গন্দেরবাল সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শ্রমিকের দেহ পৌঁছল গ্রামে

Ganderbal Terror Attack: গন্দেরবাল সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শ্রমিকের দেহ পৌঁছল গ্রামে, সঙ্গী বললেন ‘পালিয়ে গেলে হয়তো বেঁচে যেত…’

Report: MOHAMMAD SARFRAZ

মাধেপুরা: রুজি-রুটির সন্ধানে তাঁরা নিজের রাজ্য ছেড়ে যান বহু দূরে। সেখানে গিয়েও যে জীবনের সমস্যার সমাধান হয়, এমনটা নয়। বরং, পরিযায়ী বা ভিন্ন রাজ্যে বাসা বাঁধা শ্রমিকদের জীবন অনেকাংশে দুর্বিষহই হয়ে ওঠে। প্রাণেরও নিশ্চয়তা থাকে না সব সময়ে। জম্মু ও কাশ্মীরের গন্দেরবাল সন্ত্রাসী হামলা সে কথা নতুন করে প্রমাণ করে দিয়েছে।

সন্ত্রাসীদের হামলা জম্মু ও কাশ্মীরের জীবনধারার মানচিত্রে এক নিয়মিত উপদ্রব। তার বলি হন সাধারণ মানুষ। এবার গন্দেরবালে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের মধ্যে একজন বিহারের বাসিন্দা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিহত শ্রমিক মহম্মদ কলিমের নিথর দেহ পৌঁছয় বিহারের মাধেপুরার চৌড়া গ্রামে। মহম্মদ কলিমের মৃত্যুর খবরেই গ্রামে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। মরদেহ পৌঁছনোর পর চোখের জল আর ধরে রাখতে পারেননি গ্রামবাসী।

আরও পড়ুন– ‘গুলি আমি চালাইনি’, কৃষ্ণসার হত্যা নিয়ে সলমনের মন্তব্যে নতুন করে তোলপাড় নেটদুনিয়া !

স্বাভাবিক ভাবেই মহম্মদ কলিমের মৃত্যুতে সর্বাধিক বিপর্যস্ত তাঁর পরিবার। লোকাল 18-এর ক্যামেরার সামনে দুই শিশুপৌত্রকে দেখিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন তিনি- ‘‘ওদের তো কোনও দোষ নেই, এবার ওদের দেখাশোনা কে করবে?’’

প্রশ্নের উত্তর সব সময় মেলে না। পুত্রশোকাতুর পিতার এই প্রশ্নের উত্তরও কারও কাছে নেই। তবে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হল, সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী সহশ্রমিকেরা। মহম্মদ পারভেজ জানিয়েছেন, ‘‘আমরা মেসে খাবার খেতে যাচ্ছিলাম, এমন সময় দুজন সন্ত্রাসী এসে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে। প্রথমে হানিফকে গুলি করে। এর পর ঠিক কী ঘটতে থাকল তার কিছুই বুঝে ওঠা গেল না।’’

আরও পড়ুন– এক মাসেই এল সাফল্য ! ১৫৪ মিলিয়ন সম্ভাব্য স্প্যাম কল সনাক্ত করল AI Powered Spam Detection System, স্বস্তিতে এয়ারটেল গ্রাহকরা

এর পরেই তিনি নিহত সহকর্মীর প্রসঙ্গে এসেছেন, বলেছেন পালিয়ে গেলে তিনি হয়তো বেঁচে যেতেন। “মহম্মদ কলিম আমার ঠিক পিছনে ছিল, আমি তাকে দৌড়তে বললাম। কিন্তু কলিম একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকল কী হচ্ছে দেখার জন্য। সেই সময়েই সন্ত্রাসীরা কলিমকে গুলি করে। এই সময় প্রায় ৫০টি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে, যদিও আদতে কী হচ্ছে তা তখনও কিছুই বোঝা যায়নি। ঘটনার প্রায় এক ঘণ্টা পর পুলিশ আসে”।

অন্য দিকে, মহম্মদ কলিমের ছোট ভাই মহম্মদ কেয়াম জানান, তাঁর ভাই শ্রমিক হিসেবে জম্মু ও কাশ্মীরের গন্দেরবালে কাজ করতে গিয়েছিলেন, তাঁকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। “তবে আমরা এখনও পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে কোনও রকমের সহায়তা পাইনি। জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের তরফ থেকে আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি এবং বিহার সরকারের কাছ থেকেও এখনও পর্যন্ত কোনও সহায়তা পাওয়া যায়নি”, অসহায়তার কথা ফুটে উঠেছে তাঁর বয়ানে।