সাধারণত আমাদের দেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে সাপের উপদ্রব রয়েছে। বিশেষ করে ঘন বন, নদী আর পাহাড় এই তিন স্থানেই সাপের উপদ্রব খুব বেশি। অনেক এমন স্থান রয়েছে যেখানে প্রতিদিনই সাপের কামড়ের নানা ঘটনা ঘটে। কিন্তু সাপের ভয় এবং এর চিকিৎসা সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই অনেক মানুষ মারা যায়।বিভিন্ন জঙ্গলস্থানীয় এলাকায় অনেক প্রজাতির বন্য প্রাণী দেখা যায়। সেখানে অনেক বিলুপ্ত প্রজাতির সাপ ছাড়াও, কিং কোবরা বা সবচেয়ে বড় বিষাক্ত সাপও পাওয়া যায়। সাপ সংরক্ষণের জন্য অনেক স্থানেই স্নেক পার্কও তৈরি করা হয়েছে।সাপ দেখলেই মানুষের মধ্যে ভয় কাজ করে এবং তাঁরা তাড়াহুড়োয় সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেন। এর মাধ্যমে হয় সাপ মেরে ফেলা হয় নয়তো ব্যক্তির ভুল চিকিৎসা করা হয়। সাপ সংরক্ষণ এবং সাপের কামড় থেকে মানুষকে বাঁচাতে কোরবা জেলার স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্য জিতেন্দ্র সারথি নানা উপদেশ দিয়েছেন।জিতেন্দ্র সারথি জানান, যে কোনও সময়ই সাপ দেখা যেতে পারে। তবে বর্ষাকালে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি ঘটে। এর পাশাপাশি মার্চ ও এপ্রিল মাস সাপের প্রজননের মরশুম। তাই এই সময়েও সাপের কামড়ের ঘটনা শোনা বা দেখা যায়। তাপ থেকে বাঁচতে শীতল জায়গার খোঁজে প্রায়ই সাপ আবাসিক এলাকায় পৌঁছায়। ঘরের ঠান্ডা জায়গায় তারা তাদের আস্তানা তৈরি করে।জিতেন্দ্র সারথি বলেন, সাপের মুখোমুখি হলেই আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। এক্ষেত্রে মন শান্ত রাখতে হবে এবং সাপ থেকে পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রথমত, শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। সাপের দিকে হঠাৎ তেড়ে যাওয়ার দরকার নেই। এতে করে সাপ আত্মরক্ষার জন্য আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, সাপরাও মানুষের সংস্পর্শে আসতে চায় না। তাদের হয়রান করলে তবেই তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। কখনও কখনও জোরে উচ্চ শব্দ করও পথ থেকে সাপ সরানো যায়। তবে এটি করার সময় দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সাপের কান নেই, তবে কম্পনের প্রতি সাপ খুবই সংবেদনশীল।জিতেন্দ্র সারথি জানিয়েছেন যে, সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা চলবে না, রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, যেখানে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে অ্যান্টি-ভেনমের ডোজ দেওয়া হবে। যেখানে সাপে কামড়েছে সেই স্থান নড়াচড়া করা উচিত নয়। রক্তপাত হলে রক্ত প্রবাহিত হতে দিতে হবে।সাপে কামড়ানো জায়গা চিরে দেওয়া উচিত নয়। আজকাল সবার হাতেই স্মার্টফোন আছে। অতএব, যখনই কোনও সাপ কামড়াবে, তার একটি ছবি তুলে রাখা উচিত। এতে চিকিৎসকের সুবিধা হবে, কামড়ের দাগ দেখার পর তিনি সাপের প্রজাতি এবং কতটা বিষাক্ত তার উপর নির্ভর করে অ্যান্টি-ভেনম ডোজ দিতে পারবেন।
