কলকাতা: আগামী ১ জুন ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম তথা শেষ দফার ভোটগ্রহণ৷ কলকাতা উত্তর দক্ষিণ, ডায়মন্ড হারবার থেকে শুরু করে উত্তর ২৪ পরগনার দমদম৷ সব কেন্দ্রেরই ভাগ্যপরীক্ষা হতে চলেছে ওইদিন৷ শেষ দফার এই নির্বাচন তাই সব রাজনৈতিক দলের কাছেই মারাত্মক গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্তু, এই দফার নির্বাচনের ঠিক আগেই বিস্ফোরক এক অভিযোগ করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এক বার নয়, পর পর তিন বার৷ একই কথা৷ তিনটি প্রচারসভায়৷ ‘দমদমে আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে’৷
‘দমদমে আন্ডারস্ট্যান্ডিং’? কিন্তু, কার সঙ্গে কার? বলতে গিয়েই সিপিএম ও বিজেপি-কে এক বন্ধনীতে ফেলে দিলেন মমতা৷ বারুইপুর, মেটিয়াবুরুজ এবং কালীঘাট৷ বুধবারের তিন জায়গার প্রচার মঞ্চ থেকেই মমতা দাবি করলেন, দমদম লোকসভা কেন্দ্রের জন্য গোপনে আঁতাঁত করেছে সিপিএম ও বিজেপি৷ কী বললেন মমতা?
কালীঘাটের সভায় মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি-র অত্যাচার, এত আন্ডারস্ট্যান্ডিং আমি ভেবে পাই না। দমদমে আন্ডারস্ট্যান্ডিং শুনলাম। আমি কী করে ওদের সাথে জোট করব বলুন! আমি এই জন্য ওদের সাথে জোট করিনি। দমদম লোকসভায় শুনলাম বিজেপিকে সিটটা দিয়ে দেবে। আর বিধানসভা ভোটে বরানগর সিটটা সিপিআইএমকে ওরা দিয়ে দেবে।’’
তার আগে মেটিয়াবুরুজের সভাতেও মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এমপি ভোট সিপিএম বিজেপিকে দেবে দমদমে, আর বিধানসভার ভোট বিজেপি সিপিএমকে দেবে। সবাই শুনে রাখুন, অভিষেক শুনে রাখ।’’ একই কথা বলেন বারুইপুরের সভাতেও৷
দমদম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলপ্রার্থী ওই কেন্দ্রেরই তিনবারের জেতা সাংসদ সৌগত রায়৷ ভোট অঙ্কের হিসাব দেখলে এই কেন্দ্রে সৌগত রায়ই এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির শীলভদ্র দত্ত এবং সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীর কাছ থেকে৷
দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সবক’টি বিধানসভাই তৃণমূলের দখলে৷ দখলে সবক’টি পুরসভাও৷ ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে ৪৩.০২ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যকে হারিয়েছিলেন তিনি৷ অন্যদিকে, লোকসভায় কার্যত কোণঠাসা বাম ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে পেয়েছিল মাত্র ১৪.০৮ শতাংশ আর জোটসঙ্গী কংগ্রেস ২.৪৪ শতাংশ৷ এখন কঠিন যেখানে অবস্থা, যাদবপুরের চেনা কেন্দ্র ছেড়ে সুজন চক্রবর্তীকে এই দমদমেই পাঠিয়েছে তাঁর দল৷
অন্যদিকে, বরানগর বিধানসভা উপ নির্বাচনে তৃণমূলপ্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী এখানে রাজনীতির ময়দানে লড়াকু নেতা হিসাবে পরিচিত বিজেপির সজল ঘোষ৷ বামেদের প্রার্থী প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য৷
মমতার অভিযোগ, এই লোকসভা এবং বিধানসভা নিয়েই ‘দেওয়া নেওয়া’ হয়েছে বিজেপি এবং সিপিএমের মধ্যে৷ তাহলে এই অঙ্কে কোথায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলের প্রবীণ পক্ষের সৌগত? উত্তরটা অবশ্য পরিষ্কার হয়ে যাবে আগামী ৪ জুন৷