জাভেদ আখতার সব সময়ই তাঁর শানিত মন্তব্যের জন্য বিতর্কের কেন্দ্রে থাকেন। প্রকাশ্যে নিজের মতামত ব্যক্ত করতে পিছপা হন না।‘অ্যানিমাল’ ছবিটির তীব্র সমালোচনা করার পর, আরও একবার তিনি নতুন তারকাদের অবস্থা অত্যন্ত করুণ বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন।সম্প্রতি সিডি দেশমুখ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার-এর ‘হিন্দি ও উর্দু: সিয়ামিজ টুইনস’ শীর্ষক অধিবেশনে যোগ দিয়ে নতুন প্রজন্ম নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি।জাভেদ বলেন, ‘আজ চলচ্চিত্র জগতে আমরা বেশিরভাগ নতুন অভিনেতাদের জন্য রোমান হরফে সংলাপ লিখি। কারণ, তাঁরা অন্য কিছু পড়তে পারেন না। অবস্থা খুবই করুণ।’জাভেদ আখতার আরও বলেন, ‘কোনও ভাষার সঙ্গে কোনও ধর্মের সম্পর্ক নেই। ২০০ বছর হয়ে গেছে, হিন্দি আর উর্দু পৃথক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। কিন্তু তারা এক সময় এক ছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা বলেছিলেন, ‘আমরা মরব কিন্তু উর্দু পড়ব না, আমরা পৃথক রাষ্ট্র (বাংলাদেশ) চাই।’জাভেদ আখতার প্রশ্ন তোলেন, ‘পশ্চিম এশিয়ার আরবরা কি উর্দুতে কথা বলেন? উর্দু শুধুমাত্র ভারতীয় উপমহাদেশের ভাষা। এর সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। আপনি তামিলনাড়ুতে যান এবং লোকদের বলুন যে হিন্দি কেবল একটি ধর্মের ভাষা। তারপর দেখি, কী হয়?’এজন্য হিন্দুস্তানি শব্দের অভিধানের প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হিন্দি ব্যবহার না করে আপনি উর্দুতে কথা বলতে পারবেন না।’ তিনি দাবি করেন, একজন চিত্রনাট্যকার হিসাবে তিনি জানেন কখন হিন্দি বা উর্দু শব্দ ব্যবহার করতে হবে।তিনি আরও বলেন, ‘আমি উর্দু এবং হিন্দি লোকদের জন্য লিখছি না, আমি ভারতীয়দের জন্য লিখছি। যেদিন ভারতীয়দের আগ্রহ গড়ে উঠবে, ভাষা খুব সহজেই বোঝা যাবে।’পেঁয়াজের সঙ্গে তুলনা করে জাভেদ আখতার বলেন, চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে বিশুদ্ধ উর্দু বা খাঁটি হিন্দির কোনও ধারণা নেই।তিনি বললেন, ‘আপনি একটি পেঁয়াজ নিন এবং আসল পেঁয়াজটিকে খুঁজে বের করতে ক্রমশ তার খোলা ছাড়িয়ে ছাড়িয়ে যান। কোথায় পেঁয়াজ! পেঁয়াজ লুকিয়ে থাকে খোলায়। একই ভাবে বিভিন্ন উৎস থেকে আসা শব্দগুলি ভাষায় যুক্ত হতে থাকে এবং ভাষা আরও সমৃদ্ধ হয়।’