ক্যাপ্টেন ব্রিজেশের কফিন

captain Brijesh Thapa last rite: ‘আমার সন্তান দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে’, ক্যাপ্টেন ব্রিজেশের শেষ বিদায়ে গর্বিত পিতা

দার্জিলিং: জম্মু-কাশ্মীরের ডোডায় সেনা-জঙ্গি লড়াইয়ে শহিদ হয়েছেন দার্জিলিংয়ের লেবংয়ের বাসিন্দা ক্যাপ্টেন ব্রিজেশ থাপা। চোখের জলে তাঁর শেষ বিদায় হল শুক্রবার। দার্জিলিংয়ের লেবংয়ের গিং গ্রামে শোকের ছায়া। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শহিদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। গান স্যালুট দেওয়া হয় ২৭ বছরের মৃত আর্মি অফিসারকে। গোটা পাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দারা জড়ো হয়েছিলেন এ দিন। সকলেরই চোখে জল। ছিলেন দার্জিলিংয়ের মহকুমা শাসক রিচার্ড লেপচা, জিটিএর চেয়ারম্যান অঞ্জুল চৌহান, বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ড এবং অন্যান্য সেনা অফিসারেরা। ব্রিজেশের বাবা ভুবনেশ থাপা নিজেও প্রাক্তন সেনা অফিসার। তিনি বলেন, “আমি গর্বিত, আমার সন্তান দেশের জন্যে প্রাণ বলিদান দিয়েছে।”

সীমান্ত রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন ব্রিজেশ। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের ডোডা থেকে চার ঘণ্টা দূরত্বে থাকা এক পাহাড়ি জঙ্গলে একটি অভিযানের সময় হঠাৎ করেই জঙ্গিরা হামলা চালায়। জঙ্গিদের হামলার পালটা জবাব দেয় সেনা জওয়ানরাও। দু’পক্ষের লড়াইয়ে ব্রিজেশ-সহ আরও চার সেনা জওয়ানের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পরিবারের কাছে খবর পৌঁছাতে শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তাঁরা। ব্রিজেশের কফিনবন্দি দেহ পৌঁছায় বাগডোগরায়। তার পর লেবংয়ের বাড়ি রওনা হয় তাঁর মরদেহ।

ব্রিজেশের কথা বলতে গিয়ে ক্যামেরার সামনেই কেঁদে ভাসান কাকা যোগেশ থাপা। তাঁর কথায়, “ডোডায় নিহত হয়েছে আমার ভাইপো। আমরা তার মরদেহ আসার অপেক্ষা করছি। তার পর আমরা দার্জিলিং যাব। ব্রিজেশের বাবা-মা দার্জিলিংয়ে থাকেন। ওর বাবা সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল। সেনা এলাকাতেই ব্রিজেশের জন্ম আর বেড়ে ওঠা। সবে ৫ বছর আগে চাকরিতে যোগ দিয়েছিল…। তার মধ্যেই সব শেষ। আমরা আশা করছি আগামিকালের মধ্যে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে… এটা বলা সহজ যে তিনি দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, কিন্তু পরিবার হিসেবে আমরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি তা কখনও পূরণ হতে পারে না। আমরা জানি না সরকার কবে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। প্রতিদিন প্রাণ যাচ্ছে আমাদের সেনাদের…”

আরও পড়ুন-ছাত্র আন্দোলনের আঁচে দুই বাংলার মাঝে ৩ ঘণ্টা আটকে মৈত্রী এক্সপ্রেস!

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে ব্রিজেশ ডিফেন্স সার্ভিসের শর্ট সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় পাশ করেন ও ২০১৯ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তার পর ১০ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের মোতায়েন ছিলেন। এরপর এক্সট্রা রেজিমেন্টাল ডিউটির জন্য ভারতীয় সেনার বিশেষ বিভাগ ১৪৫ আর্মি এয়ার ডিফেন্সের অধীন জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা সেনা ছাউনিতে বদলি হন। সেখানে ব্রিজেশ থাপা এ-কোম্পানির কমান্ডার ছিলেন। নিজের ট্রুপ নিয়ে ডোডা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা দূরত্বে একটি অভিযানে যাওয়ার সময় আচমকা তাঁদের উপর হামলা হয়। আর সেই হামলাতেই প্রাণ হারান ব্রিজেশ।