Saswata Chatterjee: শাশ্বত-শাওকী যুগলবন্দি! ‘কারাগার’ খ্যাত পরিচালকের নয়া সিরিজে টলিউডের ‘অপুদা’

কলকাতা: সিনেমা, ধারাবাহিক বা ওটিটি, সব ক্ষেত্রেই তাঁর অবাধ বিচরণ। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে হাতেখড়ি হলেও নিজেকে আটকে রাখেননি চেনা পরিসরে। বলিউড হয়ে দক্ষিণেও প্রতিভার ছাপ রেখেছেন অবলীলায়। এ হেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সাফল্যের খতিয়ান নতুন করে দিতে হয় না। কয়েক দশকের কেরিয়ারে সম্প্রতি নতুন অধ্যায় শুরু করলেন ৫৩-র অভিনেতা। বাংলাদেশের বিনোদন ক্ষেত্রে অভিষেক হল তাঁর।

‘গুলমোহর’ নামের সিরিজে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। পরিচালনার দায়িত্বে ‘তাকদীর’ এবং ‘কারাগার’ খ্যাত পরিচালক সৈয়দ আহমেদ শাওকী। অতীতে তাঁর দু’টি উল্লেখযোগ্য কাজেই প্রধান চরিত্রে দেখা গিয়েছিল ওপার বাংলার প্রথম সারির অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীকে। পরিচালনা পর্বের থেকেই শুরু মূলত বাংলাদেশের তারকাদের নিয়েই কাজ করেছেন পরিচালক। তবে ‘গুলমোহর’ নিয়ে শুরু থেকেই ছিল অন্য দর্শন, যা অনায়াসেই দুই বাংলাকে একসূত্রে গেঁথে দেয়। শাওকীর কথায়, “গুলমোহরের গল্পটি তৈরির সময় থেকেই মনে হয়েছিল যে, এটি দুই বাংলার জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে একজন বাঙালি অভিনেতা চেয়েছিলাম। শাশ্বতদা এই সিরিজে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।”

‘গুলমোহর’-এর সৃষ্টি-সফর শুরু হয় বহু আগেই। তার মাঝেই মুক্তি পায় শাওকীর অন্যান্য কাজ। জনপ্রিতার নিরিখেও তৈরি হয় সাফল্যের দলিল। নিজে সব ধরনের কাজ দেখতে ভালবাসলেও ওটিটি-তে এখনও পর্যন্ত থ্রিলার নিয়েই পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ পরিচালক। তাঁর নতুন সিরিজের গল্প আবর্তিত হবে একটি বাড়ি এবং সেখানকার সদস্যদের ঘিরে। নিউজ18 বাংলাকে শাওকী বলেন, “গুলমোহর মূলত একটি ফ্যামিলি ড্রামা। একাধিক টাইমলাইন জুড়ে গল্পের বিস্তৃতি। অবশ্যই তাতে রহস্য উপাদান থাকছে। যা দর্শককে আরও আগ্রহী করে তুলবে।”

চিরাচরিত ছক ভেঙে ইতিমধ্যেই বিনোদনের নতুন দরজা খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ। তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ওপার বাংলার উদীয়মান প্রযোজনা সংস্থা ‘ফিল্ম সিন্ডিকেট’। শাওকী সেই সংস্থার অন্যতম সদস্য। প্রথম থেকেই ‘গুলমোহর’ নিয়ে বড় ক্যানভাসে পরিকল্পনা পরিচালকের। অধুনা শাশ্বত অভিনীত চরিত্রটির জন্য মানানসই অভিনেতা পেতে চলেছে দীর্ঘ খোঁজ। কলকাতা অনেক নামী অভিনেতার সঙ্গে কথা হলেও শেষ পর্যন্ত নানা কারণে কাজের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। অবশেষে টলিউডের ‘অপুদা’য় মন থিতু হয় নির্মাতার। শাওকীর অভিমত, “একটা বিশেষ চরিত্রের দরকার ছিল, যার চোখ দিয়ে গল্পটাকে দেখা হবে। পশ্চিমবঙ্গের নামী সব অভিনেতাদের কাজ দেখেছি। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ কী ভাবে করব বুঝতে পারছিলাম না। আমাকে এক্ষেত্রে সাহায্য করেন ‘চরকি’র হেড অফ কন্টেন্ট অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়।”

আরও পড়ুন: বিনোদনের নতুন দিক দেখাচ্ছে ওপার বাংলা! ছক ভাঙছে ‘ফিল্ম সিন্ডিকেট’, নেপথ্যে কারা

আরও পড়ুন: তেলুগু ভাষায় ‘কল্কি’-তে নিজেই ডাবিং করেছেন শাশ্বত, তথ্য দিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রসেনজিৎ

অন্য দিকে, চলতি বছরে ‘ক্রু’, ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’-র মতো বাণিজ্যিক ছবি করা শাশ্বত একই রকম গুরুত্ব আরোপ করেছেন গল্প-নির্ভর কন্টেন্টে। ‘গুলমোহর’-এর চিত্রনাট্য শুনেই তাই শাওকীর সঙ্গে কাজ করতে রাজি হন এই মুহূর্তে বাংলার ব্যস্ততম অভিনেতাদের একজন। ওপার বাংলার সিরিজটিতে যে চরিত্রে তাঁকে দেখা যাবে, পর্দায় যে তার তাৎপর্য অশেষ, সেই আভাস স্পষ্ট। সময় লাগলেও সব ধরনের নিয়ম মেনেই বাংলাদেশে গিয়ে শ্যুট করে আসেন শাশ্বত। এপার বাংলার বিশেষ অতিথিকে পেয়ে আপ্লুত নির্মাতারাও। কাজের পাশাপাশি অভিনেতার আতিথেয়তাতেও কোনও রকম খামতি রাখেননি তাঁরা।

বর্তমানে বিনোদন ক্ষেত্রে দুই বাংলার আদানপ্রদান লক্ষণীয়। ওটিটি-র সৌজন্যে মলিন ভৌগলিক দূরত্ব। শাশ্বত-শাওকী যুগলবন্দিও তারই দলিল। এপার বাংলার অভিনেতা ছাড়াও সিরিজে থাকছেন জনপ্রিয় সব মুখ। তবে তা ক্রমশ প্রকাশ্য। ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে ‘গুলমোহর’-এর শ্যুট। আপাতত চলছে পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ। খুব শীঘ্রই ‘চরকি’-তে রিলিজ করবে সিরিজটি।