টানা ন’দিন ধরে নজিরবিহীন-ভাবে স্থবির থাকার পর অবশেষে এগোচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। অবশেষে, বিদর্ভ, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর, উপ-হিমালয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারের কিছু অংশে অগ্রসর হয়েছে বর্ষা।আগামী ৫ দিনের দেশব্যাপী পূর্বাভাস: আইএমডি-র পূর্বাভাস অনুযায়ী, একটি ঘূর্ণাবর্ত উত্তর-পূর্ব অসম এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এবং আরেকটি উত্তর বাংলাদেশ এবং নিম্ন ট্রপোস্ফিয়ারিক স্তরে অবস্থিত রয়েছে। আরও, একটি সিস্টেম রয়েছে বিহারের কেন্দ্রীয় অংশ থেকে নাগাল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত।একাধিক ঘূর্ণাবর্তের অবস্থানের জেরেই নিম্ন ট্রপোস্ফিয়ারিক স্তরে বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে শক্তিশালী দক্ষিণ-পশ্চিমী/দক্ষিণমুখী বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে বলে সর্বশেষ রিপোর্টে জানিয়েছে IMD ।এর ফলে আগামী কয়েকদিনে অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, উপ-হিমালয় পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়, বজ্রপাত এবং দমকা হাওয়া (৩০-৪০ কিমি গতিবেগে) সহ ব্যাপক ভারী থেকে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে আগামী সাতদিন।২০থেকে ২৩ জুন বিহার এবং ২০ জুন ঝাড়খণ্ডে বিচ্ছিন্ন ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বিক্ষিপ্তভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত সঙ্গে বজ্রপাত এবং দমকা হাওয়ার (৪০-৫০ kmph) সতর্কতা রয়েছে আগামী পাঁচ দিন।আগামী ৫ দিনে বেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কোঙ্কন, গোয়া এবং পরবর্তী পাঁচ দিনের মধ্যে মধ্য মহারাষ্ট্র এবং মারাঠওয়াড়াতে আঘাত হানতে পারে তুমুল বৃষ্টি৷একইসঙ্গে আগামী পাঁচ দিনে কর্ণাটক, কেরল, মাহে, লাক্ষাদ্বীপ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়, বজ্রপাত এবং দমকা হাওয়া (৩০-৪০ কিমি গতিবেগে) ও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।২০-২৩ জুন মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক এবং কেরল-মাহে এবং ২২ জুন তামিলনাড়ুকে ভিজিয়ে দিতে পারে ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টি।আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত সঞ্চালন দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থান এবং আশেপাশের অঞ্চলের উপর অবস্থিত, যার ফলে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ, বিদর্ভ, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানের উপর দিয়ে বজ্রঝড়, বজ্রপাত এবং দমকা হাওয়া (৪০-৬০ কিমি)-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।অন্যদিকে, ২৩ জুন হরিয়ানা-চণ্ডীগড়-দিল্লিতে তাপপ্রবাহ থেকে তীব্র তাপপ্রবাহের অবস্থা হতে পারে।ভারতের আবহাওয়া দফতরের দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর উত্তর সীমা এখন অমরাবতী, গোন্দিয়া, দুর্গ, রামপুর (কালাহান্ডি), মালদহ, ভাগলপুর এবং রাক্সৌলের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে।আইএমডি আরও জানিয়েছে যে বর্ষা উত্তর আরব সাগর, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, উপ-হিমালয় পশ্চিমবঙ্গের অবশিষ্ট অংশগুলিতে আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য পরিস্থিতি অনুকূল।আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের কিছু অংশ, বিহারের আরও কিছু অঞ্চল এবং পূর্ব উত্তর প্রদেশের কিছু অংশ পর্যন্ত এগোতে চলেছে বর্ষা। এমনটাই ইঙ্গিত।বৃহস্পতিবার (২০ জুন) উত্তর-পূর্ব ভারত এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল জুড়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। অসম, মেঘালয়, উপ-হিমালয় পশ্চিমবঙ্গ, অরুণাচল প্রদেশ, কোঙ্কন, গোয়া, উপকূলীয় কর্ণাটক এবং কেরলের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে প্রবল ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।অন্যদিকে, প্রধানত ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমির উপরের এবং মাঝামাঝি অঞ্চলে সর্বাধিক তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হতে পারে বৃহস্পতিবার।শুক্রবার (২১ জুন) : উপ-হিমালয় পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, অসম, মেঘালয়, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক এবং কেরলের বিচ্ছিন্ন জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, পূর্ব মধ্যপ্রদেশ, বিদর্ভ এবং ছত্তিশগড়ে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ব্যাপক বৃষ্টিপাত হতে পারে শুক্রবার।পাশাপাশি বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে উত্তরাখন্ড, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি, পঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, মধ্য মহারাষ্ট্র, উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ, ইয়ানাম, তেলেঙ্গানা এবং দক্ষিণ অভ্যন্তরীণ কর্ণাটকে।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে যে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে উপ-হিমালয় পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, অসম, মেঘালয় এবং অরুণাচল প্রদেশে বিচ্ছিন্ন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরায় ২২ এবং ২৩ জুন বিচ্ছিন্ন ও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।আগামী পাঁচ দিনে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ দমকা হাওয়া (৩০-৪০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে) ও বিস্তৃত থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷