মানিক সাহা

Manik Saha: ড্রাগস মুক্ত ত্রিপুরা গড়তে মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা

ত্রিপুরাঃ দেশের স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে রাজধানীর উমাকান্ত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মাঠে আয়োজিত হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।  তিনি বলেন, ‘রাজ্যের বর্তমান সরকার ত্রিপুরাকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছে। জাতি, জনজাতি ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে। এর পাশাপাশি ছাত্র ও যুব সমাজকে নেশার হাত থেকে রক্ষা করতে ত্রিপুরাকে ড্রাগস মুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সকল অংশের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।’

আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে স্বচ্ছ ভারত অভিযান কর্মসূচিতে শামিল মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা 

অনুষ্ঠানের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০২২ সালে ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচির আহ্বান রেখেছিলেন যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারা দেশের সবগুলি রাজ্যে হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। যথারীতি ত্রিপুরা রাজ্যও এই কর্মসূচি শুরু করা হয়। হর ঘর তিরঙ্গার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যারা বলিদান দিয়েছেন তাঁদের সম্মান ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা। কারণ আমরা অনেক সময় ভুলে যায় যে দেশ কিভাবে স্বাধীন হয়েছে। ১৫ আগস্ট এবার দেশের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস। এই উপলক্ষে ১৩, ১৪ ও ১৫ আগস্ট এই ৩ দিন হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এই ৩ দিনে বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। আজ সকালেও উমাকান্ত মাঠ থেকে জাতীয় পতাকা নিয়ে শহরে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা পর্যায়ে এধরণের কর্মসূচি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা ও সংগঠনগুলিও স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে নানা কার্যক্রম করছে। ‘

মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় মেলা, বাইক র‍্যালি, উদ্ভাবনী ভাবনা নিয়ে হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। যখনই এধরণের কার্যক্রম করি তখনই আমরা স্বাধীনতার তাৎপর্য বুঝতে পারি। ১৯৪৭ সালের পর থেকে আমরা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে আসছি। কিন্তু ২০২২ থেকেই এই স্বাধীনতা দিবসকে নতুন রূপে পালন করছি আমরা। হর ঘর তিরঙ্গা মানে প্রতিটি ঘরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। নিজের পয়সা দিয়ে জাতীয় পতাকা কিনে সেটা উত্তোলন করতে হবে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে শুরু করে স্কুল কলেজ সহ সব জায়গাতেই হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচি হয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে প্রায় ৯ লক্ষাধিক পরিবারের কথা মাথায় রেখে এবার জাতীয় পতাকা সংস্থান রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ত্রিপুরা রাজ্যে আমাদের মেধার কোন অভাব নেই। হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিতেও ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা নিয়ে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিচ্ছে। ত্রিপুরার বর্তমান সরকার এই রাজ্যকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরার জন্য আরো ভালো করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। জাতি, জনজাতি ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। জি – ২০ সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনের মধ্য দিয়ে ভারতের অবস্থান এখন অনেক উঁচু মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে। রাজ্যেও জি – ২০’র এক অংশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে বিদেশ থেকে অনেক প্রতিনিধি যোগদান করেছেন। তাদের অনেকে বলেছেন যে ত্রিপুরা এমন সুন্দর জায়গা যেটা তাঁরা ভাবতেও পারেন নি। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনেও ত্রিপুরা নিয়ে প্রশংসা করা হয়। শিক্ষা দফতর, স্বাস্থ্য দফতর, গ্রামোন্নয়ন দফতর, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দফতর-সহ সমস্ত দফতরের কাজকর্ম, স্কিম-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য আমাদের রাজ্য প্রশংসিত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রয়াস, সবকা বিশ্বাসের মন্ত্রকে পাথেয় করে রাজ্য সরকার নিজেদের অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে। শান্তি সম্প্রীতি না থাকলে কখনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী আমাদের হিরা প্লাস মডেল দিয়েছেন। এজন্য এখানে জাতীয় সড়ক উন্নত হচ্ছে। একটা জাতীয় সড়কের পরিবর্তে এখন ৬টি জাতীয় সড়ক হয়েছে। আরো চারটি জাতীয় সড়ক হতে চলেছে। পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়নে আরো ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এজন্য এখন বাইরের পর্যটকদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ত্রিপুরাকে একটি সম্ভাবনাময় রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর পাশাপাশি ত্রিপুরাকে ড্রাগস মুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। ’