বিনোদন Singer Altaf Raja: দর্জি থেকে রাতারাতি সুপারস্টার, এক গানে বিশ্বরেকর্ড! ‘তুম তো ঠহরে পরদেশি’ গায়ক আলতাফ রাজা এখন কোথায়? Gallery August 1, 2024 Bangla Digital Desk ‘তুম তো ঠহরে পরদেশি, সাথ ক্যায়া নিভাওগে…’। ৯০-এর দশকের এই গানটা শোনেননি, এমন কোনও মানুষ নেই। গায়ক আলতাফ রাজা। তাঁর অ্যালবাম ‘তুম তো ঠহরে পরদেশি’, যা রাতারাতি তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিল৷ ভেঙে দিয়েছিল পূর্ববর্তী যাবতীয় ব্যক্তিগত গানের রেকর্ড৷ রাতারাতি বিক্রি ৭ মিলিয়ন ক্যাসেট৷ যা রেকর্ড। এত খ্যাতি অর্জন করেও সেই আলতাফ রাজা বর্তমানে লাইম লাইটের সম্পূর্ণ বাইরে। আলতাফ ১৯৬৭ সালের ১৫ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের নাগপুরে জন্মগ্রহণ করেন। আলতাফের বাবা-মায়ের ইচ্ছে ছিল, ছেলে যাতে ভাল জায়গায় পড়াশোনা করে সফল কোনও কেরিয়ার বেছে নেয়৷ ভাল স্কুলে পড়ানোর জন্যেই আলতাফকে নিয়ে আসা হয় মুম্বইয়ে৷ সেখানে প্রথমে তিনি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়৷ তারপরে ভর্তি করানো হয় মুম্বইয়ের নামী অ্যান্টোনিও ডি’সুজা স্কুলে। আলতাফের বাবা-মা জানতে পেরেছিলেন, ওই স্কুলে রাজ কপুরের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিদের যাতায়াত রয়েছে। সেই কারণেই হয়তো স্কুলটি বেছেছিলেন তাঁরা৷ যদিও এত ভাল স্কুলে পড়েও আলতাফের পড়াশোনায় মন ছিল না৷ নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরে পড়াশোনা ছেড়ে দেন আলতাফ৷ ছেলের পড়াশোনায় মতি নেই দেখে, আলতাফের বাবা-মা তাঁকে দর্জির কাজের শিক্ষানবিশিতে ভর্তি করিয়ে দেন৷ কিন্তু, তাঁর রক্তে যে গান ছিল৷ সেটা মিথ্যে হবে কী করে! আলতাফের বাবা-মা দু’জনেই কাওয়ালি গান গাইতেন৷ বিভিন্ন মঞ্চে গান গেয়েই সংসার চালাতেন৷ আলতাফও এবার জানিয়ে দিলেন, তিনিও গান-ই গাইতে চান৷ গান গেয়েই বিখ্যাত হতে চান৷ এরপর তিনি হারমোনিয়ামের প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। সারাক্ষণ গান গাইতেন। আলতাফ তাঁর মায়ের সঙ্গে গায়ক হিসেবে মঞ্চে কাওয়ালি সঙ্গীত পরিবেশন শুরু করেন। আলতাফের মা-ও তাঁকে পেশাগতভাবে গান করার পরামর্শ দেন। বাবা-মায়ের সহায়তায় আলতাফ সারাদেশে সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। উপরন্তু, তিনি বেশ কয়েকটি সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং ১৯৯০ সালে তাঁর প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ করেন ‘তুম তো ঠহরে পরদেশি’। সেই অ্যালবামেই রাতারাতি আসে জনপ্রিয়তা৷ আলতাফ রাজার কেরিয়ারের সবচেয়ে হিট গান ছিল ‘তুম তো ঠহর পরদেশি’। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, এই গানটির নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও রেকর্ডেও যোগ করা হয়েছে৷ কারণ এখনও পর্যন্ত এই অ্যালবামের রেকর্ড সংখ্যক ক্যাসেট বিক্রি হয়েছে ভারতে। আলতাফ রাজা ১৮ বছর বয়সে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন এবং অনেক সম্মানও পেয়েছেন। কিন্তু এখন আলতাফ ইন্ডাস্ট্রি থেকে সম্পূর্ণ নিখোঁজ এবং তিনি কোনও নতুন গানও প্রকাশ করেননি। ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া ইমরান হাশমির ‘ঘনচক্কর’ সিনেমায় আলতাফ রাজার কণ্ঠ শোনা গিয়েছিল। আলতাফের শুরু থেকেই গজল গান গাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল৷ কিন্তু তাঁর মা তাঁকে বলেছিলেন, গজলের আগে সিনেমার গান গাওয়ায় গুরুত্ব দিতে, তাই তিনি বলিউডের ছবিতেই গান গাইতে শুরু করেন। কিন্তু, প্রথমবারের মতো সাফল্য আর আসেনি৷ ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকেন তিনি৷ কমতে থাকে কাজও৷ মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, আলতাফ এখনও মুম্বইয়ের মোহাম্মদ আলি রোডের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। এখন তিনি মাঠে-ময়দানে গান গেয়েই রোজগার করেন৷ আলতাফ রাজার ‘তুম তো ঠহরে পরদেশি’ গানটি সম্প্রতি পুরোপুরি রিমেক করে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। আলতাফের শেষ গান ছিল ‘সাথ কেয়া নিভাওগে’ যে গান তিনি টনি কক্করের সঙ্গে গেয়েছিলেন। এই গানটি সুপরিচিত অভিনেতা সোনু সুদ এবং নিধি আগরওয়ালের উপর চিত্রায়িত হয়েছে, এটি ইউটিউবে ৫.২ কোটি মানুষ দেখেছেন। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, স্প্লিটসভিলা ১৫-এর অ্যানথেমে গলা দিয়েছেন আলতাফ রাজা। তাঁর ইচ্ছে, তুম তো ঠহেরি পরদেশি গানটির রিমিক্স হোক। সেই গানের ভিডিওতে বলিউডের তিন খানকে দেখতে চান তিনি।