লাইফস্টাইল Parenting Tips: সন্তানকে এই ১২ কথার একটিও কখনও বলেন? খেলার ছলে হলেও রোজ ভাঙছে বিশ্বাস-আত্মবিশ্বাস! তছনছ হতে পারে ভবিষ্যৎ Gallery November 1, 2024 Bangla Digital Desk *সন্তানকে মজা করে অনেক কথাই আমরা বলেন। কখনও কখনও আবার রাগ বা অভিমান থেকেও অনেক কথা বলে ফেল্কেন অনেকেই তাঁদের বনিজেদের বিভিন্ন বয়সী সন্তানদের। বড়দের কাছে এ সব সাধারণ মনে হলেও শিশুর জন্য তা মনের গভীরে প্রভাব ফেলতেই পারে, বলছেন মনোবিদেরা। এসব কথা অনেক সময়ই শিশুর মনে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। তাতে মনোবল হারিয়ে ফেলে অনেক বাচ্চাই। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন কোন কোন কথা কখনওই একজন শিশুর সামনে বলা উচিত নয় ভুল করেও। সংগৃহীত ছবি। *মা বেশি ভালোবাসে, না বাবা? প্রায়ই আমরা সন্তানকে এই প্রশ্ন করি। কিন্তু তা একেবারেই করা উচিত নয়। মা-বাবা দুজনেই একটি শিশুর কাছে সমান। তাই এই কথা বারে বারে তাঁকে বললে শিশু বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে কার নাম সে বলবে। ছোট হলেও সে বুঝতে পারে, যে কোনও একজনের নাম বললে অন্যজন মন খারাপ করতে পারে। আবার সে বুঝতে পারে, যখন মা প্রশ্ন করছেন, তখন মায়ের নাম বললে তিনি খুশি হবেন। সেক্ষেত্রে না চাইতেও সে মিথ্যা বলে ফেলে। এগুলো খুব ছোট মিথ্যা হলেও শিশুর মিথ্যা বলার প্রবণতা বাড়তে থাকে। এমনকি মা এবং বাবার মধ্যে যে কোনও পার্থক্য নেই, শিশুমন অনেকক্ষেত্রে তা বুঝতে ভুল করে ফেলে। সংগৃহীত ছবি। *তোমাকে কুড়িয়ে এনেছিলামঃ এই কথাটি সব শিশুকেই কম-বেশি শুনতে হয়। ভাইবোনের সঙ্গে বা বাবা-মায়ের চেহারা বা স্বভাবে বা চেহারায় তেমন মিল না থাকলে কিংবা শিশুর কোনও আচরণ পছন্দ না হলেই মা-বাবা বলেন, তোমাকে কুড়িয়ে এনেছিলাম। কিংবা হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসেছিলাম। মা-বাবা হয়তো ভাবেন এটা বললে শিশু ভয় পাবে, ফলে তাদের মনমতো কাজ করবে। কিন্তু ছোট্ট শিশুর মনে এই কথার সাঙ্ঘাতিক প্রভাব পড়তে পারে। ১১ বছর বয়স পর্যন্ত একটি শিশুর আনুষ্ঠানিক চিন্তার প্রক্রিয়া বা ‘ফরমাল থট’ তৈরি হয় না। কথার যে অন্য অর্থ থাকতে পারে, সেটা সে বোঝে না। ফলে মা-বাবা যখন বলছেন, তোমাকে কুড়িয়ে এনেছি, তখন সেটাকেই সত্যি ভেবে নেয়। সে মনে করতে পারে, সে পরিবারের কেউ নয়। এ জন্য তার ভালবাসা কম। বকলেও এই ভাবনা মাথায় চলতে থাকে। সংগৃহীত ছবি। *চেহারা নিয়ে কটাক্ষ নয়ঃ তুই কী রোগা, বাড়িতে খেতে দেয় না? খুব রোগা বাচ্চাদের একথা শুনতে হুওয় হামেশাই। দিনের পর দিন লোকমুখে সেটা শুনলে তা তাঁদের মনের অপরে খারাপ প্রভাব বিস্তার করে। তাই চেহারা নিয়ে মজা করেও কিছু বলা উচিত নয়। মোটা, রোগা, গায়ের রং কালো, ফর্সা নিয়ে বাচ্চাদের কখবও কিছু বলা উচিত নয়। সংগৃহীত ছবি। *ভাই বা বোনকে বেশি ভালবাসিঃ ভাইবোনদের মধ্যে কখনও তুলনা করা উচিত নয়। সন্তানদের মধ্যে কখনও ভালবাসার ক্ষেত্রে বৈষম্য করবেন না। কারণ তা প্রকাশ করলে শিশুমনে খারাপ প্রভাব পড়ে। অনেক সময় অভিভাবকেরা মজা করেই বলেন, তোমাকে না, বোন বা ভাই বা দাদাকে বেশি ভালবাসি। এ কথা শুনতে শুনতে তাঁদের মধ্যে ঈর্ষা জন্মাতে পারে। ফলে কখনও এ কথা করবেন না। কারণ এতে সে নিজেকে বৈষম্যের শিকার বলে ধরে নিতে শুরু করে। হীনম্মন্যতার জন্ম দেয়। সংগৃহীত ছবি। *তুমি একটা গাধাঃ প্রায়ই আমরা আদর বা রাগ করে সন্তানকে বোকা বা গাধা বলি। বিষয়টিকে ভীষণভাবে নিরুৎসাহিত করছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। শিশুরা বুঝতেই পারে না তাঁকে মজা করে বোকা বলা হচ্ছে। সে ধরেই নেয় সে বোকামি করে, তাই তাকে বোকা বলা হচ্ছে। কিশোর কাউকে এথা বললে হীনম্মন্যতা গ্রাস করতে পারে। সংগৃহীত ছবি। *তুমি পারবে নাঃ কোনও কাজে নিরুৎসাহিত করবেন না। কাজটি সে বা তারা পারবে না একথা বলা একেবারেই ঠিক নয়। তাহলে কাজটি শুরু করার আগেই তার ধারণা হবে সে কাজটি পারবেই না। কারণ, মা-বাবা বলে দিয়েছে। তাই চেষ্টার আগেই ভেতর থেকে অনীহা জন্মাবে। তাই শিশুকে সব সময় উৎসাহ দিয়ে কথা বলা উচিত। মা-বাবা তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, তারা উৎসাহ দিলে সে কাজে আগ্রহ পাবে। যে কোনও কঠিন কাজও সহজে করে ফেলতে পারবে। সংগৃহীত ছবি। *কেঁদো নাঃ বাচ্চাদের কাঁদতে বারণ করবেন না। পেন্সিল বা ক্রেয়ন হারিয়ে যাওয়ার দুঃথ আপনার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। ওদের জিনিসের সঙ্গে জুড়ে থাকা আবেগকে মূল্য দিন। কাঁদতে বারণ করা মানে ওদের আবেগ প্রকাশে বাধা দিয়ে ফেলছেন অজান্তেই। শিশু মনকে নিজেদের মতো করে বিকশিত হতে দিন। সংগৃহীত ছবি। *বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাঃ বাচ্চা কথা না-শুনলে অনেক সময় মা-বাবা তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এই কথাগুলি বাচ্চাদের মনে গভীর প্রভাব ফেলে ও কষ্ট দিয়ে থাকে। এমনও হতে পারে যে, বাচ্চারা আপনাকে কিছু না-জানিয়েই প্রতিবেশীর বাড়িতে চলে গেল। বার বার বাচ্চাদের এই কথা বলতে থাকলে তা তাদের মনে গেঁথে যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কথা মনে করে তারা কোনও ভুল পদক্ষেপও করতে পারে। সংগৃহীত ছবি। *ব্যঙ্গ নয়ঃ সন্তান বা অন্য কোনও শিশুর দুর্বলতা নিয়ে কখনও ব্যঙ্গ বা খোঁচা দিয়ে কথা বলা উচিত নয়। এতে তার মনে যথেষ্ট চাপ পড়ে। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। সংগৃহীত ছবি। *পড়াশোনা নিয়ে তির্যক মন্তব্য নয়ঃ সব শিশুর মেধা সমান নয়। কেউ হয়তো খুব ভাল, আবার কেউ পড়াশোনায় তেমন ভাল ফল করে না। তা নিয়ে বাড়িতে বা বাইরে শিশুদের কম কটাক্ষের শিকার হতে হয় না। অনেক সময়ে হয়তো বাবা-মা নিজেদের সঙ্গেও ত্যুলনা করে ফেলেন। এগুলি ভুলেও করা যাবে না। সমীক্ষা বলছে, পড়াশোনা সংক্রান্ত কটাক্ষ বা মানসিক চাপ ভবিষ্যতে বাচ্চাদের উদ্বেগ ও হতাশার দিকে ঠেলে দেয়। সংগৃহীত ছবি। *ভাল লাগার বিষয় নিয়ে কটাক্ষ নয়ঃ প্রতিটি শিশুর ভাল লাগার বিষয় আলাদা। কেউ আঁকতে ভালবাসে, কেউ নাচতে, কেউ খেলতে, কেউ প্রকৃতি দেখতে। তাই তাদের ভাল লাগা নিয়ে কটাক্ষ করবেন না। এতে শিশুরা তাদের ভাল লাগার বিষয়ের প্রতি আগ্রহ হারাবে ও হতাশ হয়ে পড়তে পারে। সংগৃহীত ছবি। *ভয় দেখাবেন নাঃ অন্ধকার, পোকামাকড় বা ভূতের ভয় দেখানো হয় বাচ্চাদের। এটা ভীষণ অস্বাস্থ্যকর শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য। বার বার ভয় দেখালে শিশুর মনে তা গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। ভবিষ্যতে সে স্থায়ী উদ্বেগের শিকার হয় অনেকক্ষেত্রেই। তাই এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন, আর কেউ এমন কাজ চোখের সামনে করলে তৎক্ষণাৎ না করে দিন। সংগৃহীত ছবি।