কলকাতা: এবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে DVC-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর। দক্ষিণবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে DVC-কে দায়ী করে মোদিকে চিঠি লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবারই জলবন্দি উদয়নারায়ণপুরে দাঁড়িয়ে ডিভিসির সঙ্গে সবরকম সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মমতা। ডিভিসির বিরুদ্ধে অপরিকল্পিত ও নজিরবিহীন জল ছাড়ার অভিযোগ জানিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এবার মোদিকে চিঠি মমতার। চিঠিতে ম্যান মেড বন্যার অভিযোগও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে এই চিঠির কথা জানিয়ে লেখেন, “আমি আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে জানিয়েছি যে, ডিভিসি ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার ফলে এক বিরাট বিপর্যয় ঘটেছে — যা অতীতে কখনও দেখা যায়নি। ২০০৯ সালের পর থেকে নিম্ন দামোদরে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এই দুর্যোগ এবং বাংলার প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করছে ভয়াবহ ভাবে যা আদতে একটি ম্যান ম্যাড বন্যা।”
আরও এক ধাপ এগিয়ে চিঠিতে মমতা লেখেন, “বারবার সতর্ক করার পরেও কেন্দ্র ডিভিসি’র প্রযুক্তিগত, যান্ত্রিক এবং ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতাগুলিকে উপেক্ষা করে চলেছে। এই চরম অবহেলা যদি অব্যাহত থাকে, তবে বাংলা বাধ্য হবে ডিভিসি’র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে।”
আরও পড়ুন: রাজ্য জুড়ে চিন্তা বাড়াচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি, মোকাবিলায় মাঠে নামলেন মন্ত্রীরা! ভাগ করে দেওয়া হল দায়িত্ব
মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ডিভিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমি নিজে ফোনে কথা বলেছিলাম। তার পরেও ১৭ তারিখ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ ক্রমাগত বেড়েছে। রাজ্যের হিসাব অনুযায়ী, ১৬ তারিখ রাতে ৯০ হাজার কিউসেক থেকে পরবর্তী ৯ ঘণ্টার মধ্যে আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে। তিন দিনে জল ছাড়া হয়েছে মোট ৮.৩১ লক্ষ কিউসেক। এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। জল ছাড়া নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ডিভিসি আলোচনা করেনি। দুই জলাধার জলপূর্ণ হয়ে যাওয়ার অনেক আগেই জল ছাড়া শুরু হয়েছে।
“গত ১০ বছর ধরে ডিভিসিকে বলে আসছি, জলাধারের সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু ডিভিসি বা কেন্দ্রীয় সরকার সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেনি। নীতি আয়োগের বৈঠকেও আমি এ বিষয়ে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। আমাদের সাংসদ এবং মন্ত্রীরাও বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের সামনে বার বার তুলে ধরেছেন। তার পরেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এই দুই জলাধারের ধারণক্ষমতা ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে দিন দিন। বিষয়টিকে আর এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।”