নয়াদিল্লি : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে দুই ভারতীয়র মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, মোটা বেতনের চাকরির টোপ দিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে তাঁদের জোর যুদ্ধে পাঠানো হয়। এই খবর সামনে আসার পরই মানব পাচার চক্রের খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু করল সিবিআই।
সিএনএন-নিউজ ১৮-কে সিবিআই কর্তারা জানিয়েছেন, লোভনীয় চাকরির ফাঁদ পেতে ভারতীয় যুবকদের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অঞ্চলে নিয়োগ ও পাঠানোর অভিযোগে বিভিন্ন ভিসা পরামর্শদাতা সংস্থা এবং এজেন্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মানব পাচারের এই নেটওয়ার্ক দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে।
জানা গিয়েছে, দিল্লি, ত্রিবান্দ্রম, মুম্বই, আম্বালা, চণ্ডীগড়, মাদুরাই এবং চেন্নাই সহ সারা দেশে ১৩টিরও বেশি জায়গায় তল্লাশি চালায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সির এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘এখনও পর্যন্ত ৫০ লক্ষ টাকার বেশি নগদ, অপরাধমূলক নথিপত্র, ল্যাপটপ, মোবাইল, ডেস্কটপের মতো ইলেকট্রনিক রেকর্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে’।
সিবিআইয়ের মতে, পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক অত্যন্ত সংগঠিত এবং শক্তিশালী। প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এরা যুবকদের টার্গেট করে। তারপর স্থানীয় এজেন্ট যায় যুবকদের কাছে। তারা মোটা বেতনের চাকরি এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধার লোভ দেখিয়ে প্রলুব্ধ করে। বিষয়টাকে নিখুঁতভাবে সাজাতে এজেন্টরা রাশিয়ার এজেন্টদের সঙ্গে কথাও বলিয়ে দিত। যাতে মনে কোনও সন্দেহের উদ্রেক না হয়।
কেন্দ্রীয় সংস্থার অভিযানে একাধিক সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। মানবপাচার চক্র কীভাবে কাজ করে, কারা এর সঙ্গে জড়িত, কত টাকার লেনদেন হয়, সব কিছু জানার চেষ্টা করছে তদন্তকারী অফিসাররা।
পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত ৩৫ ভারতীয়কে ফাঁদে ফেলে বিদেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছে সিবিআই। আর কাদের কাদের পাঠানোর কথা আছে, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন অফিসাররা। আশ্চর্যের বিষয় হল, দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রতারণা চক্র চলছে। কিন্তু তার আঁচ পায়নি পুলিশ প্রশাসন। আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ থেকে যা উঠে আসবে তার ভিত্তিতেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবে সিবিআই। তবে ভবিষ্যতে বড় গ্রেফতারির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।