উত্তরবঙ্গ: উত্তরবঙ্গের রাঙাপানিতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে শুরু হল তদন্ত৷ সূত্রের খবর, আজ নজরে লেভেল ক্রসিং ও রেলের গতি। শুরু হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। দুই গেটম্যানকেও আজ তলব করা হয়েছে।
চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির নেতৃত্বে তদন্ত শুরু এনজেপি এডিআরএম দফতরের। প্রথম অবস্থায় ডাকা হয় কাঞ্চনজঙ্ঘার লোকো পাযলট, রাঙাপানি স্টেশন ম্যানেজার ও সহকারী স্টেশন ম্যানেজার, ৩ জন গেটম্যানকে। তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় এখনও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতে পারা যায়নি দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়ির সহকারী চালককে। CCRS নিজে কথা বলতে চান তাঁর সাথে। দুই চিকিৎসকের সাথে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা।
এরমধ্যে জানা গিয়েছে, রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশনমাস্টার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালককে পেপারলাইন ক্লিয়ারেন্স টিকিট দিয়েছিলেন ৮:২০ মিনিটে। তারপরে সেই ট্রেন রাঙাপানি স্টেশন থেকে ছেড়ে এগোয় ৮:২৭ মিনিটে।
রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশন মাস্টার পণ্যবাহী ট্রেনকে পেপার লাইন ক্লিয়ারেন্স দেন ৮:৩৫ মিনিটে। পণ্যবাহী ট্রেনের চালক সেই কাগজ নিয়ে ট্রেন রওনা করেন ৮:৪২ মিনিটে। রাঙাপানি স্টেশন থেকে চটেরহাট স্টেশন অবধি ন’টি সিগন্যাল পোস্টের জন্য ট্রেনকে এই কাগজ নিয়ে চলার অনুমতি দেন রাঙাপানির স্টেশন মাস্টার।
আরও পড়ুন: ফের নিশানা রাজ্য নেতৃত্বকে, মমতার সঙ্গে সাক্ষাতেও রাজি সৌমিত্র! বিজেপির অস্বস্তি বাড়ছে
এই দুর্ঘটনার তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল অটোমেটিক সিগন্যাল ৬৫৪, ৬৫২, ৬৫০ নম্বর পোস্ট। এর মধ্যে রাঙাপানি স্টেশন ছাড়ার পরেই ৬৫৪ নম্বর সিগন্যাল পোস্ট। এর পরেই আছে লেভেল ক্রসিং।
সেই লেভেল ক্রসিংয়ের পরেই রয়েছে ৬৫২ নম্বর সিগন্যাল পোস্ট। তারপর রয়েছে ৬৫০ নম্বর সিগন্যাল পোস্ট। এর পরে ফের আর একটা লেভেল ক্রসিং। সেটা পেরোলেই ৬৪৮ নম্বর সিগন্যাল পোস্ট।
সোমবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ৬৫২ নম্বর ও ৬৫০ নম্বর সিগন্যাল পোস্টের মাঝে। সিসিআরএস তার পরিদর্শনে দেখতে চলেছেন তদন্তে দুই ট্রেনের গতি। আর লেভেল ক্রসিংয়ের ভূমিকা। যে কারণে আজ দুই লেভেল ক্রসিংয়ের গেটম্যানদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আরও পড়ুন: দাউ দাউ আগুনে জ্বলে উঠল জলদাপাড়ার গর্ব, পুড়ে ছাই হলং বন বাংলো! দেখুন ভিডিও
প্রাথমিক ভাবে তদন্তে উঠে এসেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের গতি নিয়ন্ত্রিত ছিল। অর্থাৎ ১৫ কিমি প্রতি ঘন্টায়। এর সাথেই লেভেল ক্রসিং দেখে ট্রেন দাঁড় করিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল চটেরহাটের দিকে। প্রথম লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে দ্বিতীয় লেভেল ক্রসিংয়ের আগে ট্রেন এগোলেও গতি ভীষণ কম করে রাখা হয়েছিল।
এই কারণে ৮:২৭ মিনিটে ছাড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দূর্ঘটনাস্থলে ছিল ৮:৫৫ মিনিটে।
অন্যদিকে মালগাড়ির চালক তার পেপার লাইন ক্লিয়ারেন্স দেখে নিয়ে ট্রেন চালিয়েছে। কপিবুক গতিতে ট্রেন ছুটেছে। সেক্ষেত্রে লেভেল ক্রসিং যা ৬৫৪ আর ৬৫২ নম্বরের মাঝে আছে, সেখানের পরিস্থিতি কি ছিল তা দেখে নিতে চাইছেন সিসিআরএস। আর কাঞ্চনজঙ্ঘার সামনে যে লেভেল ক্রসিং আছে অর্থাৎ ৬৫০ থেকে ৬৪৮ এর মাঝে যে লেভেল ক্রসিং আছে সেখানে ওই সময়ে কি চলছিল তাও দেখতে চায় সিসিআরএস।
আপাতত গতি আর লেভেল ক্রসিং-এর উপরেই দাঁড়িয়ে এই দুর্ঘটনার তদন্তে।