SSC Upper Primary Recruitment: পুজোর আগেই উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ! আদালতের নির্দেশ আসার পরেই আশার কথা শোনালেন শিক্ষমন্ত্রী

কলকাতা:  সেই ২০১৫ সাল থেকে ঝুলে ছিল উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ অবশেষে ৮ বছর পরে দেখা গেল আশার আলো৷ উচ্চ প্রাথমিকের প্রায় ১৪ হাজার শূন্যপদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ছাড়পত্র দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এসএসসি-র উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। ৪ সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে বলে জানিয়ে দিল আদালত।

আদালতের নির্দেশের পরে এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের প্রতিক্রিয়া জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও৷ দুর্গাপুজোর আগেই নিয়োগ হবে বলে ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী। এসএসসি দ্রুততার সঙ্গে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবে বলে পোস্টে জানান ব্রাত্য।

এদিনের পোস্টে ব্রাত্য বসু লেখেন, ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছায় সিলমোহর পড়ল মাননীয় কলকাতা উচ্চ ন্যায়ালয়ের৷ আপার প্রাইমারি বিদ্যালয়গুলিতে ১৪ হাজারেরও বেশি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের জটিলতা কেটে গেল৷ সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় স্কুল সার্ভিস কমিশন অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে চলেছে৷ আশাকরি দুর্গাপুজোর আগেই হাসি ফুটবে কর্মপ্রার্থীদের মুখে’৷

আরও পড়ুন:  ‘এনাফ ইজ এনাফ…’, আরজি কর কাণ্ডে তীব্র প্রতিক্রিয়া রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর! বললেন ‘হতাশ আতঙ্কিত’

উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগের জন্য SSC টেট বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল ২০১৫ সালের অগাস্ট মাসে। সেই সময় ৭-৮ লাখ পরীক্ষার্থী বসেন টেটে। ২০১৫ সালেই ফল প্রকাশ হয় উচ্চ প্রাথমিক টেটের। এসএসসি উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় ২৩.০৯.২০১৬ তারিখে। ১৪৩৩৯ শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

২০১৬ সালে টেট ফলপ্রকাশ হয় আর নিয়োগের জন্য ভেরিফিকেশন হয় ২০১৯ সালে। এ নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগে মামলা হয় হাইকোর্টে। অভিযোগ ওঠে, ফর্ম ফিলাপ না করেই, টেটের নম্বর বাড়িয়ে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছে। নম্বর বিভাজন প্রকাশ না করেই মেধাতালিকা প্রকাশ করার অভিযোগের পাশাপাশি পরীক্ষায় না বসেই ভেরিফিকেশন এবং ইন্টারভিউ হয় ১১ ডিসেম্বর ২০২০ সালে।

এই মামলায় বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য পুরো মেধাতালিকা বাতিলের নির্দেশ দেন। নতুন করে ভেরিফিকেশন পর্ব থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এরপর জুন ২০২১-এ, নতুন করে ইন্টারভিউ লিস্ট প্রকাশ পায়। এই নতুন ইন্টারভিউ লিস্টকে চ্যালেঞ্জ করেও ফের মামলা হয়। সে সময় তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নম্বর বিভাজন সহ ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দেন এবং বাকি অভিযোগ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে খতিয়ে দেখে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। এরপর মামলা পৌঁছয় ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ স্থগিতাদেশ দেয়।

আরও পড়ুন:  যোধপুরের হাসপাতালে গণধর্ষিতা কিশোরী, গ্রেফতার ২ অস্থায়ী সাফাইকর্মী

নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। এবার কিন্তু ভুল শোধরাতে এসএসসি-কে নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। ইন্টারভিউ তালিকায় ১৪৯২ জনের ভুল ধরে এসএসসি, তাদের ইন্টারভিউ তালিকা থেকে নাম বাদ যায়। পাশাপাশি, ৭০০ জনের নাম নথিভূক্ত হয় ইন্টারভিউ তালিকায়৷ মণিরাজ ঘোষ সহ মামলাকারীরা আবারও আবেদন করে বলেন, যোগ্যরা ডাক পাচ্ছে না। কারণ টেট নম্বর নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়।

এবার মামলা আসে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, কাউন্সেলিং চলবে তবে চাকরিতে নিয়োগ করা যাবে না আদালতের অনুমতি ছাড়া। এর মাঝে ৮৯০০ জনের কাউন্সেলিং সম্পূর্ণ হয়।

এরপর আসে আরও একটি আবেদন, এসএসসি উচ্চপ্রাথমিক চাকরি পরীক্ষা TET নিয়েছে NYSA কমিউনিকেশন। এই ওএমআর কারচুপি হয়ে থাকতে পারে বলে অভিযোগ ওঠে। তা খতিয়ে দেখার আবেদন জানানো হয় ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলার শুনানি শেষ হয় জুলাই, ২০২৪-এ। আজ সেই মামলারই রায়দান হল।