Tag Archives: Afghan Women

পরকীয়ায় জড়ালেই বেত্রাঘাত, পাথর ছুঁড়ে হত্যা, আফগানিস্তানে শরিয়া লাগুর ঘোষণা তালিবান নেতা আখুন্দজাদার

আফগানিস্তান: ‘ব্যভিচারের মতো অপরাধে’ মহিলাদের প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত এবং পাথর ছুঁড়ে হত্যার নিদান দেওয়া হল আফগানিস্তানে। একটি অডিও বার্তায় এই ঘোষণা করলেন তালিবানের সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা।

আফগানিস্তানের ন্যাশনাল ব্রডকাস্টার অনলাইনে এই অডিও বার্তা প্রকাশ করেছে। সেখানে পশ্চিমি গণতন্ত্রের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তালিবানি নেতা জানিয়েছেন, সারা দেশে এখন থেকে শরিয়া আইন লাগু হল।

আখুন্দজাদা বলেছেন, “মহিলাদের পাথর মেরে হত্যা করলে ওরা বলে নারীর অধিকার লঙ্ঘন… কিন্তু এখন থেকে এটাই ব্যভিচারের শাস্তি। আমরা প্রকাশ্যে মহিলাদের বেত্রাঘাত করব। জনসমক্ষে পাথর মেরে হত্যা করব”।

তবে মানবাধিকার রক্ষা করতেই এই আইন বলেও দাবি করেছেন আখুন্দজাদা। গণতন্ত্রকে ‘শয়তানের প্রতীক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “এ সব আপনার গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, কিন্তু আমরা চালিয়ে যাব। আমরা দুজনেই বলি, আমরা মানবাধিকার রক্ষা করি, আমরা এটা করি ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে। আর আপনি শয়তানের প্রতিনিধি”।

আরও পড়ুন-   গুরুতর অসুস্থ হিনা খান, রোজা চলাকালীন হঠাৎ কী হল? কাতর আর্জি নায়িকার, বাড়ছে উদ্বেগ!

আখুন্দজাদার মতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেভাবে নারীর অধিকারের পক্ষে বলছে, তা তালিবানের ইসলামিক শরিয়া আইনের বিপরীত। তাঁর প্রশ্ন, “পশ্চিমারা যে অধিকারের কথা বলছে, নারীরা কি সেই অধিকার চায়”? আখুন্দজাদা বলেন, “যে আলেমরা পশ্চিমা গণতন্ত্রের পতন ঘটিয়েছে, ওঁরা সেই আলেম এবং শরিয়ার বিরুদ্ধে। মুজাহিদিনদের বলেছিলাম, আমরা পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে গত ২০ বছর যুদ্ধ করেছি। দরকারে আরও ২০ বছর লড়াই করব”।

আরও পড়ুন-   চমকে দেওয়া খবর! জনপ্রিয় বাঙালি পরিচালকের হাত ধরে সিনেমায় নামছেন উরফি জাভেদ! নাম শুনলে আঁতকে উঠবেন

গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি বলেও হুঁশিয়ারি দেন তালিবান নেতা। তিনি বলেন, “ভাববেন না কাবুল দখল করার পর আমরা বসে বসে চা খাব। যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। আমরা এই জমিতে শরিয়া লাগু করব”।

প্রসঙ্গত, আখুন্দজাদা লোকচক্ষুর আড়ালেই থাকেন। জনসমক্ষে আসেন না বললেই চলে। ইসলামিক পণ্ডিতরা তাঁকে ঘিরে থাকে। ২০২১ সালের অগাস্টে ক্ষমতায় আসার পর নব্বইয়ের দশকের তুলনায় মধ্যপন্থী শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে মার্কিন এবং ন্যাটো বাহিনী প্রত্যাহারের পরই আসল রূপ দেখাতে শুরু করে তালিবানরা। ষষ্ঠ শ্রেণীর পর মেয়েদের পড়াশোনা নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। জনসমক্ষে মহিলাদের বেরনোও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এবার লাগু হল শরিয়া।

Afghan women football : তালিবানের নাগাল থেকে অনেক দূর! মাঠ মাতাচ্ছেন আফগান মহিলা ফুটবল দল

#মেলবোর্ন: তালিবানদের নাগাল থেকে বেড়িয়ে, প্রথমবার দেশের বাইরে ফুটবল ম্যাচ খেলল আফগান মেয়েরা। আফগানিস্তানের জাতীয় মহিলা ফুটবল দল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ম্যাচে নামল গত রবিবার। আফগানিস্থান থেকে পালিয়ে, তালিবানদের নাগাল থেকে বেরিয়ে এসে প্রথমবার ম্যাচ খেলল তারা।অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া লিগের একটি দলের সাথে একটি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিল তারা। তলার দিকের ডিভিশনের একটি ক্লাবের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়াতে ইস্টার্ন স্টেট অফ ভিক্টোরিয়ায় নেমেছিল আফগান মেয়েরা।

আরও পড়ুন – Umran Malik hits Hardik Pandya : হার্দিক পান্ডিয়াকে বাউন্সার করেই স্ত্রী নাতাশার দিকে কী ইঙ্গিত করলেন উমরান ? দেখুন

ম্যাচের ফল গোলশূন্য ড্র হয়। আফগান মেয়েদের একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। এই ম্যাচে অন্যতম বড় প্রমাণ যে তালিবানি ফতোয়া খেলোয়াড়দের আটকাতে পারেনা, বললেন আফগানিস্তান অধিনায়ক নিলাব। তিনিও তার বাকি সতীর্থদের মত নিজের পারিবারিক নাম উহ্য রেখেছেন, তাদের ওপর তালিবানি রোষ না পড়লেও, আফগানিস্তানে তাদের পরিবারের ওপর আক্রমণ হতে পারে বলে।

নিলাব বললেন তারা এখনও এই লড়াই চালাবেন এবং তাদের সংগ্রাম আফগানিস্থানের মানুষের জন্য খেলার। তারা দেশ থেকে পালিয়ে এলেও, সারাক্ষণ দেশের কথাই ভাবতে থাকেন এবং দেশের জয়ের জন্যই তারা লড়াই করছেন। আজ থেকে আট মাস আগে আফগানিস্থান চলে যায় চরমপন্থী তালিবানদের দখলে। মহিলাদের মানবাধিকার সম্পূর্ণ খর্ব করে দেয় তারা, বন্ধ করে দেয় মেয়েদের খেলাধুলা, পড়াশোনা, যেকোনো রকম বিনোদন।

পুরুষের সঙ্গ ছাড়া নারীদের বাড়ির বাইরে বেরোনো যেখানে বেআইনি ঘোষনা হয়েছে সেখানে মেয়েদের ফুটবল খেলার তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আফগানিস্থান তালিবানি দখলে চলে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার সাহায্যে মহিলা ফুটবল প্লেয়াররা এবং তাদের পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসে।

তবে বিভিন্ন প্লেয়ার বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাওয়ায় আফগানিস্থানের জাতীয় দল ভেঙে যায়। তবে বেশিরভাগই গেছেন অস্ট্রেলিয়াতে, মেলবোর্ন শহরে। মেলবোর্ন ইস্টার্ন স্টেট অফ ভিক্টোরিয়ার এ-লিগের ফুটবল ক্লাব মেলবোর্ন ভিক্টরি আফগান মহিলাদের সাহায্য করেন আবার মাঠে ফিরতে।