একসময় গোটা শহর জুড়ে যাতায়াতের অন‍্যতম মাধ‍্যম ছিল এই যান। তবে বর্তমানে ট্রাম লাইনের সংখ‍্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে।

Tram Line in Kolkata: খানা-খন্দে ভরা ট্রাম লাইনে যেন ‘মরণফাঁদ’! বাড়ছে ঝুঁকি-দুর্ঘটনা, কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

কলকাতা: দিন দিন কলকাতা রাস্তায় যানজটের সমস্যা বেড়ে যাওয়া দু’কামরার ট্রাম চালানো নিয়ে আপত্তি জানায় কলকাতা পুলিশ। শহরের যানজট কমানোর জন্য তুলে দেওয়া হয় বেশ কিছু ট্রামের রুট। আবার কিছু ট্রামের রুট বন্ধ হয়েছে উড়ালপুল নির্মাণের স্বার্থে, আবার কোনও ট্রাম রুট উঠে গিয়েছে মেট্রো রেলের নির্মাণকার্যের জন্য। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া এমন কিছু রুট রয়েছে, যেখানে এখনও পরিষেবা শুরু করার মতো পরিকাঠামো রয়েছে। তাই পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ট্রাম পরিষেবা চালু করার পক্ষপাতী ছিল পরিবহণ দফতরের একাংশ।

কলকাতা শহরে ট্রাম পরিষেবার বর্তমান অবস্থা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালকাটা’ নামে একটি সংগঠন। রাজ্য সরকার কি কলকাতা শহর থেকে ট্রাম তুলে দিতে চাইছে? ট্রাম নিয়ে সরকার কী নীতি নিয়েছে? এই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে এ বার বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বর্তমানে মাত্র তিনটি রুটে চলছে ট্রাম পরিষেবা। বালিগঞ্জ–টালিগঞ্জ, ধর্মতলা-গড়িয়াহাট ও ধর্মতলা-শ্যামবাজার রুটের মধ্যেই চলাচল করে হাতেগোনা কয়েকটি ট্রাম।

আরও পড়ুন-   মাত্র ৭ দিনেই জব্দ! ধমনী থেকে নিংড়ে বার করবে কোলেস্টেরল, শিরায় জমে থাকা ময়লা হবে সাফ, রোজ পাতে রাখুন এই খাবার

আগামী দিনে আরও দুয়েকটি রুটে ট্রাম চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধর্মতলা-খিদিরপুর রুট।এর আগে কলকাতা পুলিশের তরফে চিঠিতে জানানো হয়েছে, মূল রাস্তায় এবং ব্রিজের ওপর ট্রাম লাইন থাকার কারণে গাড়ির গতি কমছে, দুর্ঘটনা বাড়ছে এবং যানজট দেখা দিচ্ছে। চিঠিতে যে সমস্ত এলাকায় ট্রাম লাইন তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেগুলি হল শিয়ালদহ ফ্লাইওভার, এপিসি রোড, এমজি রোড, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট,সিআইটি রোড, মানিকতলা মেন রোড প্রভৃতি জায়গায়।

আরও পড়ুন-  ভয়ঙ্কর তোলপাড় পরিবর্তন! সূর্য-মঙ্গল-বুধ-শুক্রের বিরাট চালে ভাগ্যের খেলা শুরু…! কারা ভাগ্যবান, কাদের লোকসান? আপনার কপালে কী?

খন্দে ভরা ট্রামলাইন, চলছে ঝুঁকির যাতায়াত শিয়ালদহ উড়ালপুল ও সূর্যসেন স্ট্রিটে ট্রাম লাইনের বেহাল দশা। এর জন্য বেশ কয়েক বার ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটে গিয়েছে। এতে গাড়ি চলাচলেও অসুবিধা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে এই বেহাল অবস্থার জন্য ক্ষোভ বাড়ছে নিত্য যাত্রীদের। অভিযোগ স্বীকারও করে নিয়েছেন কলকাতা ট্রাম কোম্পানির (সিটিসি) বেশ কয়েক জন কর্তা। ট্রাম লাইনের পাশের পিচ উঠে গিয়েছে। বেরিয়ে পড়েছে নীচে থাকা পাথর, ইট। লাইনের দু’পাশে কয়েক ফুটের গর্ত হয়ে গিয়েছে। জমে রয়েছে জলও। এই ধরনের রাস্তায় মোটরবাইক ও অটো চালানো খুবই বিপজ্জনক বলে জানালেন নিত্যযাত্রীরা।

গর্তে চাকা পড়লে যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাইক ও স্কুটার চালকরা ৷ তাঁদের বক্তব্য, ট্রাম যদি চলত, তাহলেও না হয় ঠিক ছিল ৷ কিন্তু, যে সমস্ত রুটে ট্রাম চলছে না, সেখানে কেন এখনও ট্রাম লাইন রেখে দেওয়া হচ্ছে? রাস্তা ব্যবহারকারীদের দাবি, এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা দরকার ৷ অব্যবহৃত ট্রাম লাইনগুলি তুলে দেওয়া হোক ৷ অথবা, সেগুলির উপর পিচের প্রলেপ দেওয়া হোক ৷ সেটা কর্পোরেশন করুক, কিংবা ট্রাম সংস্থা করুক ৷ তবে, কেউ তো করুক।।প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে শহর কলকাতার ৩০টি রুটে ট্রাম চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ৷ এর মধ্যে কিছু জায়গায় ট্রাম লাইনের উপর পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে ৷ কিছু রুটের উপর ট্রাম চলাচলের জন্য ব্যবহৃত বিদ্যুতের তারও খুলে দেওয়া হয়েছে ৷ বর্তমানে শহরের মাত্র দু’টি রুটে ট্রাম চলছে ৷