Tag Archives: passenger security

Railway Security: ট্রেন দুর্ঘটনার স্মৃতি মুছে ফেলে, ইয়ার্ড আধুনিকীকরণের জোর রাঙাপানি জুড়ে 

রেলওয়ে সুরক্ষা ও ট্রেন পরিচালন ক্ষেত্রে কর্মদক্ষতা আরও উন্নত করতে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে যে প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে তার অংশ হিসেবে সমগ্র নেটওয়ার্কে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পরিকাঠামো, সুরক্ষা এবং স্টেকহোল্ডারদের প্রদান করা পরিষেবা উন্নত করার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টার সাথে সঙ্গতি রেখে এই পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে।এমন ধরনের উদ্যোগগুলির সাথে সঙ্গতি রেখে ২০২৪-এর সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে কাটিহার ডিভিশনের অন্তর্গত রাঙাপানি স্টেশনে প্রধান প্রধান উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এই কাজগুলির মধ্যে ট্র্যাক পরিকাঠামো এবং সিগনালিং ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের পাশাপাশি নুমলিগড় রিফাইনারি (এনআরএল) সাইডিঙের উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে এই সাইডিংটি পণ্যবাহী ট্রেনে পেট্রোলিয়াম অয়েল এবং লুব্রিকেন্টস (পিওএল) লোডিং পরিচালনের জন্য একটি আবশ্যকীয় প্রাইভেট পণ্য টার্মিনাল।এই অর্থবর্ষের আগস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত ১৫৮টি রেক লোডিং-এর মাধ্যমে রাঙাপানির এনআরএল সাইডিং উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জন্য আনুমানিক ৪৭.৪০ কোটি টাকা রাজস্ব উপার্জন করতে সক্ষম হয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৭৬.৪১ শতাংশ (আনুমানিক) বৃদ্ধি।

অতিরিক্তভাবে একই সময়ের মধ্যে টার্মিনালটিতে ০৫টি রেক আনলোড করা হয়েছে। এই সাইডিংটির কর্মক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে একটি অতিরিক্ত লোডিং লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে এবং রিসেপশন ও পণ্যবাহী ট্রেনের ডিসপ্যাচ সহজ করতে লেআউট অ্যাডজাস্টমেন্ট করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণভাবে পরিচালনামূলক নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করার জন্য ইয়ার্ডটির সমস্ত ম্যানুয়াল শান্টিং লুপ্ত করে শান্ট সিগনালের ব্যবস্থা করা হবে।

আরও পড়ুন :  Friday, the 13 th! কেন ১৩ তারিখে শুক্রবার পড়লেই চরম অশুভ ও অপয়া? শুধুই কুসংস্কার? জানুন আসল কারণ

একইভাবে, উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে রাঙাপানি স্টেশন ইয়ার্ডে একাধিক উন্নয়ন বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন করে স্থাপিত ট্র্যাক-সহ ৫ ও ৬ নং. লাইনের সাথে চারটি নতুন পয়েন্টস চালু করার দ্বারা পয়েন্টস ও ক্রসিং ব্যবস্থার পরিবর্তন করা। এই বৃদ্ধির ফলে ৫, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১ এবং ১২ নং. লাইন থেকে সিগনালের মাধ্যমে ট্রেনের প্রত্যক্ষ রিসেপশন ও ডিসপ্যাচের সুবিধা হবে, ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে সুরক্ষা ও কর্মক্ষমতার উন্নতি হবে, রাঙাপাড়া ও নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন ডিটেনশন হ্রাস পাবে এবং উভয় টার্মিনালে পণ্যবাহী ট্রাফিক বৃদ্ধি পাবে।

শুধুমাত্র বিগত তিন মাসেই রাঙাপানি টার্মিনালটি ছয়টি রেক লোড করেছে, উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জন্য আনুমানিক ৩৮.২ লক্ষ টাকা রাজস্ব তৈরি করেছে। এছাড়াও, ট্রেন পরিচালনার উন্নতির জন্য রাঙাপানি স্টেশনে কম্পিউটার-বেসড ভিডিইউ (ভিজিউয়াল ডিসপ্লে ইউনিট) প্যানেলের সাথে একটি আধুনিক ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে।  ক্রমাগত উন্নয়নের জন্য উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা সুরক্ষার মান ও পরিচালনামূলক কর্মদক্ষতার ক্ষেত্রে উৎকৃষ্টতা নিশ্চিত করে এবং দেশ ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চল উভয়ের জন্য পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিষেবার সুবিধা প্রদান করে।

Indian Railways: পুজোয় বেড়াতে যাচ্ছেন? যাত্রীদের সুরক্ষায় আরও জোর আনতে বিশেষ পদক্ষেপ! জানুন

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে নিউ জলপাইগুড়ির রোলিং ইন এবং রোলিং আউট পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রথমবারের জন্য একটি প্রোটোটাইপ অটোমেটিক ট্রেন এগজামিনেশন সিস্টেম (এটিইএস) স্থাপন করা হয়েছে। এটিইএস হল একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স ভিত্তিক প্রযুক্তি, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে রোলিং স্টকের ছবি ও ভিডিওর মতো ভিজুয়াল তথ্যের ক্যাপচারিং, প্রক্রিয়াকরণ ও বিশ্লেষণ করা।

এটিইএস ইউনিটে ৪টি ক্যামেরা এবং ৪টি সেন্সর রয়েছে, যেগুলি রেলওয়ে ট্র্যাকের দু’ পাশে স্থাপন করা হয়। এই রেলওয়ে ট্র্যাকের মধ্য দিয়ে ট্রেন অতিক্রম করার সঙ্গে সমস্ত ক্যামেরা ও সেন্সর সক্রিয় হয়ে পড়ে এবং ট্রেনটির প্রত্যেকটি গতিবিধি নিরীক্ষণ করে। এভাবে ট্রেনের অ্যাক্সেল বক্স বিয়ারিঙের পাশাপাশি চাকার তাপমাত্রা সেন্সরের মাধ্যমে রেকর্ড করা হয়। এরপর, তাপমাত্রা নিজের সীমা অতিক্রম করলে সঙ্গে সঙ্গে সিস্টেমের দ্বারা সতর্কবার্তা প্রেরণ হয়। যে কোনও ত্রুটি আগে থেকে চিহ্নিত করতে পারলে সময় অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির সুবিধা হয়, ফলে ট্রেনের সুরক্ষা উন্নত হয় এবং যে কোনও অপ্রত্যাশিত ঘটনার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

এটিইএস ওয়াগনের কোচ নম্বরও চিহ্নিত করতে পারে, যা পরবর্তী সময়ে ট্রেনের সময়সূচি ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। কোচ নম্বর চিহ্নিতকরণ অ্যাক্সেল নম্বরের সাথে সিঙ্ক করা যেতে পারে, যার ফলে আরও বেশি বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। ট্রেনের দরজা বন্ধ রয়েছে, না খোলা রয়েছে অথবা সেগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এটিইএস পরীক্ষা করতে পারে। রিয়াল-টাইম ভিত্তিক দরজার অবস্থা পরীক্ষা করে সিস্টেমটি সম্ভাব্য বিপদ ও প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে ট্রেন চালক ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীদের সতর্ক করে দিতে পারে, সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে এবং পরিষেবার বাধা প্রতিরোধ করতে পারে।

আরও পড়ুন : ভাতের পাতে কয়েক টুকরো কাঁচকলা! ব্লাড প্রেশার সুগার কোলেস্টেরল বেবাক সাফ! সুস্থ হার্ট, মেদ গলে জল!

এটিইএস বর্তমানে পর্যবেক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে এবং এর কর্মপদ্ধতিতে ক্রমাগতভাবে আরও সংশোধন করা হবে।উচ্চ নির্ভরযোগ্যতা ও কম খরচের পাশাপাশি ট্রেন পরিচালনের ক্ষেত্রে সুরক্ষা উন্নত করতে এই রোলিং স্টক হেল্থ মনিটরটি লাভজনক হবে। একবার সম্পূর্ণভাবে কর্মক্ষম হয়ে উঠলে এই সিস্টেমটি ট্রেনের সম্ভাব্য বিপদ বহু পরিমাণে হ্রাস করবে।