নয়াদিল্লি: মোদির দশ বছরের শাসনকালের অনেকগুলি দিক রয়েছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল তিনি ভারতকে ‘সফট নেশন’ থেকে শক্তিশালী এবং আত্মবিশ্বাসী জাতিতে পরিণত করতে পেরেছেন। তাঁর হাত ধরেই ‘ডিফেনসিভ’ মানসিকতার বদলে ‘অ্যাগ্রেসিভ ডিফেনসিভ’ নীতি নিয়েছে দেশ।
ভারতের ১৫,১০৬.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থল সীমানা রয়েছে। উপকূলরেখার দৈর্ঘ ৭৫১৬.৬ কিলোমিটার। মোট ৯টি দেশের সঙ্গে স্থল সীমান্ত রয়েছে ভারতের। এর মধ্যে ৬ হাজার কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতার নেই। শুধু তাই নয়, সীমান্ত কতখানি সেটাও সঠিকভাবে ঠিক হয়নি এখনও পর্যন্ত। এটা গুরুতর বিষয়। তবে গত এক দশকে এর উপর কাজ শুরু করেছে মোদি সরকার।
আরও পড়ুন: মাত্র ২৭ মিনিটের ফুটেজ দিয়েছে পুলিশ, CBI-র অভিযোগ শুনে কী বললেন প্রধান বিচারপতি
বহু বাধা সত্ত্বেও মোদি সরকার ক্ষ্মতায় আসার পর সেই কাজগুলোই করতে শুরু করে। সীমান্তে রাস্তা তৈরি, সেতু ও টানেল নির্মাণ, অবকাঠামোর উন্নয়ন একাধিক দিকে হাত লাগায় ভারত।
মোদিও প্রতিবেশি দেশগুলির সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করেন। বোঝানোর চেষ্টা করেন, ভারত যদি দু’পা এগোয়, তারাও যেন এক পা এগিয়ে আসে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হয়নি। ২০১৬ সালে পাঠানকোটে হামলা। তারপর উরি। এরপরই ‘অ্যাগ্রেসিভ’ পলিসি নেন মোদি। উরিতে হামলার পাল্টা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে ভারত। বুঝিয়ে দেয়, মোদির নেতৃত্বে ভারত শান্তি চায়, কিন্তু এটাকে দূর্বলতা ভাবলে ভুল হবে।
আরও পড়ুন: মাত্র ২৭ মিনিটের ফুটেজ দিয়েছে পুলিশ, CBI-র অভিযোগ শুনে কী বললেন প্রধান বিচারপতি
সেপ্টেম্বর ২০২৬ – উরি হামলার পর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। সার্ক শীর্ষ সম্মেলন প্রত্যাখ্যান। ভারতের পথেই হাঁটে আরও তিন দেশ। পাকিস্তানকে একা করে দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
জুন ২০১৮ – চিনের সমর্থন সত্ত্বেও এফএটিএফের গ্রে তালিকায় নেমে যায় পাকিস্তান। বড় কূটনৈতিক সাফল্য পায় ভারত।
ফেব্রুয়ারি ২০১৯ – বালাকোটে আইএসআই জঙ্গিদের উপর হামলা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জঙ্গি ক্যাম্প। ভারত প্রথম্বার আন্তর্জাতিক সীমান্ত টপকে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। অভিনন্দনকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান।
অগাস্ট ২০১৯ – ৩৭০ ধারা রদ করে কেন্দ্র। ভারতীয় সংবিধান লাগু হয় কাশ্মীরেও। পাকিস্তানের প্রক্সি যুদ্ধে চূড়ান্ত আঘাত।
বালাকোটের দুই মাস পর মহাবালিপুরমে চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিংপিংকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যতম প্রতিপক্ষের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা। কিন্তু তারপরই ২০১৯ সালে আরসিইপি থেকে বেরিয়ে যায় ভারত। মোদি সরকার পরিস্কার করে দেয়, এতে ভারতের কোনও লাভ হচ্ছে না। কোভিড মহামারীর সময় গালওয়ানে ঢুকে পড়ে ভারতীয় সেনা। রুখে দাঁড়ায় ভারত। এই ঘটনার পর লাদাখ সফর করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুঝিয়ে দেন ‘বীরভোগ্যা বসুন্ধরা’। সীমানা রক্ষার জন্য আগ্রাসী নীতি নিতে পিছপা হবে না ভারত।
জুন ২০২০ – গালওয়ানে ঢুকে পড়ে চিনা সেনা। পাল্টা জবাব দেয় ভারত। সংঘর্ষে ৩৮ চিনা সেনার মৃত্যু হয়। তবে চিন আনুষ্ঠানিকভাবে ৪ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে।
জুন ২০২০- টিকটক এবং ৩৮টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে ভারত।
জুলাই ২০২০ – লেহ সফরে যান মোদি। সেনার উদ্দেশ্যে বলেন, “ভারতমাতার শত্রুরা আপনাদের আগুন আর ক্রোধ দেখেছে।“
সেপ্টেম্বর ২০২৩ – চিন থেকে পাততাড়ি গোটাতে শুরু করে ইউরোপীয় সংস্থাগুলি। ভারতে শুরু হয় বিনিয়োগ। এমনই প্রতিবেদন প্রকাশ করে রয়টার্স।
এখানেই শেষ নয়, প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পায়। নতুন উদ্যমে শুরু হয় মহাকাশ গবেষণার কাজ। মঙ্গলবার ৭৪ বছরে পা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর নেতৃত্বে গর্বিত গোটা দেশ।