Ind vs Eng: রানের পাহাড় তৈরির লক্ষ্যে এগোচ্ছে ভারত, রোহিত-পূজারার ব্যাটে ভরসা

ভারত-৩২৯, ৫৪/ ১

ইংল্যান্ড- ১৩৪ 

#চেন্নাই: 

দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারতের স্কোর ১ উইকেটে ৫৪ রান৷ প্রথম ইনিংসে ১৯৫ রানে এগিয়ে থাকার সুবাদে এই মুহূর্তে লিড  ২৪৯৷ ইংল্যান্ডকে প্রথম ইনিংসে আটকে রাখার পর ভারতীয় ওপেনারদের একজন অবশ্য প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন৷ তিনি শুভমান গিল৷ তিনি প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ফ্লপ৷ দিনের শেষে ব্যাটিং ক্রিজে রয়েছেন রোহিত শর্মা ও চেতেশ্বর পূজারা৷ রোহিতের রান ২৫ ও পূজারা -র রান ৭৷

ফলো অন করানোর সম্ভবনা হতে পারে এই বিপত্তিটা কোনওরকমে ঠেলে সরিয়ে দিলেও ইংল্যান্ড বেশিক্ষণ লড়াই করতে পারল না৷  চা বিরতিতে ৮ উইকেটে ১০৬-র ১৩৪ তে শেষ ব্রিটিশ সিংহদের জারিজুরি৷ চেন্নাইতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট গেল অশ্বিনের ঝোলায়৷ এদিকে ইশান্ত , অকসর প্যাটেল ২ টি করে এবং মহম্মদ সিরাজ একটি উইকেট নেন৷ অশ্বিন মাত্র ৪৫ রান দিয়ে ৫ টি উইকেট নেন৷

নবম উইকেটে ঋষভ পন্থের দুরন্ত ক্যাচের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই৷

চেন্নাইয়ের প্রথম টেস্টে হারের পর ভারতীয় দল কী ‘খেলা হবে’ মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছে৷ বিতর্ক অবশ্য বাইশ গজে না আনাই ভালো ৷ কারণ ভারতীয় দল প্রথম টেস্টের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে জবরদস্ত পারফরম্যান্স৷  ভারতের প্রথম ইনিংসের ৩২৯ -র পর ব্যাট করতে নামাটা মধুর হল না ইংল্যান্ডের ৷ লাঞ্চের আগের সেশন পরপর উইকেট খোয়ালো তারা৷ এর মধ্যে রয়েছেন গত টেস্টে ধামাকা ইনিংস খেলা ইংল্যান্ড অধিনায়কও ফিরে গেলেন প্যাভিলিয়নে৷

রবিবারের চিপকে ইশান্ত শর্মার প্রথম শিকার ররি বার্নস৷ এরপর ডম সিবলে, ডন লরেন্স, জো রুট পরপর আউট হয়ে যান৷ ররি খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে গেলেও বাকিদের মধ্যে একমাত্র দু অঙ্কের রানে পোঁছন সিবলে তিনি ১৬ রান করেন৷ লরেন্স, রুট ৯ ও ৮ রান করেন৷ অশ্বিন ২ টি ও অক্ষর প্যাটেল আরও একটি উইকেট নিয়েছেন৷

লাঞ্চের পর ফিরে ক্রিজে নিজেদের ফেভিকল দিয়ে আটকে রাখার একটা চেষ্টা করেছিলেন ওল্লি পোপ, বেন ফোকস রা কিন্তু তাঁদের লড়াই ভারতীয় বোলারদের আটকানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না৷ ওল্লি  ২২ করে আউট হন৷ এরপরেও উইকেট পড়ে মইন আলি, অলি স্টোনের৷

৩৩ রানে ব্যাট করছিলেন আর রবিবাসরীয় চেন্নাইতে সকাল সকাল নিজের অর্ধশতরান পূরণ করা ছাড়া ভারতের বিশেষ কিছু বলার মতো হল না ৷ ৬ উইকেটে ৩০০ রানে প্রথম দিন শেষ করার পর ৩২৯ রানে অলআউট হয়ে গেল দল৷ ঋষভ পন্থ করেন ৫৮ রান৷ তাঁর ৭৭ বলের ইনিংসে রয়েছে ৭ টি চার ৩ টি ছয়৷

ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম ইনিংসের সফলতম বোলার মইন আলি৷ তিনি নিয়েছেন ৪ উইকেট৷

এদিকে এর আগে শনিবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চেন্নাই পার্ট টু। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতীয় সর্মথকরা দ্বিতীয় টেস্টকে মজা করে এই নামেই ডাকছেন। চিপকে এই ম্যাচটা ভারতের প্রতিশোধ ম্যাচ বললেও কম বলা হয়। ইংলিশদের জন্য বাইশ গজে দুরন্ত ঘূর্ণির পাকাপাকি ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কোনও অতিথি সেবা নয়, ঘূর্ণি উইকেটের গরম কড়াইতে ফেলে বিপক্ষকে চিবিয়ে খাওয়াই লক্ষ্য ভারতের। ভাগ্য সহায় হল ভারতের। টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিল ভারত। শুরুতেই ধাক্কা। দ্বিতীয় ওভারে ওলি স্টোনের বলে এলবি ডব্লিউ হয়ে ফিরলেন শুভমান গিল। হঠাৎ করে ভেতরে ঢুকে আসা বল ব্যাট নামাবার সময় পাননি গিল।

যাই হোক, পূজারা নেমে খেলাটা ধরার চেষ্টা করলেন। সিগনেচার স্টাইলে দেখে শুনে, থিতু হয়ে ব্যাট করছিলেন টিম ইন্ডিয়ার নতুন ‘ওয়াল’। কিন্তু জ্যাক লিচের বলে স্লিপে স্টোকসকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। অধিনায়ক বিরাট কোহলি যখন ব্যাট করতে এলেন মুখে প্রত্যয়ের ছাপ ছিল স্পষ্ট। কিন্তু মইন আলির একটা ড্রিফট হওয়া বলে বোল্ড হলেন খাতা না খুলেই। বলটা হাওয়ায় অনেকটা ঘুরে অফ স্টাম্পের বেল ফেলে দিল। কিছুটা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন বিরাট। মধ্যাহ্নভোজের আগেই তিন উইকেট পড়ে গেল ভারতের।

কিন্তু এই জায়গা থেকে ভারতের ইনিংস সামলে নিলেন দুই সিনিয়র রোহিত এবং রাহানে। চিপকের টার্নিং উইকেটে অসাধারণ ব্যাট করলেন রোহিত শর্মা। ইংলিশ পেসার, স্পিনারদের সামলে শতরান করলেন মধ্যাহ্নভোজের কিছু পরে। স্ট্রেট ড্রাইভ, কভার ড্রাইভ, লেট কাট, পুল- একাধিক শট খেলতে দেখা গেল হিটম্যানকে। দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস খেললেন মুম্বইকার। শেষপর্যন্ত থামলেন ১৬১ রানে। রাহানে ফিরে গেলেন ৬৭ করে। এই দুজনের ১৬২ রানের পার্টনারশিপ লড়াইয়ে ফেরাল ভারতীয় দলকে।

দিনের শেষে ক্রিজে আছেন পন্থ এবং অক্ষর প্যাটেল। নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলেছেন অক্ষর। ভারতের লক্ষ্য দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশনে চারশো তুলে ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠানো। প্রথম দিনেই বল যা ঘুরছে, তাতে দ্বিতীয় দিনে অশ্বিন, অক্ষর, কুলদীপকে সামলানো সহজ হবে না রুটদের পক্ষে। ভারতের ভরসা উইকেটে আছেন ঋষভ পন্থ। তাঁর ওপরই দায়িত্ব থাকবে ভারতকে চারশোর গণ্ডি টপকে দেওয়ার। শুধু এই টেস্ট জেতার জন্য নয়, টিম ইন্ডিয়া মরিয়া ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে জায়গা করে নিতে। তাই যে কোনও মূল্যে জয় প্রয়োজন।