Tag Archives: Hathras Stampede

Hathras Stampede: এত মৃত্যুর পরই গায়েব সেই ‘ভোলে বাবা’! ‘ওঁরা’ যেন চেনেই না, শেষমেশ সামনে চলেই এল আসল কারণ!

হাথরস: সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের হাথরসে সৎসঙ্গে যোগ দিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ। জখম হয়েছেন বহু ভক্ত। এই ধর্মসভা অথবা সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিল মানব মঙ্গল মিলন সদ্ভাভাবনা সমাগম কমিটি। আর এই কমিটির মাথায় রয়েছেন এক আধ্যাত্মিক গুরু। যিনি হাথরসের ফুলরাই মুগলগাধি গ্রামে ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ সাকার হরি নামে প্রসিদ্ধ।

কিন্তু কী কারণে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের প্রিয় পাত্র জানেন? স্থানীয় আর সিনিয়র সাংবাদিকদের মতে, দলিত এবং আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস (ওবিসি) সম্প্রদায়ের উপর ভোলে বাবার রীতিমতো একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। আর পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ৩০টি জেলা, ২৫টি লোকসভা কেন্দ্র এবং ১৩০টিরও বেশি বিধানসভা আসন জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছেন দলিত এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ। আর এই কারণেই রাজনৈতিক নেতাদের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছেন ভোলে বাবা।

আরও পড়ুন: দক্ষিণে ভারী বৃষ্টির দেখা নেই, উত্তরে ভারী বৃষ্টি থেকে রেহাই নেই! আবহাওয়ার বড় খবর

যার ফলে হাথরসের ঘটনায় কোনও রাজনৈতিক দল এই ধর্মগুরুকে দোষারোপ করছে না। হাথরসের অবৈধ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে। মৃত্যু হয়েছে ১২৩ জনের। এর মধ্যে রয়েছেন ১১৩ জন মহিলা, ৭ জন শিশু এবং ৩ জন পুরুষ। এখনও প্রায় ৩১ জন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। অথচ ওই অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে পালিয়েছিলেন ভোলে বাবা। যাঁর সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: IIT-কে রীতিমতো টক্কর, এই কলেজে পড়ে মিলল ৮৫ লক্ষ টাকা প্যাকেজের চাকরি! কীভাবে ভর্তি?

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় উত্তরপ্রদেশ সরকারের উপর কিছু মৃদু আক্রমণ বাদ দিয়ে বিরোধীরাও বেশি কিছু বলছেন না। আবার সরকারি পক্ষের অধিকাংশই ভোলে বাবার নাম এড়িয়ে যাচ্ছেন। এমনকী তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলেও একই গল্প। আর তাই সিনিয়র সাংবাদিক এবং স্থানীয়রা বলছেন যে, নারায়ণ সাকার বিশ্ব হরি রাজনৈতিক দলগুলির প্রিয় পাত্র। যার কারণ হল পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের দলিতদের উপর ভোলে বাবার প্রভাব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাথরসের এক সিনিয়র জার্নালিস্ট News 18-কে জানিয়েছেন যে, “ভোলে বাবার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে চান না। কয়েক দশক ধরে আচমকাই বেড়ে গিয়েছে বাবার জনপ্রিয়তা। সে ব্যুরোক্র্যাট হোন, ইনফ্লুয়েন্সার হোন, বিজনেস টাইকুন হোন অথবা রাজনৈতিক নেতাই হোন, সকলেই বাবার দর্শন করতে আসতেন। ভোলে বাবা নিজেই আসলে দলিত পরিবারের। তাই ভোলে বাবার বিরুদ্ধে একটা টুঁ শব্দ করলেই দলিত ভোট ব্যাঙ্কে ছাপ পড়বে।”

ওই সাংবাদিক আরও বলেন যে, “ভোটের সময় ভোলে বাবার আশ্রমে রীতিমতো লম্বা লাইন পড়ে যায় রাজনৈতিক নেতাদের। এমনকী যেসব রাজনৈতিক দলগুলি বাবার সমর্থন লাভ করে, তারা নিজেদের দলীয় পতাকার সঙ্গে প্রতীক হিসেবে বাবার পতাকাও বহন করে। এর ফলে ভোলে বাবার অনুগামীদের কাছে স্পষ্ট বার্তা চলে যায়।”

Hathras Stampede: অনুমতি মাত্র ৮০ হাজারের, সত্‍সঙ্গে যায় কত লক্ষ? হাথরস কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য! গ্রেফতার ৬, এখনও পলাতক ‘ভোলে বাবার মুখ্য সেবাদার’!

হাথরস: হাথরস কাণ্ডে ইতিমধ‍্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ঘটনার মূল অভিযুক্ত ভোলে বাবার ‘মুখ্য সেবাদার’ দেব প্রকাশ মধুকরকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। দেব প্রকাশ মধুকরের হদিশ পেতে ১ লক্ষ পুরষ্কারেরও ঘোষণা করেছে পুলিশ।

সৎসঙ্গে এসে পদপিষ্ট হয়ে হাথরসে ১২১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে শোরগোল। দেব প্রকাশ মধুকরের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ‍্য অভিযোগ দায়ের করা হবে জানিয়েছেন আইজি শলভ মাথুর।

আরও পড়ুন: ১ মিনিটের পারিশ্রমিক ১০ কোটি! রজনীকান্তও ফেল? টাকার অঙ্কে সব সুপারস্টারদের ছাপিয়ে গেলেন কোন অভিনেতা? নাম শুনলে বিশ্বাসই হবে না

তবে যার দিকে এই ঘটনার জন‍্য আঙুল উঠেছে সেই ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সুরজ পালের দাবি, এই বিপর্যয়ের পদপিষ্টের ঘটনার পিছনে দুষ্কৃতীরা রয়েছে৷ মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন অভিযুক্ত ধর্মগুরু৷

মর্মান্তিক এইঘটনায় মৃত ১২১ জনের মধ‍্যে বেশিরভাগই মহিলা। সূত্রের খবর অনুযায়ী এই ঘটনার সময় বেশিরভাগ জনকেই আয়োজকরা ক‍্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয়। সেইসঙ্গে সেবাদাররা এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। যারা ওই সময় ভিডিও করতে চেয়েছিলেন তাদেরকেও বাধা দেওয়া হয় বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।

আরও পড়ুন: প‍্যারা টিচার এবং চুক্তিভিত্তিক শিক্ষাকর্মীদের জন‍্য সুখবর! বিরাট অঙ্ক বাড়িয়ে দেওয়া এককালীন অবসর ভাতার পরিমাণ, কত লক্ষ টাকা পাবেন? জেনে নিন

ভোলে বাবার ‘চরণধুলি’ নিতে গিয়েই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, মাত্র ৮০,০০০ জনের অনুমতি থাকলেও ২.৫ লক্ষ জনগণকে অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকিয়ে দেয় সৎসঙ্গের আয়োজকরা। সিকান্দরাউ থানায় দায়ের করা এফআইআর-এ মধুকর এবং অন্যান্য সংগঠকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে সেই তালিকায় নেই ভোলে বাবার নাম। তাই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

Stampede Tragedies in India: কুম্ভ থেকে হাথরস, তীর্থস্থানে বারবার পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুমিছিল, দেখে নিন এক নজরে

উত্তর প্রদেশের হাথরসে মৃত্যুমিছিল। সৎসঙ্গে যোগ দিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১০০-র বেশি। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা এবং শিশু। সিকান্দারাউ থানার ইনচার্জ আশিস কুমার জানান, ফুলরাই গ্রামে ভোলেবাবার সৎসঙ্গ চলাকালীন পদপিষ্ট হয়ে ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত আরও অনেক।
উত্তর প্রদেশের হাথরসে মৃত্যুমিছিল। সৎসঙ্গে যোগ দিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১০০-র বেশি। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা এবং শিশু। সিকান্দারাউ থানার ইনচার্জ আশিস কুমার জানান, ফুলরাই গ্রামে ভোলেবাবার সৎসঙ্গ চলাকালীন পদপিষ্ট হয়ে ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত আরও অনেক।
হাথরসের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। রাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আহতদের অবিলম্বে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশে এমন দুর্ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও ধর্মস্থানে ভিড় বা অন্য কারণে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দেখে নেওয়া যাক এমনই ৬টি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
হাথরসের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। রাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আহতদের অবিলম্বে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশে এমন দুর্ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও ধর্মস্থানে ভিড় বা অন্য কারণে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দেখে নেওয়া যাক এমনই ৬টি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
১৯৫৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি: স্বাধীন ভারতের প্রথম কুম্ভ মেলা। ভিড় জমিয়েছেন সাধু সন্ন্যাসীরা। কিন্তু মেলা বদলে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়। মৌনি অমাবস্যার দিনে কুম্ভ মেলায় পদপিষ্ট হয়ে ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন ২০০ জন। কিছু রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ৩০০-র বেশি। ২০০ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

১৯৫৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি: স্বাধীন ভারতের প্রথম কুম্ভ মেলা। ভিড় জমিয়েছেন সাধু সন্ন্যাসীরা। কিন্তু মেলা বদলে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়। মৌনি অমাবস্যার দিনে কুম্ভ মেলায় পদপিষ্ট হয়ে ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন ২০০ জন। কিছু রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ৩০০-র বেশি। ২০০ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রয়াগের কুম্ভ মেলার ঘটনা
২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রয়াগের কুম্ভ মেলার ঘটনা
২০০৫ সালের ২৬ জানুয়ারি: মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার মান্ধারদেবী মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ৩৫০ ভক্তের। নারকেল তুলতে তুলতে সিঁড়ি দিয়ে উঠছিলেন একদল পুণ্যার্থী। সেই সময়ই উপর থেকে কিছু ভক্ত পা পিছলে পরে যান। তারপরই পরিস্থিতি বদলে যায় দুর্ঘটনায়।
২০০৫ সালের ২৬ জানুয়ারি: মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার মান্ধারদেবী মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ৩৫০ ভক্তের। নারকেল তুলতে তুলতে সিঁড়ি দিয়ে উঠছিলেন একদল পুণ্যার্থী। সেই সময়ই উপর থেকে কিছু ভক্ত পা পিছলে পরে যান। তারপরই পরিস্থিতি বদলে যায় দুর্ঘটনায়।
২০০৮ সালের ৩ অগাস্ট: প্রতি বছর হিমাচল প্রদেশের নয়না দেবী মন্দিরে ভিড় জমান ভক্তরা। সেদিনও মাতৃদেবীর দর্শন পেতে হাজার হাজার ভক্ত উপস্থিত হয়েছিলেন। কয়েক দিন ধরেই টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। আচমকাই ভূমিধ্বস নামে। হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ভক্তদের মধ্যে। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় প্রায় ১৫০ জনের।
২০০৮ সালের ৩ অগাস্ট: প্রতি বছর হিমাচল প্রদেশের নয়না দেবী মন্দিরে ভিড় জমান ভক্তরা। সেদিনও মাতৃদেবীর দর্শন পেতে হাজার হাজার ভক্ত উপস্থিত হয়েছিলেন। কয়েক দিন ধরেই টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। আচমকাই ভূমিধ্বস নামে। হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ভক্তদের মধ্যে। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় প্রায় ১৫০ জনের।
২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর: একইরকম ঘটনা ঘটে রাজস্থানের যোধপুরে চামুণ্ডা দেবীর মন্দিরে। শারদীয়া নবরাত্রির সময়। মন্দিরে হাজার হাজার ভক্তের ভিড়। আচমকাই বোমা বিস্ফোরণের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ভুলে পালাতে শুরু করেন ভক্তরা। হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে ২৫০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৫০ জন।
২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর: একইরকম ঘটনা ঘটে রাজস্থানের যোধপুরে চামুণ্ডা দেবীর মন্দিরে। শারদীয়া নবরাত্রির সময়। মন্দিরে হাজার হাজার ভক্তের ভিড়। আচমকাই বোমা বিস্ফোরণের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ভুলে পালাতে শুরু করেন ভক্তরা। হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে ২৫০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৫০ জন।
কেরলের পুলমেদুর ঘটনা
কেরলের পুলমেদুর ঘটনা

Hathras Case: হাথরসের ঘটনার পরই স্বঘোষিত বাবার আশ্রমে কী চলছে! ভয়ঙ্কর ঘটনা, শিউরে উঠছে দেশ

হাথরস: হাথরসের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। সকলের নজরে এখন স্বঘোষিত ধর্মগুরু ‘ভোলে বাবা’! সেই স্বঘোষিত বাবার মৈনপুরিতে রয়েছে প্রাসাদপম আশ্রম। সেই আশ্রমের বাইরে বসে গিয়েছে নিরাপত্তা। পুলিশের বক্তব্য, যাতে স্থানীয়রা আশ্রমে ভাঙচুর চালিয়ে আশ্রমিকদের ক্ষতি না করে, তাই এই নিরপত্তা বলে দাবি।

পুলিশ সূত্রে খবর, আশ্রমের ভিতরে বাস করেন শ’দুয়েক আশ্রমিক। শুধু বাসই করেন না, এই বাবার ভক্তরা দান করেন লাখ লাখ টাকাও। তার একটি তালিকা টাঙানো পেল্লাই দরজার বাইরে। যে তালিকায় দানের অর্থ কারও ৫০ হাজার, কারও বা ১ লাখ। কারও তার থেকেও বেশি। ২০০ জনের তালিকার ১৫০ জনের কাছাকাছিই মৈনপুরির বাসিন্দা।

আরও পড়ুন: সভা করতে এসে চুঁচুড়ার যুবককে ‘চিনে’ রেখেছিলেন মোদি, এবার বাড়িতে এল চিঠি! ঘটনা শুনলে চমকে উঠবেন

এছাড়াও তালিকায় রয়েছেন মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের দাতারাও। শুধু মৈনপুরিই নয়, অন্তত চার-পাঁচটি আরও আশ্রম রয়েথে এই বাবার। বুধবারও ‘ভোলে বাবা’র ভক্তরা আসছেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। দর্শন না পেলেও, ‘বাবা’ দোষী, সেটা মানতে নারাজ তাঁরা। তাঁদের কথায় উনি ‘বাবা’ও নন, উনি নাকি পরমাত্মা।

এদিকে, হাথরসে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় আরও বাড়ল মৃতের সংখ্যা। শেষ পাওয়া খবর, মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২১। এর মধ্যে এসডিএমের তরফে ডিএমকে হাথরসের ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই ভোলে বাবা সৎসঙ্গ শেষ করে যখন NH ৯১ ধরে মৈনপুরির দিকে রওনা হন, তখন ভক্তরা রাস্তায় বেরিয়ে আসতে চান, স্বঘোষিত বাবার পায়ের ধুলো নেওয়ার জন্য।

অনেকেই বাবা-র চলে যাওয়া রাস্তায় ঝুঁকে পড়ে মাথায় ধুলো লাগাচ্ছিলেন। কেউ আবার ঝাঁপান বাবা-কে স্পর্শ করতে। বাবা পর্যন্ত যাতে ভিড় না পৌঁছতে পারে, তার জন্য অগণিত মানুষকে রাস্তায় আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন বাবা-র পার্ষদরা। যার জেরে বহু লোক রাস্তা থেকে পাশের ক্যানালে পড়ে যান। পদপিষ্ট হন বহু।

Hathras Stampede:৩ বছরের নিথর শিশুকে কোলে নিয়ে স্ত্রীর খোঁজ, মায়ের সঙ্গে ছেলের শেষ দেখা মর্গে…মৃত্যুমিছিলের হাথরসে শুধুই হাহাকার

হাথরস: উত্তরপ্রদেশের হাথরসে এক সৎসঙ্গে যোগ দিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ। সেই ঘটনার পর থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের হাহাকার, স্বজন হারানোর কান্না-আর্তনাদ। এখনও বহু মানুষ হয়তো খোঁজ পাননি তাঁদের প্রিয়জনের। শোকস্তব্ধ মুহূর্তের বেশ কিছু দৃশ্য আপাতত ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

উত্তরপ্রদেশের হাথরস জেলার ওই ধর্মীয় সভায় যোগ দিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১২১ জন মানুষ। এমনটাই জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। হাথরসের সিকান্দ্রারাউ এলাকার ফুলরাই গ্রামে স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবার আয়োজিত সৎসঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। মঙ্গলবার দুপুর ৩টে ৩০ মিনিট নাগাদ ভোলে বাবা যখন অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে গিয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানের শেষে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে ভক্তরা যখন বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁরা একে অপরের উপর পড়ে যান। এমনকী কেউ কেউ তো নর্দমাতেও পড়ে যান। যে সময় এই দুর্ঘটনা ঘটছিল, ঠিক তখন অন্য দিকে ছিলেন ফারুখাবাদের বাসিন্দা রাম নরেশ। তিনি বলেন যে, প্রত্যেকেই ভোলে বাবার গাড়ির দিকে ছুটেছিলেন এবং তাঁর চরণস্পর্শ করতে চাইছিলেন ভক্তরা।

রাম নরেশের কথায়, “যখন এই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটছিল, তখন আমি অন্য দিকে ছিলাম। আসলে সেখানকার জমি পুরোপুরি সমতল ছিল না। আর সেখান দিকেই সকলে বাবার গাড়ির দিকে ছুটেছিলেন। প্রত্যেকেই বাবার চরণস্পর্শ করে তাঁর আশীর্বাদ পেতে চাইছিলেন।”

আরও পড়ুন : বর্ষায় ফুচকা খাচ্ছেন? সর্বনাশ! নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছেন না তো! জানুন

ওই ঘটনার আরও একটি হৃদয়বিদারক ছবি সামনে এসেছে। যেখানে দেখা যায়, মৃত তিন বছরের একরত্তি সন্তানকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছেন এক বাবা। তাঁর কথায়, “আমার সন্তান তাঁর মায়ের সঙ্গে সৎসঙ্গে যোগ দিয়েছিল। পদপিষ্ট হওয়ার খবর পেয়েই আমি সেখানে গিয়েছিলাম।’’  তিনি আরও বলেন, শিশুর মায়ের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কখনওই ভাবতে পারিনি যে, নিজের পুত্রের মৃতদেহ কোলে নিয়ে আমায় মর্গে যেতে হবে। আমি শুধু ওকে ওর মায়ের সঙ্গে সৎসঙ্গে পাঠিয়েছিলাম।”

অন্যদিকে আবার পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় নিজেদের মাকে হারিয়েছে দুই কিশোর। সৎসঙ্গের একটি ভাইরাল ভিডিও তারা পেয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপে। তাদের বক্তব্য, “আমাদের কাছে একটি ভিডিও এসেছিল। তাতে আমরা দেখেছি যে, আমাদের মা মাটিতে পড়ে রয়েছেন। এরপরেই আমরা সৎসঙ্গের দিকে ছুটে গিয়েছিলাম। সেখানে কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পরে মর্গে গিয়ে আমরা মায়ের খোঁজ পাই।”

মথুরার বাসিন্দা সোহনলাল বলেন, তিনি নিজের গোটা পরিবারের সঙ্গে সৎসঙ্গে ছিলেন। তবে তাঁর একজন আত্মীয়া একা ছিলেন। যিনি প্রাণ হারিয়েছেন। তবে ওই মহিলার সন্তানেরা সোহনলালের পরিবারের সঙ্গে থাকায় তারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। আর এক মহিলা জানালেন, তিনি নিজের জামাই এবং আর এক আত্মীয়াকে হারিয়েছেন। এদিকে ঘটনায় জখম হয়ে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছায়া নামে এক নাবালিকা। জানিয়েছে যে, মা এবং পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে সৎসঙ্গে যোগ দিয়েছিল সে। রাস্তায় ছিল মারাত্মক ভিড়। এরপরেই কিছু নিয়ে একটা হাতাহাতি হয়। শেষে ঘটে যায় পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা।

আবার হাসপাতালে ভর্তি প্রীতি নামে এক মহিলাও। তিনি বলেন যে, ওই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তাঁর শাশুড়ি এবং এক আত্মীয়া। আর এক প্রত্যক্ষদর্শী পারভানা দেবী বলেন, বাবা অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে বেরনোর সময় যে ভিড় তাঁর পিছনে ছুটছিল, সেই ভিড়ের চাপে পড়ে তিনি আহত হয়েছেন।

এদিকে স্বজনদের ছবি নিয়েও পাগলের মতো খোঁজ করে চলেছেন কিছু মানুষ। এক ব্যক্তিকে তাঁর বোন এবং ভাগ্নের খোঁজ করতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, “সারা রাত ধরে ওদের খুঁজলাম। কিন্তু এখনও কোনও খোঁজ পাইনি।”

এহেন গাফিলতির জন্য পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। ওই সময় দায়িত্বে থাকা সমস্ত পুলিশ আধিকারিকদের বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন। অনেকেরই বক্তব্য, পুলিশ পরিস্থিতি ভাল ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। সৎসঙ্গে যোগ দেওয়া এক ভক্ত আইএএনএস-এর কাছে জানান যে, “আমরা চাই মুখ্যমন্ত্রী যোগী এই দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকদের বরখাস্ত করুন। এমনকী আমি জেলাশাসকের কাছে প্রশ্ন করেছিলাম যে, যাঁদের প্রাণ গেল, তাঁদের সঙ্গে কী ঘটবে? পুলিশ অফিসাররা আমায় সরিয়ে দিয়েছিলেন। এমনকী জেলাশাসক আমায় বাড়ি ফিরে যেতে বলেছিলেন।”

সৎসঙ্গ আয়োজক কমিটির সদস্য মহেশ চন্দ্রের অভিযোগ, প্রশাসনের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটে গিয়েছে। মঙ্গলবার লোকসভায় বক্তব্য রাখার সময় এই বিষয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পদপিষ্ট হয়ে মৃতদের পরিবারের উদ্দেশে সমবেদনাও জানিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও এই ঘটনায় রীতিমতো হতবাক। দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর নির্দেশও দিয়েছেন আধিকারিকদের। অন্যদিকে আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজনাথ সিংও গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং দুর্গতদের পরিবারকে সমস্ত রকম সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে।

সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়য়েছে যে, সৎসঙ্গের আয়োজকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য এডিজি আগ্রা এবং আলিগড় ডিভিশনাল কমিশনারকে নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে যে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।