Tag Archives: hathras satsang

Hathras Stampede: অনুমতি মাত্র ৮০ হাজারের, সত্‍সঙ্গে যায় কত লক্ষ? হাথরস কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য! গ্রেফতার ৬, এখনও পলাতক ‘ভোলে বাবার মুখ্য সেবাদার’!

হাথরস: হাথরস কাণ্ডে ইতিমধ‍্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ঘটনার মূল অভিযুক্ত ভোলে বাবার ‘মুখ্য সেবাদার’ দেব প্রকাশ মধুকরকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। দেব প্রকাশ মধুকরের হদিশ পেতে ১ লক্ষ পুরষ্কারেরও ঘোষণা করেছে পুলিশ।

সৎসঙ্গে এসে পদপিষ্ট হয়ে হাথরসে ১২১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে শোরগোল। দেব প্রকাশ মধুকরের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ‍্য অভিযোগ দায়ের করা হবে জানিয়েছেন আইজি শলভ মাথুর।

আরও পড়ুন: ১ মিনিটের পারিশ্রমিক ১০ কোটি! রজনীকান্তও ফেল? টাকার অঙ্কে সব সুপারস্টারদের ছাপিয়ে গেলেন কোন অভিনেতা? নাম শুনলে বিশ্বাসই হবে না

তবে যার দিকে এই ঘটনার জন‍্য আঙুল উঠেছে সেই ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সুরজ পালের দাবি, এই বিপর্যয়ের পদপিষ্টের ঘটনার পিছনে দুষ্কৃতীরা রয়েছে৷ মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন অভিযুক্ত ধর্মগুরু৷

মর্মান্তিক এইঘটনায় মৃত ১২১ জনের মধ‍্যে বেশিরভাগই মহিলা। সূত্রের খবর অনুযায়ী এই ঘটনার সময় বেশিরভাগ জনকেই আয়োজকরা ক‍্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয়। সেইসঙ্গে সেবাদাররা এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। যারা ওই সময় ভিডিও করতে চেয়েছিলেন তাদেরকেও বাধা দেওয়া হয় বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।

আরও পড়ুন: প‍্যারা টিচার এবং চুক্তিভিত্তিক শিক্ষাকর্মীদের জন‍্য সুখবর! বিরাট অঙ্ক বাড়িয়ে দেওয়া এককালীন অবসর ভাতার পরিমাণ, কত লক্ষ টাকা পাবেন? জেনে নিন

ভোলে বাবার ‘চরণধুলি’ নিতে গিয়েই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, মাত্র ৮০,০০০ জনের অনুমতি থাকলেও ২.৫ লক্ষ জনগণকে অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকিয়ে দেয় সৎসঙ্গের আয়োজকরা। সিকান্দরাউ থানায় দায়ের করা এফআইআর-এ মধুকর এবং অন্যান্য সংগঠকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে সেই তালিকায় নেই ভোলে বাবার নাম। তাই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

Hathras Stampede:৩ বছরের নিথর শিশুকে কোলে নিয়ে স্ত্রীর খোঁজ, মায়ের সঙ্গে ছেলের শেষ দেখা মর্গে…মৃত্যুমিছিলের হাথরসে শুধুই হাহাকার

হাথরস: উত্তরপ্রদেশের হাথরসে এক সৎসঙ্গে যোগ দিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ। সেই ঘটনার পর থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের হাহাকার, স্বজন হারানোর কান্না-আর্তনাদ। এখনও বহু মানুষ হয়তো খোঁজ পাননি তাঁদের প্রিয়জনের। শোকস্তব্ধ মুহূর্তের বেশ কিছু দৃশ্য আপাতত ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

উত্তরপ্রদেশের হাথরস জেলার ওই ধর্মীয় সভায় যোগ দিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১২১ জন মানুষ। এমনটাই জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। হাথরসের সিকান্দ্রারাউ এলাকার ফুলরাই গ্রামে স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবার আয়োজিত সৎসঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। মঙ্গলবার দুপুর ৩টে ৩০ মিনিট নাগাদ ভোলে বাবা যখন অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে গিয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানের শেষে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে ভক্তরা যখন বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁরা একে অপরের উপর পড়ে যান। এমনকী কেউ কেউ তো নর্দমাতেও পড়ে যান। যে সময় এই দুর্ঘটনা ঘটছিল, ঠিক তখন অন্য দিকে ছিলেন ফারুখাবাদের বাসিন্দা রাম নরেশ। তিনি বলেন যে, প্রত্যেকেই ভোলে বাবার গাড়ির দিকে ছুটেছিলেন এবং তাঁর চরণস্পর্শ করতে চাইছিলেন ভক্তরা।

রাম নরেশের কথায়, “যখন এই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটছিল, তখন আমি অন্য দিকে ছিলাম। আসলে সেখানকার জমি পুরোপুরি সমতল ছিল না। আর সেখান দিকেই সকলে বাবার গাড়ির দিকে ছুটেছিলেন। প্রত্যেকেই বাবার চরণস্পর্শ করে তাঁর আশীর্বাদ পেতে চাইছিলেন।”

আরও পড়ুন : বর্ষায় ফুচকা খাচ্ছেন? সর্বনাশ! নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছেন না তো! জানুন

ওই ঘটনার আরও একটি হৃদয়বিদারক ছবি সামনে এসেছে। যেখানে দেখা যায়, মৃত তিন বছরের একরত্তি সন্তানকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছেন এক বাবা। তাঁর কথায়, “আমার সন্তান তাঁর মায়ের সঙ্গে সৎসঙ্গে যোগ দিয়েছিল। পদপিষ্ট হওয়ার খবর পেয়েই আমি সেখানে গিয়েছিলাম।’’  তিনি আরও বলেন, শিশুর মায়ের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কখনওই ভাবতে পারিনি যে, নিজের পুত্রের মৃতদেহ কোলে নিয়ে আমায় মর্গে যেতে হবে। আমি শুধু ওকে ওর মায়ের সঙ্গে সৎসঙ্গে পাঠিয়েছিলাম।”

অন্যদিকে আবার পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় নিজেদের মাকে হারিয়েছে দুই কিশোর। সৎসঙ্গের একটি ভাইরাল ভিডিও তারা পেয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপে। তাদের বক্তব্য, “আমাদের কাছে একটি ভিডিও এসেছিল। তাতে আমরা দেখেছি যে, আমাদের মা মাটিতে পড়ে রয়েছেন। এরপরেই আমরা সৎসঙ্গের দিকে ছুটে গিয়েছিলাম। সেখানে কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পরে মর্গে গিয়ে আমরা মায়ের খোঁজ পাই।”

মথুরার বাসিন্দা সোহনলাল বলেন, তিনি নিজের গোটা পরিবারের সঙ্গে সৎসঙ্গে ছিলেন। তবে তাঁর একজন আত্মীয়া একা ছিলেন। যিনি প্রাণ হারিয়েছেন। তবে ওই মহিলার সন্তানেরা সোহনলালের পরিবারের সঙ্গে থাকায় তারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। আর এক মহিলা জানালেন, তিনি নিজের জামাই এবং আর এক আত্মীয়াকে হারিয়েছেন। এদিকে ঘটনায় জখম হয়ে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছায়া নামে এক নাবালিকা। জানিয়েছে যে, মা এবং পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে সৎসঙ্গে যোগ দিয়েছিল সে। রাস্তায় ছিল মারাত্মক ভিড়। এরপরেই কিছু নিয়ে একটা হাতাহাতি হয়। শেষে ঘটে যায় পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা।

আবার হাসপাতালে ভর্তি প্রীতি নামে এক মহিলাও। তিনি বলেন যে, ওই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তাঁর শাশুড়ি এবং এক আত্মীয়া। আর এক প্রত্যক্ষদর্শী পারভানা দেবী বলেন, বাবা অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে বেরনোর সময় যে ভিড় তাঁর পিছনে ছুটছিল, সেই ভিড়ের চাপে পড়ে তিনি আহত হয়েছেন।

এদিকে স্বজনদের ছবি নিয়েও পাগলের মতো খোঁজ করে চলেছেন কিছু মানুষ। এক ব্যক্তিকে তাঁর বোন এবং ভাগ্নের খোঁজ করতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, “সারা রাত ধরে ওদের খুঁজলাম। কিন্তু এখনও কোনও খোঁজ পাইনি।”

এহেন গাফিলতির জন্য পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। ওই সময় দায়িত্বে থাকা সমস্ত পুলিশ আধিকারিকদের বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন। অনেকেরই বক্তব্য, পুলিশ পরিস্থিতি ভাল ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। সৎসঙ্গে যোগ দেওয়া এক ভক্ত আইএএনএস-এর কাছে জানান যে, “আমরা চাই মুখ্যমন্ত্রী যোগী এই দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকদের বরখাস্ত করুন। এমনকী আমি জেলাশাসকের কাছে প্রশ্ন করেছিলাম যে, যাঁদের প্রাণ গেল, তাঁদের সঙ্গে কী ঘটবে? পুলিশ অফিসাররা আমায় সরিয়ে দিয়েছিলেন। এমনকী জেলাশাসক আমায় বাড়ি ফিরে যেতে বলেছিলেন।”

সৎসঙ্গ আয়োজক কমিটির সদস্য মহেশ চন্দ্রের অভিযোগ, প্রশাসনের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটে গিয়েছে। মঙ্গলবার লোকসভায় বক্তব্য রাখার সময় এই বিষয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পদপিষ্ট হয়ে মৃতদের পরিবারের উদ্দেশে সমবেদনাও জানিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও এই ঘটনায় রীতিমতো হতবাক। দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর নির্দেশও দিয়েছেন আধিকারিকদের। অন্যদিকে আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজনাথ সিংও গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং দুর্গতদের পরিবারকে সমস্ত রকম সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে।

সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়য়েছে যে, সৎসঙ্গের আয়োজকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য এডিজি আগ্রা এবং আলিগড় ডিভিশনাল কমিশনারকে নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে যে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।