অধীরকে হারানোর চ্যালেঞ্জ হুমায়ুনের৷

Humayun Kabir: ‘আমাকে চমকানো সহজ নয়’, মমতার ধমকের পরেও সরব হুমায়ুন! অধীরকে ২ লক্ষ ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ

কলকাতা: গতকালই কালীঘাটে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি বৈঠকে তাঁকে সতর্ক করেছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত থাকতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ফের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই বিস্ফোরক মন্তব্য করে দাবি করলেন, তাঁকে চমকানো অত সহজ নয়৷

শুধু তাই নয়, আত্মবিশ্বাসী হুমায়ুন আরও দাবি করলেন, তাঁর উপরে দলনেত্রী ভরসা রাখলে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে অধীর চৌধুরীকে ২ লক্ষ ভোটে হারিয়ে দেখাবেন তিনি৷

সূত্রের খবর, গতকাল কালীঘাটে লোকসভা নির্বাচনের জন্য মুর্শিদাবাদ জেলার প্রস্তুতি বৈঠকে হুমায়ুন কবীরের উদ্দেশ্যে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তুমি এত কথা বলো কেন? অতীতে একাধিকবার প্রকাশ্যেই দলবিরোধী মন্তব্য করে তৃণমূলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন হুমায়ুন কবীর৷ এমন কি, পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তাঁর অনুগামীরা টিকিট না পাওয়ায় আরও বেশ কয়েকজন বিধায়ককে নিয়ে নির্দল প্রার্থী দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন হুমায়ুন৷

আরও পড়ুন: প্রতারণা কাণ্ডে আদালতে হাজিরা নুসরতের, চার হাজার টাকার বন্ডে জামিন নিলেন বসিরহাটের সাংসদ

তবে বার বার তৃণমূল নেতৃত্ব সতর্ক করলেও হুমায়ুন আছেন হুমায়ুনেই৷ এ দিনও ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, ‘মুর্শিদাবাদে রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে হুমায়ুন কবীর একটা বিরল নাম৷ তাঁকে চমকে ধমকে লাভ নেই৷’ তৃণমূল তাঁকে বহিষ্কার করলেও যে তার জন্য তিনি প্রস্তুত, সেকথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন হুমায়ুন কবীর৷ দাবি করেছেন, দল বহিষ্কার করলে তার জন্যও তিনি তৈরি৷ ভরতপুরের বিধায়কের কথায়, ‘ওটা নিয়ে আমি পরোয়া করি না৷ দল ছাঁটাই করে দিলে প্রস্তুত আছি৷ আর আমাকে ছাঁটাই করলে কোথায় রাস্তা খুঁজতে হয়, সেটা আমি জানি৷’ হুমায়ুন কবীর মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৬ সালে টেবল চিহ্ন নিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়েও তৃণমূল এবং বিজেপি প্রার্থীর জমানত জব্দ করেছিলেন তিনি৷

এই প্রসঙ্গেই রীতিমতো আত্মবিশ্বাসের সুরে ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, ‘দিদি আমার প্রতি আস্থা রাখলে বহরমপুরে অধীর চৌধুরীকে ২ লক্ষ ভোটে হারিয়ে প্রমাণ করব যে মানুষ হুমায়ুন কবীরকে নেতা হিসেবে মানে কি না৷’

তবে দলনেত্রীর প্রতি অবশ্য শ্রদ্ধাশীলই রয়েছেন হুমায়ুন৷ তাঁর কথায়, ‘দিদি আমাকে স্নেহ করেন৷ তাই কোনও সময় ভুল করলে আমাকে বকাও দেন৷ এটায় আমি কিছু মনে করি না৷ মনে করি তিনি আমার গুরুজন,আমার নেত্রী, তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করি৷ কিন্তু তাঁকে সামনে রেখে কিছু এমন ব্যক্তি মুর্শিদাবাদ জেলায় দলের পাট্টা নিয়ে বসে আছে যে তাঁদের অঙ্গুলিহেলনে চলতে হবে৷ মুর্শিদাবাদের মানুষকে কেউ যেন এত অবহেলা না করে৷ কেউ চ্যাং, ব্যাং ২৬-২৮-৩০ বছরের ছেলেরা ষাট, বাষট্টি, সত্তর বছরের নেতৃত্বকে অবহেলা করবে, নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করবে, এটা মন থেকে মেনে নেওয়া যায় না৷’

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিও বিশেষ আর্জি জানিয়েছেন হুমায়ুন৷ তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ্য নেতৃত্ব হয়ে উঠেছেন৷ তাঁর কাছে গোটা রাজ্যের মানুষের প্রতি সুবিচার করার আবেদন করব৷ কারও কথা শুনে উনি যেন প্রতিহিংসাপরায়ণ না হয়ে ওঠেন৷’