ফিরল চক দে-র স্মৃতি, অজয়-গজরাজের যুগলবন্দিতে ময়দান যেন কিংবদন্তির ঘামরক্তে ভেজা

Maidaan Review: ফিরল ‘চক দে’-র স্মৃতি, অজয়-গজরাজের যুগলবন্দিতে ‘ময়দান’ যেন কিংবদন্তির ঘামরক্তে ভেজা

মুম্বই: শাহরুখ খানের ‘চক দে! ইন্ডিয়া’ ছবির কথা নিশ্চয়ই মনে আছে! সেবার প্রেক্ষাগৃহগুলি মুখর হয়েছিল ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া রবে। আর প্রায় ১৭ বছর পরেও বলিউডের স্পোর্টস ফিল্মের ধারার বেঞ্চমার্ক হয়ে রয়েছে। এবার প্রেক্ষাগৃহে সেই উন্মাদনাই চোখে পড়ছে। সৌজন্যে ‘ময়দান’! অজয় দেবগনের এই ছবিতে আবার এসআরকে-র ছবির তুলনায় আলাদাই গতিপথ দেখা গিয়েছে। তবে দু’টি ছবির মধ্যে একটা সাধারণ জিনিস রয়েছে। আর সেটা হল, দু’টি ছবিই দুর্দান্ত সিনেম্যাটিক অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।

অমিত শর্মা পরিচালিত ‘ময়দান’ ছবির মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন অজয় দেবগন। ফুটবল কোচ সৈয়দ আব্দুল রহিমের জীবনের গল্পের উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে ছবিটি। ওই ফুটবল কোচের নেতৃত্বেই ১৯৬২ সালের এশিয়ান গেমসে জয়লাভ করে ভারত। অজয়ের পাশাপাশি ছবিতে রয়েছেন গজরাজ রাও এবং প্রিয়া মণি। গজরাজকে একজন সাংবাদিকের ভূমিকায় আর প্রিয়াকে অজয়ের স্ত্রীর ভূমিকায় দেখা যাবে। এছাড়া কিছু নতুন মুখও দেখা যাবে এই ছবিতে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন চৈতন্য শর্মা ওরফে স্লোচিতা এবং ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’-এর মধুর মিত্তল।

আরও পড়ুন: বাজারে কমে আসছে সবজির পরিমাণ! এদিকে দাম বাড়ছে হুহু করে! ভয়ঙ্কর দিনের আশঙ্কা, কারণ শুনে আঁতকে উঠবেন!

এই ছবিতে ফুটে উঠেছে কোচ সৈয়দ আব্দুল রহিমের লড়াইয়ের কাহিনি। যিনি আবার এসএ রহিম নামে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর লড়াইয়ের লক্ষ্য ছিল, একটা বজ্র-কঠিন দল তৈরি করা। এখানেই শেষ নয়, দুর্নীতিগ্রস্ত ফুটবল ফেডারেশন, এক প্রতিশোধপরায়ণ সাংবাদিক এমনকী প্রতিবাদকারীদের সঙ্গেও ছিল তাঁর লড়াই। সর্বোপরি ফুটবলের হাত ধরে ভারত যাতে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নিতে পারে, সেটাই ছিল তাঁর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এই ছবিটিতে ওই কোচের জীবনের একাধিক বিষয় ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক। যথা – তাঁর ব্যক্তিগত লড়াই, টিমের সমস্যা, রাজনৈতিক আবহাওয়া।

এই ছবিতে অজয় দেবগনের অভিনয় নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে ‘চক দে! ইন্ডিয়া’-র শাহরুখ খানের থেকে ‘ময়দান’-এর অজয় কিন্তু আলাদা। কারণ শাহরুখ এমন একজন কোচ ছিলেন, যিনি নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতেন। এখানেই ভিন্ন অজয় অভিনীত রহিম চরিত্রটি। কারণ রহিম চোখের ভাষা দিয়েই বেশিরভাগ বিষয়টা ব্যক্ত করেছেন।

অজয়ের পাশাপাশি গজরাজ রাও-ও নিজের জায়গায় দুর্দান্ত। যে সাংবাদিকের চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন, সেই চরিত্রটিকে দেখলে রীতিমতো রাগে গা রি-রি করে উঠবে। বহুদিন বাদে এহেন চরিত্রে গজরাজের দুর্ধর্ষ অভিনয় নজর কাড়বে। আর দক্ষিণী অভিনেত্রী প্রিয়া মণির কথা কী-ই বা বলার! পর্দায় তো তিনি যেন জাদু ছড়িয়ে দিয়েছেন! বিপরীতে যে তারকাই থাকুন না কেন, তাঁর সঙ্গে প্রিয়ার রসায়ন জাস্ট জমে ক্ষীর হয়ে যায়। আর ‘ময়দান’-এও তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে।

এবার আসা যাক অন্যান্য প্রসঙ্গে। সিজিআই এবং ভিএফএক্স-এর সহযোগিতায় সিনেম্যাটোগ্রাফার তুষার কান্তি রায় এবং ফিয়োডর লিয়াস খেলাধূলার বিষয়টাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছিলেন। যদিও এমন কিছু কিছু শট রয়েছে বিশেষ করে ছবির দ্বিতীয়ার্ধ্বে, যা ‘চক দে! ইন্ডিয়া’-র কথা স্মরণ করিয়ে দেবে। আর এআর রহমানের কথা আলাদা করে তো বলার অপেক্ষা লাগে না। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও অসাধারণ।

সব মিলিয়ে এটাই বলা যেতে পারে যে, ‘ময়দান’ ছবিটি অবশ্যই দেখা উচিত। যা ‘চক দে! ইন্ডিয়া’-র কথা মনে করাবেই। সর্বোপরি একটা ভাল লাগা নিয়েই প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরোতে পারবেন দর্শকরা।