ত্রিপুরার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় জোড় মানিক সাহার

Tripura: ত্রিপুরার স্বাস্থ্য পরিষেবার সার্বিক উন্নয়নে জোর, বার্তা মানিক সাহার

আগরতলা: স্বাস্থ্য পরিষেবার সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ জোড় দিয়েছে ত্রিপুরা সরকার। চিকিৎসার জন্য রোগীদের যাতে রাজ্যের বাইরে যেতে না হয় সেই জন্য় পড়শি রাজ্য়ের হাসপাতালগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়নে জোড় দেওযা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে আগরতলা সরকারি মেডিক্য়াল কলেজে একাধিক সুপার স্পেশালিটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে কলেজের ১৯তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন সমারোহে মানিক সাহা বলেন, ‘‘মানুষের জন্য কাজ করতে হবে চিকিৎসকদের।’’

আরও পড়ুন: পুজোর বাসনে কালচে ছোপ পড়ে যাচ্ছে? রইল মোক্ষম উপায়, নতুনের মতো ঝকঝকে হয়ে উঠবে

অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিভিন্ন পুরস্কার তুলে দেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের নবনির্মিত ওপেন জিম ও ব্যাডমিন্টন কোর্টের শুভ উদ্বোধন করেন তিনি। বন্যা দুর্গত মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমেরও প্রশংসা করেন।

আরও পড়ুন: বিদেশের মাটিতে সাইবার প্রতারণার শিকার, লাওসের মাটি থেকে থেকে উদ্ধার ৬৩৫ ভারতীয়

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে  তিনি ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের ভুয়ষী প্রশংসা করেছেন। তিনি ডাক্তারি পড়ুয়া এবং চিকিৎসকদের আর্থিক লাভের চেয়ে জনগণের সেবাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেন।

ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ৷ যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে কোনওরকম  সাংস্কৃতিক কর্মসূচি রাখা হয়নি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মানিক সাহা চিরঞ্জিত দের আত্মত্যাগের কথাও স্মরণ করেছেন৷ সাম্প্রতিক বন্যার সময় অন্যদের বাঁচাতে গিয়ে  তিনি প্রাণ হারান। ভূমিধ্বস এবং বাড়ি ধ্বসের কারণেই অধিক প্রাণহানি ঘটেছে।

মানিক সাহা জানিয়েছেন, তাঁরা সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মানিক সাহার কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন কেন্দ্র সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মোহন যাদবও সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরার বন্যা পরিস্থিতিতে ১০ কোটি টাকা এবং মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ২০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা করেছেন।

বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে চিকিৎসকগণ বর্তমানে ত্রাণ শিবিরে আশ্রিত বিপন্ন মানুষের চিকিৎসা পরিষেবায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মানিক সাহা এই জন্য  চিকিৎসকদের প্রশংসা করেছেন৷  এই সময়ে বন্যা কবলিত মানুষদের চর্মরোগ, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়নে আমরা সুপার স্পেশালিটি-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদান করছি। তবুও কিছু অংশ এখনও চিকিৎসার জন্য রাজ্যের বাইরে যাচ্ছেন। এতে প্রায়শই তাদের সম্পত্তি বিক্রি করতে হচ্ছে।’’

সেই জন্যই মেডিকেল পড়ুয়া ও চিকিৎসকদের সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হওয়ার উপদেশ দেন মানিক সাহা। যাতে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীরা এখানে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন।

সেই জন্য হাসপাতালগুলোর পরিকাঠামোগত ও গুণগত উন্নয়নের জন্য জোড় দেওয়া হচ্ছে।  অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে৷ উপস্থিত ছিলেন কলেজের অন্যান্য সিনিয়র অধ্যাপক-সহ চিকিৎসক ও মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা।

এই অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের কর্মচারী সংঘের পক্ষ থেকে বন্যা ত্রাণে ৩০ হাজার টাকা এবং কলেজের ফ্যাকাল্টিদের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকার চেক মুখ্যমন্ত্রী ত্রান তহবিলে দান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এই আর্থিক সহায়তা তুলে দেওয়া হয়।