কলকাতা: বিশ্ব ছাড়ায়ে আকাশের কাছে পৌঁছে যাওয়া যেতেই পারে, কিন্তু ঘরে তো ফিরতে হবে। একজন পর্বতারোহীর কাছে এই বাক্য অবশ্যমান্য। কখনও এর অন্যথাও হয়, তবু পার্বত্য উপনিষদ যা বলে, মাথায় রাখতে হয়। সোনারপুর আরোহী তাই করেছে। যে পর্বতের লক্ষ্যে অভিযান তার শীর্ষবিন্দুতে পতাকা উড়িয়ে দিলাম, এক্সপিডিশন ম্যাপে নতুন একটা ফ্ল্যাগ পোস্ট হ’ল – এই ব্যাপারটাকেই সাফল্য বলে মানে সবাই। আমআদমি তাই বোঝেন। কিন্তু যাঁরা দুর্গমের দেশে যান বার বার, বার বার জীবন বাজি রাখার খেলায় জড়িয়ে যান, আর যাঁরা সেই খেলার Rules & Ethics মোটামুটি বোঝেন তাঁদের কাছে সাফল্যের মানে একটু ভিন্ন। কত উঁচুতে যাওয়া গেল নয়, কতটা বাধা পেরোনো গেল তাই দিয়ে সাফল্যের প্রকৃত বিচার হয়।
টিম আরোহী’র Second Summit March থেমে গিয়েছে শিখর বে-এর মূল শিখরের কয়েক’শ মিটার নীচে। ওরা ফিরে এসেছিল সামিট ক্যাম্পে, আজ ফিরেছে বেসক্যাম্পে। শিখর বে, যা গুপ্ত পর্বতের পাশে অবস্থিত৷ অনিবার্য কারণ বশত যা এই দফা সামিট করা গেল না৷
অসম্ভব ক্রিভাসের জট সামিট মার্চের রাস্তা আগলে ছিল, সেগুলি ছিল অনতিক্রম্য। তাই যাত্রা বাতিল করতে হল এবারের মতো। প্রথমবারের ফেস ক্লাইম্বিং-এ সব সরঞ্জাম খোয়া গেছিল আচমকা বরফপতনে। সময়ের গুণে জানে বেঁচে গেছিল দল।
তার পরেও দল গুপ্তপর্বত সামিট করেছে (বিশ্বে প্রথম দল) এবং একটু বিশ্রাম সেরে আবার একটা ফেসক্লাইম্বিং-এর ঝুঁকি নিয়েছে। দ্বিতীয় সামিট মার্চের জন্য টানা দুদিন ধরে দড়ি লাগানো হয়েছে, রসদ ঘাটতি সামাল দিতে বেসক্যাম্প থেকে মাল ফেরি করেছে সবাই মিলে। এত সবের পরেও যখন ওরা সাফল্যের দোরগোড়ায়, দুনিয়ার ক্রিভাস জোট বেঁধে রাস্তা আটকাল সামিটের কয়েক’শ মিটার আগে।
আগামিকাল ওরা নেমে আসবে দালং গ্রামে, সেখানে দল একটা মেডিক্যাল ক্যাম্প করবে। পরের দিন মানালির দিকে।