কর কাঠামো নিয়ে কী প্রত্যাশা মধ্যবিত্তের?

Budget 2024: শেষ ৩টি বাজেটে কীভাবে বদলেছে কর ব্যবস্থা? এই বাজেট থেকে কী প্রত্যাশা করদাতাদের?

নয়াদিল্লি: আজ, মঙ্গলবার সংসদে পেশ হতে চলেছে বাজেট (অর্থবর্ষ ২০২৪-২৫)। আয়কর পরিবর্তন নিয়ে বিশেষ করে মধ্যবিত্ত করদাতাদের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। গত তিনটি কেন্দ্রীয় বাজেটে আয়কর কাঠামোর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সেই নিয়েই  বিশদ আলোচনা করা হল।

কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২১-এ আয়কর কাঠামোর পরিবর্তন:

কোনও বড় পরিবর্তন:
ব্যক্তিদের জন্য আয়কর স্ল্যাব বা হারে কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি।

পেনশন এবং আমানত থেকে সুদ বাবদ আয়-সহ ৭৫ বছর বা এর বেশি বয়সি ব্যক্তিদের আয়কর রিটার্ন দাখিল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

যাঁরা লেনদেনের ৯৫% ডিজিটাল ভাবে সম্পন্ন করেছেন, তাঁদের জন্য ট্যাক্স অডিটের সীমা ৫ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ কোটি টাকা করা হয়েছে।

সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের জন্য নেওয়া ঋণের সুদের উপর অতিরিক্ত দেড় লক্ষ টাকা ছাড় আরও এক বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল।

কোভিড-১৯ অসুস্থতা সম্পর্কিত চিকিৎসা ব্যয়ের জন্য কর ছাড় প্রবর্তন করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: জানেন কি পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে ভারতের শেষ স্টেশন, এই স্টেশনের গল্প শুনলে চমকে উঠবেন

কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২২-এ আয়কর কাঠামোর পরিবর্তন:

আয়কর কাঠামোর হারে কোনও পরিবর্তন হয়নি।

অতিরিক্ত ট্যাক্স প্রদানের জন্য আইকর ফাইলের বছর থেকে ২ বছরের মধ্যে একটি আপডেট রিটার্ন দাখিল করা যেতে পারে।

ভার্চুয়াল ডিজিটাল অ্যাসেট (ভিডিএ) স্থানান্তর থেকে আয়ের উপর ৩০% ট্যাক্স, অধিগ্রহণের খরচ ছাড়া কোনও ছাড় নেই। ভিডিএ স্থানান্তরের জন্য করা অর্থপ্রদানের উপর ১% টিডিএস চালু করা হয়েছিল।

জাতীয় পেনশন স্কিমে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ট্যাক্স ডিডাকশনের সীমা ১০% থেকে বাড়িয়ে ১৪% করা হয়েছে।

দীর্ঘ মেয়াদি মূলধনে লাভের (LTCG) উপর সারচার্জ ১৫% করা হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৩-এ আয়কর কাঠামোর পরিবর্তন:

ধারা ৮৭এ (নতুন ব্যবস্থা):
ধারা ৮৭এ-এর অধীনে করযোগ্য ৭ লক্ষ টাকা আয়ের জন্য ট্যাক্স রিবেট বাড়িয়ে ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে। কার্যকরভাবে এই কাঠামোয় (নতুন ব্যবস্থা) অনেককেই আয়কর দিতে হচ্ছে না।

বর্ধিত ট্যাক্স স্ল্যাব এবং ছাড়ের সীমা (নতুন ব্যবস্থা):
কর ছাড়ের সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং নতুন ব্যবস্থার অধীনে ট্যাক্স স্ল্যাব বৃদ্ধি করা হয়েছে, নিম্ন ও মধ্য আয়ের উপার্জনকারীরা উপকৃত হয়েছেন।

ট্যাক্স স্ল্যাব (নতুন ব্যবস্থা):
0 – ৩ লক্ষ টাকা: নেই
৩ – ৬ লক্ষ টাকা: ৫%
৬ – ৯ লক্ষ টাকা: ১০%
৯ – ১২ লক্ষ টাকা: ১৫%
১২ – ১৫ লক্ষ টাকা: ২০%
১৫ লক্ষ টাকার উপরে: ৩০%

স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন:
নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থার অধীনে ৫০ হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন চালু করা হয়েছে।

সারচার্জ হ্রাস:
৫ কোটি টাকার উপরে আয়ের জন্য সর্বোচ্চ সারচার্জের হার ৩৭% থেকে কমিয়ে ২৫% করা হয়েছে।

লিভ এনক্যাশমেন্ট:
বেসরকারি কর্মচারীদের জন্য লিভ এনক্যাশমেন্টের উপর কর ছাড়ের সীমা ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: রিল বানাতে ডিএসএলআর চাই, তাই মালিকের বাড়ির গয়না চুরির অভিযোগ! ধৃত পরিচারিকা

বাজেট ২০২৪ নিয়ে করদাতার প্রত্যাশা:

সংশোধিত ট্যাক্স স্ল্যাব:
অনেকেই আশা করছেন যে, সরকার কর ছাড়ের সীমা বাড়িয়ে দেবে।বর্তমান ৩ লক্ষ টাকা যে ছাড়ের স্যাব রয়েছে, তা বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হবে।

ক্রমবর্ধমান কর অব্যাহতি:
এফপিএসবি ইন্ডিয়ার সিইও কৃষাণ মিশ্রর বক্তব্য, আয়ের পরিমাণ যেমন বাড়ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কর ছাড়ের সীমা ৭.৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লক্ষ টাকা করলে মধ্য-আয়ের গোষ্ঠীর মধ্যে সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের ভাবনাকে উৎসাহিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।

নতুন ব্যবস্থাকে আকর্ষণীয় করে তোলা:
বিএমএল মুঞ্জাল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক সঙ্গীতা দত্ত গুপ্ত বলেন যে, বেতনভোগী করদাতারা নতুন কর ব্যবস্থাকে পুরোপুরি গ্রহণ করেননি। তাঁর বক্তব্য, যদি ২৫ লাখ টাকার উপরে আয়ের ক্ষেত্রে ৩০% করের হার আরোপ করা হয়, তাহলে কর ব্যবস্থা আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

অন্যান্য প্রত্যাশা:
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন হাইক:
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন করযোগ্য আয় হ্রাস করে। যা বর্তমান ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়ানো হতে পারে।