ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। সম্প্রতি নেটওয়ার্ক 18-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ভারতে সন্ত্রাস চালালে ‘ঘরে ঢুকে মেরে আসব’। এই আবহে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ। তিনি বলেন, “প্রতিবেশীদের সঙ্গে যুদ্ধ করবেন না… বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিন… হৃদয়ের দরজা খুলুন”।শুক্রবার কর্তারপুর সাহিব গুরুদ্বারে প্রায় ৩ হাজার শিখ তীর্থযাত্রীদের সামনে ভাষণ দেন মরিয়ম। নিজের বক্তৃতায় দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্য বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ‘শত্রুতার পরিবর্তে বন্ধুত্বের চেষ্টা’ করার আহ্বান জানান।বক্তৃতায় মরিয়ম নিজের শিকড় ভারতের অমৃতসরের কথা তুলে ধরেন। সীমান্ত পঞ্জাবের জনগণকে দু’ভাগে ভাগ করে দিলেও ঐতিহ্য একই আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানে প্রথমবার এক শিখ ধর্মাবলম্বীকে মন্ত্রীপদ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনারও প্রশংসা করেন মরিয়ম। সীমান্তে দুই দেশের সহযোগিতার উপরেও জোর দেন তিনি।মরিয়ম জানান, তাঁর দাদু দেশভাগের সময় ভারতের জাট্টি উমরা থেকে লাহোরে চলে যান। দুই দেশের ইতিহাস ভাগ হয়ে যায়, কিন্তু ব্যক্তিগত যোগাযোগ একই থাকে। মরিয়মের কথায়, “ভারতের জাট্টি উমরা থেকে চলে এসেছিলেন। সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন সেখানকার মাটি। দাদুর কবরে সেই মাটি দিয়েছি আমি”।গত কয়েক বছর ধরে সীমান্তে সন্ত্রাস এবং অনুপ্রবেশ নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ভারত। এই আন্তর্জাতিক মঞ্চেও সরব বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা। সেই সময় মরিয়মের এই বক্তব্য ভারতের প্রতি পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসবাদকে একহাত নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন, ভারতের শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। তাঁর কথায়, “যদি ভারতে হামলা চালিয়ে কেউ পাকিস্তানে পালিয়ে যায়, আমরা সেখানে গিয়ে তাকে মেরে আসব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সত্যিটাই বলেছেন… ভারতের সামর্থ্য আছে। পাকিস্তানও সেটা এবার বুঝতে পারছে”।
