পালস রেট যাকে আপনার হার্ট রেটও বলা হয়, হল ব্যক্তির প্রতি মিনিটে হৃদস্পন্দনের সংখ্যা (BPM)। বয়স ভেদে ব্যক্তির স্বাভাবিক পালস রেট ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।সাধারণত শরীরে কোনও সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তার দেখাতে গেলেই সবচেয়ে আগে পালস রেট দেখেন চিকিৎসকরা। হাতের কব্জির কাছে নাড়ি ধরে সেই রেট দেখে তবে শুরু হয় চিকিৎসা। জানেন কী পালস রেট এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পালস কত থাকা উচিত?পালস রেট কী? প্রত্যেক মিনিটে ব্যক্তির হার্ট কত বার বিট করছে, সেটাই মাপা হয় পালস রেটের মাধ্যমে। পালস রেট প্রত্যেকের আলাদা হয়। একজন মানুষের বিশ্রামরত অবস্থায় ও শারীরচর্চার পরেও পালস রেট আলাদা হয়ে থাকে।
শারীরিক কসরতের পরে বা খুব বেশি কাজকর্মের পরে পালস বেড়ে যেতে পারে। সেই রেট দেখে আতঙ্কিত হবেন না। শরীরকে আগে ঠান্ডা হতে দিন। স্বাভাবিক অবস্থায় এসে পালস মাপুন। একইসঙ্গে কোনও শারীরিক সমস্যা থাকলে বা হৃদযন্ত্র জনিত সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগলে অবশ্যই রোজ পালসে নজর রাখা উচিত।উডল্যান্ডস নার্সিং হোমের একজন সিনিয়র চিকিত্সক ডাঃ পঞ্চম মৌলিক একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “ক্ষুধার্ত হলে, সঠিক যত্ন বা মনোযোগের অভাব হলে, ভাইরাল সংক্রমণের কারণে, উদ্বেগ বা রাগ হলে নাড়ির হার বাড়তে পারে।” তিনি আরও বলেন, “বিশ্রামের সময় পালস রেট ১০ শতাংশ কমে যায়”। উচ্চ রক্তচাপ, বিষন্নতা এবং সম্পূর্ণ হার্ট ব্লকের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত কিছু ওষুধও পালসের হার কমাতে পারে। এই কারণে, অনিয়মিত নাড়ির হার সনাক্ত করার পরে, চিকিৎসকেরা প্রায়ই রোগীদের ইলেক্ট্রো-কার্ডিওগ্রাম (ইসিজি) করার পরামর্শ দেন।পালস রেট শরীরের কোন কোন অংশ থেকে বোঝা যায়? কব্জি কনুইয়ের ভিতরে ঘাড়ের পাশে পায়ের উপরেআমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, একজন সাধারণ প্রাপ্তবয়স্ক বিশ্রামে থাকা ব্যক্তির হৃদস্পন্দন প্রতি মিনিটে ৬০ (BPM) এবং ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিদের জন্য ১০০ BPM-র মধ্যে থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১২০ BPM হলে পালস রেট উচ্চ বলে বিবেচিত হয়।বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিক পালস হার কত? বয়স পরিসীমা পালস রেট/হার্ট রেট (প্রতি মিনিটে স্পন্দন, বা BPM) নবজাতক ১০০-১৬০ ০-৫ মাস ৯০-১৫০ ৬-১২ মাস ৮০-১৪০ ১-৩ বছর ৮০-১৩০৩-৫ বছর ৮০-১২০ ৬-১০ বছর ৭০-১১০ ১১-১৪ বছর ৬০-১০৫ ১৫ বছর এবং তার বেশি বয়সি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হৃদস্পন্দন ৬০-১০০দ্রুত হৃদস্পন্দনের ক্ষেত্রে সাধারণ দৈনন্দিন জীবনের কিছু কারণ থাকতে পারে যা সবসময় উদ্বেগের কারণ নাও হতে পারে তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কারণগুলি হল :জোরালো ব্যায়াম মানসিক চাপ ভয় উদ্বেগ বা প্যানিক অ্যাটাক হাইপোগ্লাইসেমিয়া হাইপারটেনশন জ্বররক্তশূন্যতা জলশূন্যতা গর্ভাবস্থা ঋতুস্রাব মাত্রাতিরিক্ত মদ, ক্যাফেইন, বা নিকোটিন সেবন বেআইনি ওষুধ যেমন এক্সট্যাসি, মেথামফেটামিন বা কোকেনবর্ধিত হৃদস্পন্দন কমাতে এই পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করুন: হঠাৎ হৃদস্পন্দন বেড়ে গেলে, এই পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করলে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক করা যায়। -আপনার চারপাশের পরিবেশ যেন শান্ত এবং আরামদায়ক হয় তা নিশ্চিত করুন। উচ্চ তাপমাত্রার কারণে রক্ত সঞ্চালন বাড়তে পারে, যার ফলে হৃদস্পন্দন আরও বাড়তে পারে।-আপনি যদি কোথাও বসে থাকেন তখন হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় তাহলে ধীরে ধীরে উঠুন এবং হঠাৎ করে উঠা দাঁড়ানো এড়িয়ে চলুন কারণ হঠাৎ করে উঠলে হার্টবিট আরও বেড়ে যেতে পারে।
