এই সরকার কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও খেলাধুলার মানোন্নয়নে ব্যাপক অগ্রাধিকার দিয়েছে

Tripura CM Manik Saha: রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যাপক গতি আনবে ত্রিপুরার বর্তমান সরকার

আগরতলা: ত্রিপুরায় উন্নয়নমূলক কাজে ব্যাপক গতি আনবে বর্তমান রাজ্য সরকার। উন্নয়ন মূলক কাজে কোন ধরণের আপস করা হবে না, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। আগামিদিনে ত্রিপুরায় উন্নয়নমূলক কাজে ব্যাপক গতি আনবে বর্তমান রাজ্য সরকার। উন্নয়নের প্রশ্নে কোনও আপস হবে না। এই সরকার কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও খেলাধুলার মানোন্নয়নে ব্যাপক অগ্রাধিকার দিয়েছে।

সিপাহিজলা জেলার পৃথক তিনটি জায়গায় জনকল্যাণে নিবেদিত উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।  মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হওয়া জনমুখী প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে – সিপাহীজলা জেলার গোলাঘাটিতে দয়ারামপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবন ও টাকারজলা সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনের দ্বারোদঘাটন এবং জম্পুইজলার সুধন্য দেববর্মা স্মৃতি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠ উদ্বোধন।

এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন ত্রিপুরা সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রয়াসের নির্দেশনা অনুসরণ করে কাজ করছে। খেলাধুলো হোক, স্বাস্থ্য হোক বা কৃষি আমরা ত্রিপুরাকে একটি মডেল রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। ডাঃ সাহা বলেন, ওড়িশার নির্বাচনের সময়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি ত্রিপুরাকে উন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।

আরও পড়ুন :  লাল সতর্কতা ৩ জেলায়! বুধবার থেকে ভারী বৃষ্টিতে ভাসবে উত্তরবঙ্গ! এখনই জানুন পর্যটকরা

প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের অনুপ্রেরণামূলক কথা শোনার পর আমাদের আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ২০১৮ সাল থেকে বর্তমান রাজ্য সরকার গুজরাত মডেল অনুসরণ করে ত্রিপুরার উন্নয়নে কাজ করছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বর্তমানে আমাদের এখন ৬টি জাতীয় সড়ক রয়েছে এবং আরও চারটি জাতীয় সড়কের জন্য নীতিগতভাবে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া চারটি রোপওয়ে নির্মাণাধীন রয়েছে। ত্রিপুরায় যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন অনেক উন্নত হয়েছে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে মানুষ আগে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। এখন যারা দীর্ঘদিন পর ত্রিপুরায় আসছেন তারা রাজ্যের উন্নয়ন দেখে অভিভূত প্রকাশ করেছেন। ত্রিপুরার বিজেপি-আইপিএফটি এবং তিপ্রা মথা সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে রাজ্যের উন্নয়নই সকলের মূল লক্ষ্য। ’’

তিনি আরও বলেন, রক্তের যেমন কোন ধর্ম নেই, তেমনি উন্নয়নেরও কোনও ধর্ম নেই। হাসপাতাল, সড়ক ইত্যাদির উন্নয়নের জন্য আমরা বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি। আমরা এডিসি এলাকায় একটি মেডিক্যাল কলেজ খোলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এরজন্য যাবতীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাজ্য সরকার পর্যটন কেন্দ্রগুলির উন্নয়নে কাজ করছে। এজন্য বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন রাজ্যে বিদেশি পর্যটকরাও আসছেন এবং এতে পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি নিশ্চিত যে আগামী দিনে এই বর্তমান সরকার ত্রিপুরায় উন্নয়নের গতি আরও জোরদার করবে।

উল্লেখ্য, দয়ারাম পাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ১৯৯০ সালের ৪ মার্চ থেকে পথচলা শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৬ শয্যাবিশিষ্ট আইপিডি চালুর মাধ্যমে ২৪x৭ হাসপাতাল পরিষেবা শুরু করা হয়। ২০২১ সালে ৬ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে একে ১০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। পূর্ত দপ্তরের (রোড অ্যান্ড বিল্ডিং) বিশ্রামগঞ্জ বিভাগের তত্ত্বাবধানে দয়ারাম পাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবনের নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল। ২০২৩ সালে নির্মাণের কাজ শেষ হয়। নতুন ভবন নির্মাণে মোট ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে।

এদিকে ১৯৬৩ সালে ১০ শয্যাবিশিষ্ট টাকার  সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০টি করা হয়। এর সাথে এক্স-রে, ল্যাব পরিষেবা, ডেলিভারি পরিষেবা এবং অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাও চালু করা হয়। এই নতুন ভবনটি দ্বিতল বিশিষ্ট এবং ৩০টি শয্যা যুক্ত। এর সঙ্গে মর্গ, গ্যারেজ এবং রান্নাঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল এবং নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। নতুন ভবনটির নির্মানে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।

এর পাশাপাশি খেলো ইন্ডিয়া স্কিমে জম্পুইজলা সুধন্য দেববর্মা স্মৃতি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠটি গড়ে তোলা হয়েছে। এই প্রকল্পে ৫ কোটি টাকা ধার্য করা হয়। এরমধ্যে ৪,৯৯,৫৯,০৪২ টাকা মঞ্জুর করা হয়। রাজ্যের যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে।