ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে ছুঁয়ে ফেলেছে। শরীর ক্ষয়কারী এই রোগ আপনার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ এবং শারীরিক কার্যক্ষমতাকে ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত করে।যদিও রক্তে উচ্চ শর্করা ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ, তবে যদি চিকিত্সা না করা হয় তবে এটি হৃদরোগ, স্নায়ুর ক্ষতি, চোখের সমস্যা, পায়ের আকৃতির পরিবর্তন এবং আরও অনেক কিছু স্বাস্থ্যগত ক্ষতি করতে পারে।ডায়াবেটিস রোগীদের, বিশেষ করে বয়স্কদের খুবই সতর্ক হওয়া উচিত। আরও গুরুত্বপূর্ণ হল ডায়াবেটিসের রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা ঘন ঘন পরীক্ষা করা উচিত। ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। চলুন আজ এই প্রতিবেদনে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ব্লাড সুগার পরীক্ষার সঠিক নিয়ম এবং তার গুরুত্ব।ব্লাড সুগার পরীক্ষা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ‘টাইপ 2 ডায়াবেটিসের বিধ্বংসী পরিণতি’ প্রতিরোধ করার জন্য প্রাথমিক রোগ নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইঙ্গিত দিয়েছে যে প্রায় ৪২.২ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন ফি বছর এবং প্রতি বছর ১০.৫ লাখ মানুষ মারা যান এই রোগে।ব্লাড সুগার স্ক্রিনিং বা ব্লাড সুগার টেস্ট যেকোনও জটিলতা প্রতিরোধে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিকে তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিরীক্ষণ করতে এবং খাদ্য, ব্যায়াম এবং ওষুধের প্রতি তাদের শরীর কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় সে সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে টেস্ট।প্রিপ্রান্ডিয়াল রক্তে শর্করার মাত্রা সাধারণত ৭০ এবং ১০০ mg/dL এর মধ্যে থাকে। ১০০ এর নীচে মানে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক। ডাঃ রাজেশ বিন্দ্রে বলেন যে একটি সাধারণ ভুল মানুষ প্রায়ই করে থাকে তা হল সময়মতো ডায়াবেটিস পরীক্ষা না করা। তিনি বলেন, সময়মত পরীক্ষা না করে কয়েকদিন পরে পরে পরীক্ষা করা হলে তা ভুল ফলাফল দেবে।ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করার সেরা সময় কখন? বেঙ্গালুরুর এস্টার সিএমআই হাসপাতালের এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ড মহেশ ডিএম বলেন যে রক্তে শর্করার মাত্রা দিনে কয়েকবার পরীক্ষা করা উচিত, বিশেষত খাবার খাওয়ার পরে, ব্যায়াম করার পরে এবং যখন রক্তে হাই বা লো শর্করার লক্ষণগুলি অনুভব করেন।উচ্চ রক্তে শর্করার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে: তৃষ্ণা বাড়ে এবং মুখ শুকিয়ে যায় ঘন মূত্রত্যাগ ভীষণ ক্লান্ত ঝাপসা দৃষ্টি অপ্রত্যাশিত ওজন হ্রাস ঘন ঘন সংক্রমণলো ব্লাড সুগারের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে: মাথা ঘোরা ক্ষুধার্ত দ্রুত হৃদস্পন্দন অত্যাধিক ঘাম দুশ্চিন্তা বিরক্তি বা বিভ্রান্তিরক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু উপায়: ফলমূল, শাকসবজি, গোটা শস্য এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার খান। কার্বোহাইড্রেট এবং চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) সহ খাবার খান। সারাদিন প্রচুর জল পান করুন।দৈনিক ব্যায়াম। গভীর শ্বাস, ধ্যান এবং যোগব্যায়ামের মতো মানসিক চাপ-মুক্ত ব্যায়াম করুন। প্রতি রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম।আপনি যদি ইতিমধ্যেই ডায়াবেটিসে ভুগছেন তবে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সময়মতো ওষুধ খেতে অবহেলা করবেন না।ডিসক্লেইমার: এই খবরের সঙ্গে সম্পর্কিত তথ্য নিউজ 18 বাংলা নিশ্চিত করে না। বিশেষত আপনার সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধি করাই আমাদের এই প্রতিবেদনের মূল উদ্দেশ্য। আমরা বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট থেকে আপনার জন্য এই ধরনের তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি। এই সংক্রান্ত চূড়ান্ত জ্ঞানের জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞের মত নেওয়া কাম্য।
