রাকেশ মাইতি, হাওড়া: বাঙালির এক সময়ের জনপ্রিয় মিষ্টি অস্তিত্ব সংকটে! যে মিষ্টি ছাড়া এক কালে অতিথি আপ্যায়ন থেকে যে কোনও উৎসব অনুষ্ঠান ভাবাই যেত না। অতীতের সেই জনপ্রিয় মিষ্টি অবহেলিত এখন। বর্তমানে উপাচার ছাড়া হয়তো চেখে দেখেন না মানুষ। বাঙালির কাছে সে সময়ে জনপ্রিয় মিষ্টি অবহেলিত। এই মিষ্টির জনপ্রিয়তা এতটাই বেশি ছিল যে। সমস্ত কিছুতে এর উপস্থিতি দেখা যেত। কালের নিয়মে সেই মিষ্টির জনপ্রিয়তা ক্রমশ ফিকে।
আচার-অনুষ্ঠান পুজো পার্বণে এর উপস্থিতি। আগের মতো এই মিষ্টির যত্ন বা কদর নেই মানুষের কাছে। বর্তমানে শুধুমাত্র উৎসব অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় দ্রব্য হিসেবে এর চাহিদা। সেই মতো কিছু মানুষ এই মিষ্টি তৈরি করেই দিন গুজরান করছেন গ্রামাঞ্চলে। এই মিষ্টির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, অতিরিক্ত কোনও ব্যবস্থা ছাড়াই দীর্ঘদিন সহজে রাখা যায়। দামের দিক দিয়েও সকলের নাগালের মধ্যে। ফ্রিজ বা অতিরিক্ত কোনও ব্যবস্থা ছাড়াই সহজে রাখা যায় বেশ কয়েকদিন।
আরও পড়ুন : ব্লাড সুগারে কি ঝিঙে খাওয়া যায়? গরমের এই সবজি খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে? জানুন
আগেকার দিনে এই মিষ্টি যে কোনও পাত্রে, বিশেষ করে মাটির পাত্রে সযত্নে রাখা হত। এর জনপ্রিয়তা ইতিমধ্যেই যে সম্পূর্ণ রূপে হারিয়ে গেছে, এমন নয়। শীতের মরশুম এলে কিছু মানুষ খোঁজ করেন নলেন গুড় বা খেজুরে গুড়ের মুড়কির। হ্যাঁ, এই মুড়কি’র একসময় বেশ কদর ছিল।
বিভিন্ন ধানের খইয়ের উপর চিনি বা গুড়ের গরম আস্তরণ দিয়ে তৈরি হয় মুড়কি। সে সময় মুড়কি তৈরির জন্য বেশ কিছু সুগন্ধি ধানের খই তৈরি করা হত। সে সময় রাস্তার মোড়ে মোড়ে এত মিষ্টির দোকান ছিল না। অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে ছেলে বুড়োর মিষ্টিমুখের শখ মেটাত এই মুড়কি। মাটির হাঁড়ি বা কাগজের ঠোঙাতেই এ মিষ্টি রাখা যাবে এক টানা বেশ কিছু দিন। তাই ধনী-দরিদ্র প্রায় সকল বাড়িতে এই মিষ্টি মজুত থাকত কম বেশি সারা বছর। চিনি, আখের গুড়, খেজুরের গুড়, নলেন গুড়ের তৈরি বিভিন্ন রকম মুড়কি এক সময় মানুষের দারুণ চাহিদা মিটিয়েছে। বর্তমানে আখের গুড়ের মিষ্টি ৬০-৭০ টাকা, চিনির মুড়কি ৭০-৮০ টাকা এবং খেজুরের গুড় এবং নলেন গুড়ের মিষ্টি ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি।