Saddam Sardar: খাটের নীচে সুড়ঙ্গ! পুলিশি জেরায় সেই সুড়ঙ্গ নিয়ে অদ্ভুত কথা জানালেন মূর্তি কাণ্ডে ধৃত সাদ্দাম সর্দার

কলকাতা: নকল সোনার মূর্তি নিয়ে রমরমা কারবার৷ ধরতে গেলে শেখ শাহজাহানের কায়দায় পুলিশকে বাধা৷ গুলি৷ বাড়ি তল্লাশি করতে গেলে দেখা যায় লোহার খাটের নীচে লম্বা সুড়ঙ্গ৷ পুলিশের জালে গত বুধবার রাতে ধরা পড়েছে সেই সাদ্দাম সর্দার৷ এবার সাদ্দাম সর্দারকে জেরায় উঠে এল সেই সুড়ঙ্গ সংক্রান্ত তথ্য৷

সূত্রের খবর, সেই সুড়ঙ্গতে নাকি মাগুর মাছের চাষের পরিকল্পনা করেছিল সাদ্দাম! পুলিশ সূত্রে খবর, সাদ্দাম জানিয়েছে, মাগুর চাষ লাভজনক ব্যবসা সেই জন্য বড় মাগুরের চাষের জন্য এমন পরিকল্পনা করে সুড়ঙ্গ বানিয়েছিল সে। এই ব্যবসায় মোটা অর্থ উপায়ের সম্ভাবনা থাকে, এমনই দাবি সাদ্দামের।

তবে, সুড়ঙ্গ নিয়ে এটাই সাদ্দামের প্রথম বয়ান নয়! এর আগে সাদ্দাম জানিয়েছিল শৌচাগার হিসাবে ব্যবহারের জন্যই ওই সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিল সে।

আরও পড়ুন: মুখের কথাতেই OMR শিট নষ্ট! কোন হেভিওয়েটের কথায় এত বড় সিদ্ধান্ত…মেনে নিল প্রাথমিক বোর্ড

পুলিশের দাবি, এভাবেই নানা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে তদন্তকে দিকভ্রষ্ট করার চেষ্টা করছে সাদ্দাম৷ আদতে পুলিশের অভিযানে পালানোর জন্যেই ওই সুড়ঙ্গ নির্মাণ বলে অনুমান তদন্তকারীদের।

এছাড়া, সাদ্দাম ৫০০ বিঘা একটি উচ্ছের ক্ষেতে ছিল একরাত। এই উচ্ছে ক্ষেত কার? ইট ভাটা কার? তা  জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে শেষবার গ্রেফতার হয়েছিল সাদ্দাম। সেবার লুঠের ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

মূলত, আসল সোনার মূর্তির ছবি দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে টোপ ফেলে নকল সোনার মূর্তি বিক্রির অভিযোগ ছিল এই সাদ্দামের বিরুদ্ধে৷ শুধু তাই নয়, সাদ্দামের বাড়িতে নাকি রমরমিয়ে চলত নকল সোনার ব্যবসা৷ পুলিশ সূত্রের খবর, সাদ্দামের বাড়ি থেকে ইতিমধ্যেই উদ্ধার হয়েছে ধাতু গলানোর যন্ত্র এবং রাসায়নিক৷ তদন্তে জানা গিয়েছে, বিগত ১৫ বছর ধরে এই প্রতারণার কারবার চালাত সাদ্দাম৷

আরও পড়ুন: একুশে জুলাইয়ের দিনই ট্রেন বাতিল? কুণাল ঘোষের জোরাল পোস্ট…অবশেষে কী সিদ্ধান্ত নিল রেল?

শুধু নকল সোনার কারবারই নয়, সাদ্দাম সর্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ডাকাতিরও৷ এছাড়া, ২০১৯ সালের একটি খুনের ঘটনাতেও সে অভিযুক্ত৷ কুলতলির জালাবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েতের পয়তারহাটের বাসিন্দা সাদ্দমের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই প্রতারণার অভিযোগ। এর আগেও এ রকম একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এক বার তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গত সোমবার সাদ্দামের পয়তারহাটের বাড়িতে অভিযানে যায় পুলিশ। সাদ্দামকে ধরেও ফেলে তারা।

কিন্তু এর পরেই তার বাড়ি এবং আশেপাশের মহিলারা পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সাদ্দামের ভাই সাইরুল পুলিশকে নিশানা করে গুলিও চালান বলে অভিযোগ। এই সুযোগে পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যান সাদ্দাম এবং সাইরুল। সাদ্দামের স্ত্রী রাবেয়া সর্দার এবং মাসুদা সর্দার নামে আরও এর মহিলাকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ গ্রেফতার করা হয়।

সাদ্দামের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় দেখা যায়, তার ঘরের স্টিলের খাটের নীচে একটি সুড়ঙ্গ খোঁড়া রয়েছে৷ সেই সুড়়ঙ্গে যোগ রয়েছে পাশের একটা খালের কাছে৷ পুলিশ অনুমান করে সেই সুড়়ঙ্গের পথেই পালিয়েছিল অভিযুক্ত৷

তারপরে কোথায় কোথায় আত্মগোপন করেছিল সাদ্দাম? ঘটনার পর প্রথম রাতে চুপড়িঝাড়া উচ্ছের ক্ষেতে লুকিয়েছিল। দ্বিতীয় দিন রাতে বকুলতলায় একটি ইঁট ভাটায় আত্ম গোপন করেছিল। তৃতীয় দিন অর্থাৎ, বুধবার সন্ধ্যেতে সিপিএম নেতা মান্না খানের কাছে যায় সাদ্দাম। বলে থাকতে দেওয়ার জন্য। সাদ্দামকে খেতে ভাত, মুড়ি, বিস্কুট দেওয়া হয়। এরপর ভেড়ির মাছ পাহারা দেওয়ার আলাঘরে থাকতে দেওয়া হয় সাদ্দামকে।