বেঙ্গালুরু: ব্যবসার জন্য বন্ধুর কাছে টাকা চেয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। সঙ্গে সঙ্গে পেয়েও যান। ৫০০ টাকার নোটের কয়েকটা বান্ডিল পাঠিয়ে দেন বন্ধু। কিন্তু এভাবে ঠকতে হবে স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি বেঙ্গালুরুর ওই ব্যবসায়ী। বান্ডিল খুলতেই দেখেন সব টাকা জাল।
একই ঘটনা ঘটেছে কলারের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গেও। তাঁর কাছ থেকে আবার জাল মুদ্রাও উদ্ধার হয়েছে। দুটি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সেন্ট্রাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ। প্রতারকদের সঙ্গে হাওয়ালার যোগ রয়েছে বলে অনুমান করছে পুলিশ।
এফআইআরে ব্যবসায়ী দিব্যাংশ সংকলেচা জানিয়েছেন, তিনি ইন্দিরানগরে একটি ফার্নিচারের দোকান চালান। ব্যবসার জন্য ৩০ লাখ টাকার দরকার ছিল।
তিনি জ্যোতিবাবু নামে এক আত্মীয়ের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু দিল্লিতে যেতে পারছিলেন না। তাই বন্ধুবান্ধবদের বলেন, তাঁরা যদি টাকাটা এনে দিতে পারেন, খুব ভাল হয়।
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরু হত্যাকাণ্ডে পুলিশের জালে অভিযুক্ত, হত্যার কারণ প্রেমঘটিত নাকি অন্য কিছু?
২ জুলাই ব্যবসায়ীর বাবার কাছে একটা ফোন আসে। রমেশ নামের এক ব্যক্তি নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি ৩০ লাখ টাকা দিব্যাংশকে দেবেন। আর তাঁর সহযোগী সুরেশ দিল্লি থেকে টাকা নিয়ে আসবে।
সেই মতো রমেশের কথা দিল্লির জ্যোতিবাবুকে জানিয়ে দেন দিব্যাংশ। ৩ জুলাই তাঁর কাছে ফোন আসে, ‘‘নগদ ৩০ লাখ টাকা নিয়ে অপেক্ষা করছি। আপনি এসে নিয়ে যান।’’
রমেশের বলে দেওয়া জায়গায় পৌঁছে যান সুরেশ। তাঁকে ৫০০ টাকার বান্ডিলে ৩০ লাখ টাকা দেন সুরেশ। দেখা যায় তাতে ব্যাঙ্কের স্ট্যাম্প মারাও রয়েছে৷ তিনি দিল্লিতে জ্যোতি বাবুকে জানিয়ে দেন, ‘‘টাকা পেয়ে গিয়েছি। আপনি রমেশকে টাকা দিয়ে দিন।’’ কিন্তু বাড়ি ফিরে বান্ডিল খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ। বান্ডিলের শুধু উপর আর নিচের দুটো নোট আসল, বাকি সব জাল টাকা।
প্রেম কুমার জৈন নামের আর এক ব্যবসায়ীর সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে। ব্যবসার জন্য তাঁর ২৫ লাখ টাকার প্রয়োজন ছিল। বন্ধু বিপিনের কাছে সাহায্য চান তিনি।
বিপিন জানায়, তাঁর বন্ধু মাহি দিল্লি থেকে টাকা এনে দেবে। এফআইআরে প্রেম জানিয়েছেন, জয়েশ নামের এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে জানান, বিপিনের কথা মতো সে টাকার বন্দোবস্ত করেছে।
নাগারথপেটের একটি মন্দিরের কাছে প্রেম কুমারের হাতে ৫০০ টাকার বান্ডিল তুলে দেয় জয়েশ। বাড়ি ফিরে তিনিও দেখেন, বান্ডিলের শুধু উপর আর নিচের দুটো নোট আসল। বাকি সব জাল। এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই ব্যবসায়ী।
জাল থেকে বাঁচার উপায়: নগদ লেনদেন এড়াতে হবে। সর্বদা ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই লেনদেন করা উচিত।
নগদ নেওয়া বাধ্যতামূলক হলে অবিলম্বে নোট পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
অপরিচিত ব্যক্তির থেকে টাকা নেওয়া চলবে না।
যে কোনও লেনদেনের প্রমাণ রাখতে হবে। নিদেনপক্ষে ভিডিও করে রাখা উচিত।
লেনদেনের সময় কোনও রকম সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে।