বীরভূম: তারাপীঠে আজ মা তারার আবির্ভাব দিবস। আবির্ভাব দিবসে তারাপীঠে বিশেষ পুজোর আয়োজন। সকাল থেকে মন্দিরে ভক্তদের ভিড়। আবির্ভাব দিবসে প্রতিমার নতুন সাজ। রাতে তারাপীঠে মহাভোগ।
তারাপীঠে আজ ভক্ত সমাগম দেখবার মতো ৷ মন্দিরে তিল ধারণের জায়গা নেই ৷ মানুষের ভিড়ে উপচে পড়ছে মন্দির চত্বর ৷ কারণ আজ তারা মায়ের আবির্ভাব তিথি ৷ মা দুর্গা বিদায় নেওয়ার পর যখন আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে বিষাদের সুরে, ঠিক এমন সময়েই তারাপীঠে এই তিথির উদযাপন শুরু হয় ৷ কথিত আছে, আশ্বিন মাসের শুক্লা চতুর্দশীর দিন মা তারা আবির্ভূত হয়েছিলেন। সেই উপলক্ষে ভক্তদের ঢল নামল তারাপীঠে। এদিনেই গর্ভগৃহ থেকে দেবীর বিগ্রহ বাইরে আনা হয়। মন্দিরের বিরাম মঞ্চে পশ্চিম দিকে মুখ করে বসানো হয় তারা মাকে।
সারাদিন মন্দিরে থাকে পুণ্যার্থীদের ভিড়। সন্ধের আরতির পরে ফের মা তারাকে মূল মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন মধ্যাহ্ন ভোগ দেওয়া হয় না দেবীকে। বদলে দেওয়া হয় ফল, মিষ্টি। রাতে মহাভোগের আয়োজন করা হয়। লোক মুখে প্রচলিত আছে, জয় দত্ত নামে এক বণিক নৌকা নিয়ে দ্বারকা নদী পার হচ্ছিলেন। সেই সময় তারাপীঠের কাছে নৌকা থামিয়েছিলেন। নোঙর করা নৌকায় বিষধর সাপের ছোবলে মৃত্যু হয় জয় দত্তের ছেলের। এদিকে জয় দত্তের লোকজন তখন অন্যদিকে খাবারের তোড়জোড় করছিলেন। তারা একটি শোলমাছ কেটে পুকুরে ধুতে যান। পুকুরের জলে মাছ ধুতেই সেই মাছ নাকি জ্যান্ত হয়ে উঠেছিল। অলৌকিক এই ঘটনার কথা তারা মালিক জয় দত্তকে জানালে তিনি মৃত ছেলেকে ওই পুকুরে নিয়ে যান। সেই পুকুরের জল গায়ে ঢালতেই মৃত ছেলে বেঁচে ওঠে। এই ঘটনা লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে ভক্তদের ভিড় জমতে থাকে। সেই পুকুর এখন তারাপীঠের জীবিত কুণ্ড নামে বিখ্যাত। সেই রাতেই জয় দত্তকে স্বপ্নে দেখা দেন দেবী। ওই দিন ছিল শুক্লা চতুর্দশী। স্বপ্নাদেশ পেয়ে তারা মায়ের পুজো শুরু করেন ওই বণিক। সেই থেকে তারাপীঠে শুক্লা চতুর্দশীর দিন আবির্ভাব দিবস পালন হয়ে আসছে।