কলকাতা: পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের অন্যতম প্রধান শিল্প শহর হল জামশেদপুর। আর খাদ্যপ্রেমীদের জন্য স্বর্গও বটে! কারণ সব ধরনের খাবার পাওয়া যায় এই শহরে।
সে দক্ষিণী খাবার হোক, চাইনিজ হোক কিংবা মোগলাই হোক কিংবা তন্দুরি – নানা রকম খাবারের পসরা দেখা যায় এখানে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ঝাড়খণ্ডের ঐতিহ্যবাহী খাবার ধুসকা।
এই খাবারটি খাওয়ার জন্য বিকেল ৪টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বসন্ত টকিজের পিছনে অবস্থিত নীলমদেবীর স্টলে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভিড় জমান।
আরও পড়ুন- মাটির থালা, বাটি, গ্লাস, হাঁড়ি! নকশা ডিজাইনে দিশা দেখাচ্ছেন কলেজ ছাত্রী
হাজারিবাগের বাসিন্দা নীলমদেবী মাস দুয়েক আগে জামশেদপুরে একটি ছোট স্টলের মাধ্যমে নিজের সফর শুরু করেছিলেন। আসলে তাঁর স্বামী ডিম বিক্রি করতেন। কিন্তু তেমন লাভ না হওয়ায় নতুন কিছু করার তাগিদ অনুভব করেন।
সেই কারণে নীলমদেবী তাঁর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার ধুসকা জামশেদপুরের মানুষের কাছে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন। আর তাঁর এই প্রচেষ্টা শুধু সফলই হয়নি, ধুসকা এখন শহরের এক অনন্য খাবারের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
ধুসকা সাধারণত ঝাড়খণ্ডে ব্রেকফাস্টে খাওয়া হয়। এই খাবারটি তৈরি করা হয় উরাদ ডাল এবং চালের মিশ্রণ দিয়ে। এটি তৈরি করার জন্য প্রথমে ডাল ও চাল ভিজিয়ে মিশিয়ে একটা মিশ্রণ প্রস্তুত করা হয়।
এর পর এই মিশ্রণটি গরম তেলে ছেড়ে ভেজে নেওয়া হয়, যাতে এটি খাস্তা হয়। ধুসকার সঙ্গে নীলমদেবী আলু-ছোলার তরকারি এবং ধনে-পুদিনার চাটনিও পরিবেশন করেন। যা এই খাবারটিকে আরও সুস্বাদু করে তোলে।
জামশেদপুরবাসীরা এই খাবারের স্বাদ খুবই পছন্দ করেন। কারণ এই ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার শহরে খুব কমই পাওয়া যায় এবং সেই কারণেই নীলম দেবীর স্টলটি বিশেষ করে স্থানীয় মানুষের মধ্যে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ধুসকার আর একটি বিশেষত্ব হল – এর দাম অত্যন্ত কম। প্রতি পিস ধুসকার দাম মাত্র ১০ টাকা।
আরও পড়ুন- এবার আরামবাগ, দোকানের মধ্যে ঢুকিয়ে মহিলাকে ধর্ষণ! ভয়ঙ্কর অভিযোগ
নীলম দেবীর স্টলে ধুসকা খেতে আসা লোকজনেরা বলছেন, এমন স্বাদ তাঁরা আগে কখনও পাননি। একজন গ্রাহক বলেন, “আমি প্রথমবার ধুসকা খেয়েছি এবং এর স্বাদ আমার কাছে সম্পূর্ণ নতুন ছিল। এখন যখনই আমার অন্য রকম কিছু খাওয়ার ইচ্ছা হয়, তখনই আমি এখানে আসি।
যাঁরা হালকা, পুষ্টিকর এবং চটপটা স্ন্যাকস খেতে পছন্দ করেন, তাঁদের কাছে এই ধুসকা বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। নীলমদেবীর স্টলে ধুসকার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা তাঁকে কেবল আর্থিক ভাবেই শক্তিশালী করেনি, বরং জামশেদপুরের বুকে ঝাড়খণ্ডের পরম্পরাগত খাবারকে একটি নতুন পরিচয়ও দিয়েছে।