এক বছর আগে এই ইউএস ওপেনের ফাইনালে হেরেই ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। নিজের আবেগ সামলাতে না পেরে ভেঙেছিলেন র্যাকেট। তারপর শুধু কঠিন পরিশ্রম। অবশেষে এক বছর পর হল ভাগ্যবদল। সেই ইউএস ওপেন জিতে নিজের স্বপ্নপূরণ করলেন আরিয়াবা সাবালেঙ্কা।
এবারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে আরিয়ানা সাবালেঙ্কার প্রতিপক্ষ ছিল জেসিকা পেগুলা। ফাইনালে লড়াই হলেও শেষ পর্যন্ত স্ট্রেট সেটে ম্যাচ জিততে কোনও অসুবিধা হয়নি বেলারুশের টেনিস সুন্দরীর। জেসিকার ছিল এটি কোনও প্রথম গ্র্যান্ডস্ল্যাম ফাইনাল। ফলে সাবালেঙ্কার অভিজ্ঞতার কাছে লড়াইয়ে পেরে ওঠেননি তিনি।
প্রথম সেটের শুরু থেকেই ছন্দে ছিলেন সাবালেঙ্কা। গতবারের কোনও ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে চাননি এবার। ঠান্ডা মাথায় প্রথম সেট ৭-৫ ব্যবধানে জেতেন সাবালেঙ্কা। দ্বিতীয় সেটে সেই একই পুনরাবৃত্তি। শেষ পর্যন্ত ৭-৫, ৭-৫ ব্যবধানে স্ট্রেট সেটে ম্যাচ জিতে ট্রফি পকেটে পোরেন বেলারুশের তারকা।
এটি কেরিয়ারের তৃতীয় গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয় সাবালেঙ্কার। ইউএস ওপেন জয়ের পর তিনি বলেন,আমি বাকরুদ্ধ, কখনও আশা ছাড়িনি। নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য বহু আত্মত্যাগ করেছি। সব সময় স্বপ্ন দেখতাম এই সুন্দর ট্রফিটা জেতার। অবশেষে নিজের স্বপ্নপূরণ করতে পেরে আমি খুশি ও গর্বিত।”
ইউএস ওপেনে একের পর এক অঘটন। বিদায় নিলেন চ্যাম্পিয়নশিপের অন্যতম প্রধান দুই দাবিদার। শুক্রবার স্ট্রেট সেটে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছিলেন কার্লোস আলকারাজ। এবার তৃতীয় রাউন্ডে আরও এক নক্ষত্র পতন। অ্যালেক্সি পপিরিনের কাছে এবারের ইউএস ওপেন থেকে ছিটকে গেলেন নোভাক জোকোভিচ।
অনেক আশা নিয়ে ইউএস ওপেনে নেমেছিলেন জোকোভিচ। সামনে ছিল ২৫টি গ্র্যান্ডস্ল্যান জয়ের মাইলস্টোন স্পর্শ করার হাতছানি। একইসঙ্গে সুযোগ ছিল কেরিয়ারের ১০০ খেতাব জয়ের। প্রথম দুটি রাউন্ডে জিতলেও তৃতীয় রাউন্ডে একেবারেই চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি জোকারকে। ১৪টি ডাবল ফল্ট করে নিজের কবর নিজেই খোড়েন সার্বিয়ান তারকা।
এদিন অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্সি পপিরিনের বিরুদ্ধে প্রথম দুই সেটে সেভাবে লড়াই দিতে পারেননি জোকোভিচ। প্রথম দুটি সেট হেরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল ২৪টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের মালিকের। তৃতীয় সেটে ঘুড়ে দাঁড়িয়ে জেতে জোকোভিচ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চতুর্থ সেট ফের জিতে ম্যাচ পকেটে পুরে নেন অজি টেনিস তারকা।
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং উইম্বলডনে নোভাক জোকোভিচের বিরুদ্ধে হেরে গিয়েছিলেন অ্যালেক্সি পপিরিন। ইউএস ওপেনে জোকারকে হারিয়ে মধুর প্রতিশোদ নিলেন পপিরিন। অপরদিকে, ২০১৭ সালের পর এই প্রথন কোনও বছরে একটি গ্র্যান্ডস্ল্যান জেতা হল না জোকোভিচের। যদিও অলিম্পিক্সে গোল্ড জিতেছেন সার্বিয়ান তারকা।
ইউএস ওপেনের সবথেকে বড় অঘটন ঘটে গেল শুক্রবার সকালে। প্রতিযোগিতার তৃতীয় বাছাই তথা চ্যাম্পিয়নশিপের অন্যতম দাবিদার কার্লোস আলকারাজ বিদায় নিলেন দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই। তাও আবার স্ট্রেট সেটে হারলেন প্রতিযোগিতার অবাছাই নেদারল্যান্ডসের বোটিক ভ্যান ডি জ্যান্ডসচাল্পের কাছে।
ইউএস ওপেনে চলতি মরশুমের তৃতীয় গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন আলকারাজ। এর আগে এই বছর ফরাসী ওপেন ও উইম্বলডন জিতেছিলেন আলকারাজ। প্যারিস অলিম্পিক্সে পেয়েছেন সিলভার। কিন্তু ইউএস ওপেনে এসে হল ছন্দপতন। স্প্যানিশ তারকার কাছে অধরাই থেকে গেল এক মরশুমে ৩টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়।
এদিন ম্যাচের প্রথম সেটে ডাচ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনও লড়াই দিতে পারেননি আলকারাজ। একতরফাভাবে প্রথম সেট ১-৬ ব্যবধানে জেতেন বোটিক। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেটে ঘুড়ে দাঁড়িয়ে লড়াই দেওয়ার চেষ্টা করেন আলকারাজ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পরের দুটি সেট ৭-৫, ৬-৪ ব্যবধানে হেরে যান ও বিদায় নেন ইউএস ওপেন থেকে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৩ বছর কোনও গ্র্যান্ডস্ল্যামের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিলেন কার্লোস আলকারাজ। এর আগে ২০২১ সালের উইম্বলডনে দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে গিয়েছিলেন স্প্যানিস তারকা। তরপর ফের আবার এবারের ইউএস ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় ঘণ্টা বেজে গেল আলকারাজের।
পুরো ম্যাচ না খেলেই ইউএস ওপেন ২০২৪-এর তৃতীয় রাউন্ডে পৌছে গেলেন নোভাক জোকোভিচ। চোটের কারণে ম্যাচের তৃতীয় সেটে নাম প্রত্যাহার করে নেন প্রতিপক্ষ। যদিও প্রথম দুই সেট জিতেই ছিলেন জোকোভিচ। তৃতীয় সেটে প্রতিপক্ষ ওয়াকওভার দেওয়ায় এক প্রকার সহজেই পরের রাউন্ডে পৌছে গেলেন সার্বিয়ান তারকা।
ইউএস ওপেনেপ দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে নোভাক জোকোভিচের প্রতিপক্ষ ছিলেন তারই দেশের অপর খেলোয়ার লাসলো জেরে। স্বদেশীয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রথম দুটি সেট জিততে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় জোকোভিচ। যদিও নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান জোকার। আর জোকোভিচের অভিজ্ঞতার কাছেই প্রথম ২টি সেটই ৬-৪ ব্যবধানে হারেন জেরে।
তৃতীয় সেটের লড়াইও শুরু করেছিলেন জোকোভিচ ও জেরে। ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টাও করছিলেন জেরে। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াল চোট। জোকোভিচ যখন তৃতীয় সেটে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে তখন চোট পান জেরে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরও খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি। বাধ্যে জোকোভিচকে ওয়াকওভার দিয়ে দেন জেরে। যার ফলে তৃতীয় রাউন্ডে পৌছে যান জোকোভিচ।