পড়শি রাজ্যে ট্রেন ধরতে গিয়ে হয়রানির মুখে বাংলার ব্যবসায়ী

রক্ষকই যখন ভক্ষক; পড়শি রাজ্যে ট্রেন ধরতে গিয়ে হয়রানির মুখে বাংলার ব্যবসায়ী, সাসপেন্ড ৫ পুলিশকর্মী

পটনা: চাঞ্চল্যকর কাণ্ড বিহারের পটনা জংশনে। এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোর করে অর্থ আদায়ের গুরুতর অভিযোগ উঠল পাঁচ পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রয়েছেন জিআরপি এসএইচও পঙ্কজ কুমারও। আপাতত পটনা জিআরপি-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজেশ কুমার সিনহাকে। এদিকে ইতিমধ্যেই সমস্ত অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারতীয় রেলওয়ে। কনস্টেবল কৃষ্ণ কুমার ঠাকুর, এসআই রাকেশ কুমার, এসআই সঞ্জয় কুমার এবং এসআই রামচন্দ্র রাম-সহ পাঁচজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

আরও পড়ুন– নোট গুণতে সময় লেগেছিল ১০ দিন, দেশের সবচেয়ে বড় আয়কর অভিযান সম্পর্কে জানেন?

গোটা ঘটনাটি ঘটেছে গত ১ অগাস্ট, ২০২৪ তারিখে। ওই দিন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সোমনাথ নাইয়া পটনা জংশনে হাওড়ার ট্রেন ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ইতিমধ্যেই আচমকা তাঁকে সন্দেহভাজন ঠাওরে এক কনস্টেবল তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এরপর ওই ব্যবসায়ীকে জিআরপি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তাঁকে নানা ধরনের প্রশ্ন করা হয়। এরপর তাঁকে জেলে পাঠানোর ভয় দেখানো হয়। সোমনাথ নাইয়া বারবার বলতে থাকেন যে, তিনি নির্দোষ। কিন্তু তাঁর কথায় কোনও পুলিশকর্মীই কর্ণপাত করেননি।

আরও পড়ুন– খোটাচিওয়াড়ি গ্রামের নাম শুনেছেন? মুম্বইয়ের মধ্যে এক টুকরো পর্তুগাল যেন, বেড়াতে আসেন বিদেশিরাও

সোমনাথকে পুলিশকর্মীরা জানিয়েছিলেন যে, ৫০ হাজার টাকা দিলে তবেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। সেই সময় ২০ হাজার টাকাই ছিল সোমনাথের হাতে। জিআরপি থানায় সেই টাকা দিয়ে দেন তিনি। তবুও তাঁকে ছাড়া হয়নি। বাকি ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন অভিযুক্ত পুলিশকর্মীরা। এরপর ওই ব্যবসায়ী এক আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৯ হাজার টাকা অনলাইনে দিতে বলেন। এরপর সেই টাকা তিনি পুলিশকর্মীদের হাতে তুলে দেন। এরপরেই থানা থেকে ছাড়া পান ওই ব্যবসায়ী।

এবার পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছে ওই ব্যবসায়ী রেলওয়ে হেল্পলাইন নম্বর ১৩৯-এ কল করে গত ৪ অগাস্ট অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ামাত্রই রেলওয়ে পুলিশে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। এরপর তড়িঘড়ি এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব গিয়ে পড়ে রেলওয়ে ডিএসপি পিকে তিওয়ারির কাঁধে। তদন্ত নেমে তিনি জানতে পারেন, তোলাবাজিতে অভিযুক্ত কনস্টেবল কৃষ্ণ কুমার পলাতক। তদন্ত চলাকালীন, সিসিটিভি ফুটেজ এবং মানুষের বিবৃতি-সহ একাধিক প্রমাণ সংগ্রহ করেন ডিএসপি। ওই পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেয়েছিলেন তিনি। তদন্তের যে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে সাসপেন্ড করা হয়েছে পটনা জিআরপি ইন-চার্জ পঙ্কজ কুমার, সাব-ইনস্পেক্টর রাকেশ কুমার, এএসআই রামচন্দ্র রাম, কনস্টেবল সঞ্জয় কুমার এবং কৃষ্ণ কুমার ঠাকুরকে।