Murshidabad News: পরিযায়ী শ্রমিকদের রাস্তা অবরোধকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল সমশেরগঞ্জ

মুর্শিদাবাদ: সমশেরগঞ্জের বাসুদেবপুর ১২নং জাতীয় সড়ক ও সুতির সাজুরমোড়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। প্রায় ঘণ্টা চারেক ধরে চলা এই অবরোধে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে পুলিশের সঙ্গে৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি, পাল্টা কাঁদানে গ্যাস, লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এই ঘটনায় দু’জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

বাসুদেবপুর মোড়ে ওড়িশার একটি গাড়ি ভাঙচুর ও মালপত্র লুট করারও অভিযোগ উঠেছে অবরোধকারীদের বিরদ্ধে। জঙ্গিপুর জেলা পুলিশ সুপার আনন্দ রায় বলেন, ‘‘এই ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। একটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আমরা সমস্ত কিছু তদন্ত করে দেখছি।’’

আরও পড়ুন: শেষ আশাটাও শেষ! অলিম্পিক্সে ভিনেশ ফোগাতকে রুপো দেওয়া যাবে না, জানিয়ে দিল সিএএস

অভিযোগ বাংলাদেশের উদ্ভুত পরিস্থিতির জেরে মুর্শিদাবাদের বাঙালি শ্রমিকদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায়। ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় হকারি করতে গেলে কিছু প্রভাবশালী লোকেরা তাঁদের পরিচয়পত্র দেখতে চাইছেন। কিন্তু ভারতীয় পরিচয়পত্র দেখালেও তাদের মারধর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

কার্যত আতঙ্কে কাজ ফেলে জেলায় ফিরে এসেছে কয়েক হাজার শ্রমিক। এমনই অভিযোগ তাঁদের৷ গত কয়েকদিনে হরিহরপাড়া, লালগোলা, সুতি, সমশেরগঞ্জ, জঙ্গিপুর এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে আসে।

আরও পড়ুন: আর জি কর কাণ্ডের তদন্তে ২০ সদস্যের সিবিআই দল! গোটা বিষয় নজরবন্দি দিল্লির

যদিও কয়েকদিন আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার ব্যাপার নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের দাবি কোনও সমস্যার সমাধান হয়নি। কাজের দাবিতে বুধবার সকাল থেকেই সমশেরগঞ্জ থানার বাসুদেবপুর ও সুতি থানার সাজুর মোড়ে অবরোধ করে পরিযায়ী শ্রমিকরা। প্রথমে সুতির সাজুরমোড়ে পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। লাঠিচার্জও করতে হয়।

এরপর বাসুদেবপুরে রাস্তা অবরোধ তোলার জন্য বারবার আবেদন জানালেও পরিযায়ী শ্রমিকরা বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেনি। এরপরেই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করে, পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাস ফাটায়। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ওড়িশার একটি তুলো বোঝাই গাড়িতে ভাঙচুর চালায় এবং পুরো লুট করে নেয় তুলো।

এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। বিক্ষোভকারী পরিযায়ী শ্রমিক মিনারুল ইসলাম বলেন, গ্রামে কোনও কাজ নেই, সেইকারণেই আমরা ভিনরাজ্যে কাজে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমাদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। আতঙ্কে কাজ ফেলে আমরা পালিয়ে এসেছি। এখানে কোনও কাজ নেই, আমরা কাজ চাই।

সেইকারণেই পথঅবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি। পরিযায়ী শ্রমিক আকতারুল সেখ বলেন, দুটো রোজগার করতে গিয়ে আমাদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। আমাদের মারধর করা হচ্ছে। আমাদের এলাকায় কাজ থাকলে আমরা এই সমস্যায় পড়তাম না। আমাদের কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।