কেন্দ্রীয় সরকারি পেনশন ব্যবস্থা প্রতিস্থাপন করার জন্যই এটা আনা হয়। ২০০৯ সাল থেকে অবসরকালীন বিনিয়োগ পরিকল্পনাকারী অন্যান্যদেরও এই স্কিমে টাকা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ফলে এখন বেসরকারি সংস্থার বেতনভোগী কর্মী এবং স্বনির্ভর মানুষরাও এনপিএস ব্যবহার করতে পারেন। অন্যান্য বিনিয়োগের মতো এক্ষেত্রেও কিছু শর্ত এবং যোগ্যতা রয়েছে। সেটা হল – বয়স, নথিপত্র ইত্যাদি। এনপিএস-এ বিনিয়োগ শুরু করার আগে সেই যোগ্যতা পূরণ করতে হয়। তাই যদি এনপিএস-এ বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা থাকে, তার জন্য নিম্নোক্ত যোগ্যতাগুলি থাকা বাঞ্ছনীয়: ১. এনপিএস আবেদন জমা দেওয়ার কালে বিনিয়োগকারীর বয়স ১৮ বছরের উর্ধ্বে আর ৭০ বছরের নিচে হতে হবে।২. এর জন্য ভারতে বসবাসকারী, এনআরআই হওয়া আবশ্যক।৩. এনপিএস আবেদনের সময় আধার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদির মতো বৈধ কেওয়াইসি নথিপত্র জমা করতে হবে।৪. তৃতীয় ব্যক্তির হয়ে কিন্তু কোনও এনপিএস অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না। ৫. হিন্দু অবিভক্ত পরিবার (এইচইউএফ), ভারতীয় বংশোদ্ভূত (পার্সনস অফ ইন্ডিয়ান অরিজিন) এবং ওভারসীজ সিটিজেন অফ ইন্ডিয়া (ওসিআই) এনপিএস-এ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না। এনআরআই-দের ক্ষেত্রে এনপিএস-এ অ্যাকাউন্ট খোলার যোগ্যতা:কোনও নন-রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ান বা এনআরআই এনপিএস অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করতে চান, তাঁরা সেটা করতেই পারেন। তবে সেক্ষেত্রে তাঁকে কয়েকটি যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। সেগুলি কী কী। সেটাই দেখে নেওয়া যাক। ১. এনপিএস অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগকারী এনআরআই-এর বয়সসীমা হতে হবে ১৮ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে।২. কেওয়াইসি সংক্রান্ত নথি সঠিক ভাবে পূরণ করা আবশ্যক।৩. এনআরআই বিনিয়োগকারীর একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকা জরুরি।৪. এর পাশাপাশি এনপিএস বিনিয়োগে ইচ্ছুক এনআরআই বিনিয়োগকারীর একটি বৈধ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও থাকতে হবে। সেটা নন-রেসিডেন্ট এক্সটার্নাল অ্যাকাউন্ট অথবা নন-রেসিডেন্ট অর্ডিনারি অ্যাকাউন্ট হবে। ৫. এনআরআই-এর ভারতীয় নাগরিকত্ব আর না থাকলে তাঁর এনপিএস অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে।শর্তাবলী এবং যোগ্যতার কথা আপাতত স্পষ্ট। এর ঠিক পরেই যে অবধারিত প্রশ্নটা মাথাচাড়া দেয়, তা হল ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেমে একটা অ্যাকাউন্ট কীভাবে খুলতে হয়?সুবিধার ব্যাপার এই যে এখন অনলাইন আর অফলাইন, উভয় মাধ্যমেই ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। সবার প্রথমে দেখে নেওয়া যাক কীভাবে অনলাইনে এই অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। একটি এনপিএস অ্যাকাউন্ট অনলাইনে খোলার জন্য, আমাদের অবশ্যই সেন্ট্রাল রেকর্ডকিপিং এজেন্সির (সিআরএ) একটি ওয়েবসাইটে যেতে হবে। কেন না, এই সংস্থাগুলি ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম ডেটাবেসের তত্ত্বাবধান যেমন করে, তেমনই অন্য দিকে অ্যাকাউন্ট খোলার এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রক্রিয়াগুলিকে পরিচালিত করে। অতএব, দেখে নেওয়া যাক কয়েকটি সেন্ট্রাল রেকর্ডকিপিং এজেন্সির তালিকা:– Computer Age Management Services– KFin Technologies– Protean eGov Technologies অনলাইনে এনপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি:১. সবার প্রথমে উপরে উল্লিখিত সেন্ট্রাল রেকর্ডকিপিং এজেন্সির মধ্যে যে কোনও একটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে।২. দিতে হবে একে একে মোবাইল নম্বর, প্যান নম্বর এবং ই-মেল আইডি, এটা না থাকলে আগে একটা ই-মেল আইডি তৈরি করে নিতে হবে।৩. মোবাইল নম্বরে যে ওটিপি আসবে, সেটা দিতে হবে।৪. ফলো অপশনে ক্লিক করে স্ক্রিনে প্রদর্শিত নির্দেশাবলী যথাযথ ভাবে পূরণ করতে হবে।৫. সব তথ্য দেওয়া হয়ে গেলে একটা পার্মানেন্ট রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর, সংক্ষেপে PRAN পাওয়া যাবে। এটাই এনপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে তার প্রমাণ, এর ভিত্তিতেই অ্যাকাউন্টে লগ ইন করা যাবে, সব কাজ করা যাবে। আর কেউ যদি অফলাইনে ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম অ্যাকাউন্ট খুলতে চান?এনপিএস অ্যাকাউন্ট অফলাইনে খোলার জন্য আমাদের নিকটবর্তী পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স, সংক্ষেপে PoP সেন্টারে যেতে হবে। এই PoP-গুলোই আমাদের ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশন রেজিস্ট্রি করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সে কারণে এনপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে সহায়তার অনুমোদিত জায়গাও এগুলোই। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস এবং কিছু সরকারি অফিস। কোথায় গেলে ভাল হয়, তা জানার জন্য আমরা CRA-এর ওয়েবসাইট যেমন NSDL e-Gov বা KFin Tech বা পেনশন ফান্ড রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি, সংক্ষেপে PFRDA ওয়েবসাইটের মাধ্যমে PoP-এর একটি তালিকা দেখে নিতে পারি। অফলাইনে এনপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি:১. বুঝে নিতে অসুবিধা নেই যে অফলাইনে এনপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতির মধ্যে প্রথম ধাপই হল এই PoP সেন্টার খুঁজে বের করা।২. সেখানে গিয়ে অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম ফিল আপ করতে হবে।৩. মোবাইল নম্বর, প্যান নম্বর এবং ই-মেল আইডি- এই সব তথ্য জমাদিতে হবে, অর্থাৎ কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।৪. টায়ার ১ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য টাকা জমা দিতে হবে, সেটা একেবারে ন্যূনতম রাশি ৫০০ টাকাও হতে পারে। কত জমা দেবেন, সেটা যিনি অ্যাকাউন্ট খুলছেন, তাঁর সুবিধার উপরে নির্ভরশীল।৫. ফিল আপ করা ফর্মের সঙ্গে এবার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের সেলফ অ্যাটেস্টেড করা কপি জমা দিতে হবে।