উত্তর দিনাজপুর: এক সময় গ্রাম বাংলার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল হ্যারিকেন। সন্ধের অন্ধকার নামলেই বাড়িতে বাড়িতে জ্বলে উঠত সে। তারই আলোর ছটায় চলত লেখাপড়া, রান্নাবান্না। কিন্তু এখন চারিদিকে বৈদ্যুতিন আলো এসে যাওয়ায় হ্যারিকেনের প্রয়োজনীয়তা প্রায় ফুরিয়েছে। তবে এবার নতুন রূপে ফিরে এসে মানুষের বাড়ির শোভা বৃদ্ধি করছে সেই হ্যারিকেন।
বর্তমানে শৌখিন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। অনেকেই হোমডেকরেটার হিসেবে অন্য ধরনের জিনিস পছন্দ করেন। ঘর সাজানোর জন্য সেক্ষেত্রে যদি মাটির হ্যারিকেন থাকে তবে তো কথাই নেই। বিশ্বায়নের যুগে ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে সাবেকি হ্যারিকেন। ঠিক যখন এমন অবস্থা, তখনই এল বড় বাঁকবদল। এবার হারিয়ে যেতে বসা হ্যারিকেন দিয়েই সাজবে ঘর, জ্বলে উঠবে আলো। মাটির হ্যারিকেন শোভা বর্ধন করছে বাড়িতে বাড়িতে।
মাটির হ্যারিকেন দিয়েই ঘর সাজানোর কাজ করছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ হাটপাড়ার মৃৎশিল্পীরা।মৃৎশিল্পী বিকাশ রায় বলেন, এটা আসলে এক ধরনের ল্যাম্পশেড। ওয়ারিং কানেকশনের মাধ্যমে লাইট জ্বলে এই মাটির হ্যারিকেনের মধ্যে। নানা ধরনের নকশা করা আকর্ষণীয় এই টেরাকোটার হ্যারিকেনগুলো সাবেকি গৃহসজ্জার কাজে অর্থাৎ টিভি বা ড্রয়িং টেবিল সাজানোর জন্য কিংবা বাগান বাড়ি সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলতে ব্যবহার হয়ে থাকে। মৃৎশিল্পী বিকাশ রায় আরও জানান, এই হ্যারিকেনের সব থেকে বেশি চাহিদা শিলিগুড়ি, কলকাতা, মালদহ-সহ বড় বড় শহরগুলিতে।হারিকেনের মতো দেখতে মাটির এই ল্যাম্পশেডগুলোর দাম ৭০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে হয়। এক একটি তৈরি করতে ৪ থেকে ৫ দিন সময় লাগে। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ খানা হ্যারিকেন তৈরি করেন এক একজন মৃৎশিল্পী।