ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতা: আগামী বিধানসভা ভোটে আগেই ডু অর ডাইয়ের ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর এবার ফের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই আগামী বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করলেন বিরোধী দলনেতা। ছাব্বিশের ভোটে কি ফের তাহলে সম্মুখসমরে মমতা -শুভেন্দু? শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে এখন জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বৃহস্পতিবার বিজেপির স্বাস্থ্যভবন অভিযানের সময় পুলিশ অভিযান চলাকালীন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আটক করে বিধাননগর পূর্ব থানায় নিয়ে যায়। থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে শুভেন্দু অধিকারী রীতিমতো চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, ‘‘আমি আমার দলের কাছে আবেদন করব যাতে আগামী বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখান থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন না কেন সেই আসনে আমাকে প্রার্থী করতে। একুশে নন্দীগ্রামে হারিয়েছিলাম। আগামী বিধানসভা ভোটেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাব।’’
একুশের বিধানসভা ভোটের আগে নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন তিনি নন্দীগ্রাম থেকেই একুশের বিধানসভা ভোটে লড়বেন। শেষমেষ নন্দীগ্রাম থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরে বিজেপি মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী ঘোষণা করেন শুভেন্দু অধিকারীকে। রাজ্য রাজনীতিতে মমতা- শুভেন্দুর একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্য মাত্রা পায় একুশের ভোট। একুশে সরকার গঠনের বিষয়ে বিজেপির স্বপ্নভঙ্গ হলেও তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এলেও শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ১৯৫৬ ভোটে হেরে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য রাজনীতির ইতিহাসে যা অন্যতম বিরল ঘটনা। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, নন্দীগ্রামে কারচুপি করে ভোটে জিতেছেন শুভেন্দু। শাসক দলের এই অভিযোগকে অবশ্য পাত্তা না দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বারবারই বলে থাকেন, ‘‘আমাকে নন্দীগ্রামে হারানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ প্রশাসন অনেক চেষ্টা করেছিলেন। সংখ্যালঘুদের একটা বিশাল অংশের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিলেও মুখ্যমন্ত্রীকে যেভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে নন্দীগ্রাম, তাতে ওনার সেদিনই পদত্যাগ করা উচিত ছিল।’’
আরও পড়ুন- রাশিফল ২৩ অগাস্ট: দেখে নিন আপনার আজকের দিন নিয়ে কী জানাচ্ছেন জ্যোতিষী চিরাগ দারুওয়ালা
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এক কথায় ভোটের এপিসেন্টার। নন্দীগ্রামে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এরপর থেকে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল, এ আসনে বিজেপি প্রার্থী কে হচ্ছেন? তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার পর সব জল্পনা–কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নন্দীগ্রাম আসনে প্রার্থী হিসেবে মমতার একসময়ের ঘনিষ্ঠ শুভেন্দু অধিকারীর নাম ঘোষণা করে বিজেপি। আর আগামী বিধানসভা ভোটের অনেক আগে থেকেই মমতার বিরুদ্ধে তিনি প্রার্থী হতে চান বলে বৃহস্পতিবার শুভেন্দুর ইচ্ছেপ্রকাশ করায় রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে যে, তাহলে কি ছাব্বিশের ভোটে ফের সম্মুখসমরে হতে চলেছেন মমতা- শুভেন্দু!