কলকাতা: ‘অশান্তিপূর্ণ আন্দোলন, দুষ্কৃতী আন্দোলন বলা যায়। পুলিশকে যে ভাবে মারলেন নিন্দনীয়’। শুধু তাই নয়, এডিজি সাউথ বেঙ্গলের কথায়, ‘‘আন্দোলনের যে চেহারা দেখলাম, পশ্চিমবঙ্গের কোনও ছাত্রছাত্রী এই ধরনের গুন্ডামি, অসভ্যতামি করতে পারে না আমরা এটা জানি।’’ অর্থাৎ, ছাত্রছাত্রী বা পড়ুয়া নন, পুলিশ দাবি করলেন মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের পিছনে দায়ী অন্যেরা এবং তাঁদের দুষ্কৃতীসুলভ মানসিকতা৷
মঙ্গলবারে নবান্ন অভিযানের পরে একযোগে সাংবাদিক বৈঠক করলেন এডিজি সাউথ বেঙ্গল, এডিজি আইন-শৃঙ্খলা এবং ডিসি সাউথ৷ জানা গেল, এদিনের অভিযানে রাজ্য পুলিশের অধীনে গ্রেফতার হয়েছে ৯৪ এর বেশি৷ গতকাল পর্যন্ত গ্রেফতারির সংখ্যা ছিল ২৫, কলকাতা পুলিশের অধীনে আজ গ্রেফতার ১২৬।
পাশাপাশি, রক্তাক্ত হয়েছে পুলিশও৷ ১১ জন পুলিশকর্মী এদিনের নবান্ন অভিযানে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে৷
আরও পড়ুন: ‘বনধ নিয়ে কেমন কাঁপুনি হচ্ছে…,’ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ‘বেআইনি’ বলে কটাক্ষ শুভেন্দুর
এডিজি আইনশৃঙ্খলা বলেন, ‘‘আমাদের আশঙ্কা ছিল এটা (নবান্ন অভিযান) শান্তিপূর্ণ হবে না। গতকাল আমাদের বেশি অ্যারেস্ট হয়েছে। ওদের টার্গেট ছিল কোনও বডি পড়ে যায়। আজকের আন্দোলন এর নেচার কী ছিল সেটা নিয়ে আমার আর বলার নেই।’’
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে এডিজি সাউথ বেঙ্গল বলেন, ‘‘প্রায় ২৫ জনকে গেফতার করেছি গতকাল থেকে অশান্তি বাঁধানোর অভিযোগে। গতকাল হাওড়া স্টেশন থেকে ৪ জন গ্রেফতার করেছি। আগ্নেয়াস্ত্র, নিয়ে অশান্তি করার চেষ্টা হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ে আমরা প্রমাণ দেব।’’
শুধু তাই নয়, অস্ত্র বোমা, গুলি নিয়ে আসার চক্রান্ত ছিল বলেও জানান তিনি৷ অন্যদিকে, ডিসি সেন্ট্রালের বক্তব্য, ‘‘আজ কলকাতা পুলিশের তরফে বারবার বলেছি পুলিশের উপর আক্রমণ করবেন না। ব্যারিকেড টপকে যা করল, পেট্রল বোমাও আমরা পেয়েছি।’’
এডিজি দক্ষিণবঙ্গ বলেন, ‘‘আমাদের আজ পর্যাপ্ত পুলিশ ব্যবস্থা ছিল। আন্দোলন কতটা শান্তিপূর্ণ ছিল আপনারা দেখেছেন। পুলিশ বারবার বলেছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করুন। সাঁতরাগাছি দিয়ে শুরু ব্যারিকেড ভাঙা। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা, বেপরোয়া, বেলাগাম তাণ্ডব আমরা দেখলাম পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের নামে।’’
নবান্ন অভিযানে পুলিশের ভূমিকার বিরোধিতা করে আগামিকাল বুধবার রাজ্যজুড়ে ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার৷ যদিও রাজ্যে তরফে এই বনধের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করা হয়েছে৷ পুলিশের তরফেও সাংবাদিক বৈঠকে বনধ নিয়ে মন্তব্য করা হয়৷
এডিজি দক্ষিণবঙ্গ জানান, ‘‘ বনধ ডাকা বেআইনি।এটা আমরা বলছি না, কোর্টের অর্ডার বলছে। কাল প্রশাসন সেটা প্রতিহত করবে। বাংলা সচল করার জন্য সব ধরনের প্রয়াস থাকবে। আমরা ধন্যবাদ জানাই প্রকৃত মানুষদের। পুলিশ কাল বন্ধুর মতো পাশে থাকবে।’’