খেলা Akash Deep: ভারতীয় ক্রিকেট ‘আকাশ’-এ জ্বলল নতুন ‘দীপ’, বাংলার পেসারের সংগ্রাম জানলে স্যালুট করবেন আপনিও Gallery February 23, 2024 Bangla Digital Desk বিহারের সাসারামে ছেলেটার জন্ম। ছেলেকে কনস্টেবল বানাতে চেয়েছিলেন স্কুল শিক্ষক বাবা। ভাগ্যিস বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ না করে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ দেখে ক্রিকেটার হওয়ার শখ হয়েছিল ছেলেটার। না হলে ভারতের মানচিত্রে আকাশের উদয় হতো না। ভারতের হয়ে টেস্ট অভিষেকেই নজর কারা পারফরমেন্স। আকাশ টেনিস বলে দারুন গতিতে বল করতে পারত। তবে গ্রামে সেরকম ক্রিকেটের পরিকাঠামো ছিল না। তাই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে নিয়ে পারি দিয়েছিলেন দিল্লি। সেখানে খুব একটা সুবিধা না করতে পেরে কলকাতায় চলে আসা। সিএবি দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাব ইউনাইটেডের হয়ে খেলা শুরু। সৌরভের ভিডিওকন একাডেমিতে সেই সময় অনুশীলন করতেন। যদিও ক্রিকেট শেখার জন্য নয় মূলত তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল দ্বিতীয় ডিভিশনে ম্যাচ খেলানোর জন্য। তৎকালীন সেই একাডেমির এক কোচ সেকেন্ড ডিভিশনের ইউনাইটেড ক্লাবের দল গড়তেন ভিডিওকনের ছেলেদের নিয়ে। সেখান থেকেই আকাশের খবর জানতে পারেন অনূর্ধ্ব ২৩ বাংলার প্রথম কোচ হওয়া সৌরাশিস লাহিড়ী। তার মধ্যেই ছয় মাসের ব্যবধানে বাবা এবং দাদার মৃত্যু। ঘাড়ের উপর ফ্যামিলির দায়িত্ব নিয়ে বিহার থেকে বাংলার অলিতে গলিতে টেনিস ক্রিকেট খেলা আর সেখান থেকে অনেক পথ পেরিয়ে ভারতীয় দল। ক্রিকেটের অ-আ-ক-খ কিছু না জানলেও দারুন গতিতে বল করতো আকাশ। তৎকালীন অনূর্ধ্ব ২৩ নির্বাচকরা আকাশকে বাংলা দলে নিতে চাননি। তবে কোচ সৌরাশিস লাহিড়ীর জেদের কাছে শেষ পর্যন্ত নিতে বাধ্য হন। অনূর্ধ্ব ১৬-১৯ কোন বিভাগে না খেললেও অনূর্ধ্ব ২৩ সি কে নাইডু টুর্নামেন্টে প্রথম বছরই নজর করেন। সেখান থেকে বাংলা সিনিয়র দলে। প্রথমে মুস্তাক আলী টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে নিয়ম রক্ষার দুটি ম্যাচে খেলেন। তারপরেই গুজরাটের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফি অভিষেকেই ছয় উইকেট। আর পিছনে ফিরে দেখতে হয়নি। তৎকালীন বাংলার কোচ অরুন লাল তারকা অশোক দিন্দার জায়গায় খেলার সুযোগ করে দেন। তারপর থেকেই যখনই খেলেছেন তখনই পারফর্ম করেছেন আকাশ। ভারতীয় এ দলের হয়ে ইংল্যান্ড লায়ন্সের এর বিরুদ্ধে দু ম্যাচে ১১ উইকেট। তারপরই ভারতীয় দলে ডাক। বুমরা বিশ্রাম নেওয়ায় তার জায়গাতেই রাঁচিতে অভিষেক। মাঠে মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে নেমে পড়লেন প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে। প্রথম কয়েক ওভার ভালো বোলিং করলেও উইকেট আসে নি। কথায় আছে ধৈর্যের ফল খুব মিষ্টি হয়,প্রথম ৩ ওভার উইকেট না পেলেও চতুর্থ ওভারে বোল্ড করেন ক্রলীকে, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে নো বল হয় সেটি। ভেঙে না পরে, পরিশ্রম চালিয়ে যান, কয়েক ওভারের মধ্যেই ইংল্যান্ডের টপ ৩ কে পাঠিয়ে দেন প্যাভিলিয়নে, জ্যাক ক্রলি, বেন ডাকেট ও অলি পোপ। ম্যাচ শুরুর প্রথম ঘণ্টাতেই এত কিছু। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তাও আবার টেস্ট ম্যাচ। কিন্তু কোনওরকম নার্ভাসনেস ছিল বা আকাশ দীপের। প্রথম ওভার থেকেই গতি ও সুংইয়ের মিশ্রণে ইংরেজ ব্যাটরদের বিব্রত করতে থাকেন আকাশ। বাংলার পেসারের গতি ও সুইং সকলকে মুগ্ধ করে। রাঁচিতে প্রথম দিনের শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ৩০২ রানে ৭ উইকেট। তারমধ্যে ৩ উইকেট নিয়েছেন আকাশ দীপ। দ্বিতীয় দিনের সকালে আবার আগুন ঝরাতে তৈরি আকাশ দীপ। অভিষেক টেস্টের আকাশের কাছ থেকে ফাইফার দেখার অপেক্ষায় বাংলা তথা গোটা দেশ।