ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতা: মিসড কলের মাধ্যমে সদস্যদের নিয়ে সতর্ক বঙ্গ বিজেপি। পাশাপাশি রাজ্য বিজেপির লক্ষ্য, বাংলার ১ কোটি ভোটারকে সদস্য করা। পাখির চোখ ২৬। টার্গেট এক কোটি। পরিকল্পনা, পর্যালোচনা, পদক্ষেপ। এই তিন শাহী মন্ত্রেই ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে বঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছতে চায় বঙ্গ পদ্ম শিবির। তবে পদ্মের চিন্তায় নড়বড়ে সংগঠন, ঘরোয়া কোন্দল, এখনও পর্যন্ত অনেক জায়গাতে বুথ কমিটিই তৈরি না হওয়া।
পরিসংখ্যান বলছে, শেষবার রাজ্যে বিজেপির প্রাথমিক সদস্য হয়েছিলেন ৪০ লক্ষের মতো। মিসড কলের মাধ্যমে। যদিও তাঁর মধ্যে ১২ থেকে ১৪ লক্ষকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। বাকিদের কোনও অস্তিত্বই ছিল না। এক কোটি সদস্য করার টার্গেটের মধ্যে এবারও মিসড কলের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ করেছে বিজেপি। তবে পদ্ধতিগত কিছু বদল করেছে। বিজেপি সূত্রের খবর, মিসড কলের মাধ্যমে সদস্য হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে একটি লিংক যাবে। সেই লিঙ্ক খুলে ওই ব্যক্তির ঠিকানা, পেশা এই ধরনের কিছু বিষয় সংক্রান্ত নির্দিষ্ট ফর্ম ফিল আপ করতে হবে। বিজেপির পক্ষ থেকে তা যাচাই করা হবে। তারপরেই প্রাথমিক সদস্য পদ মিলবে।
আরও পড়ুন– রাশিফল ৩১ অক্টোবর: দেখে নিন আপনার আজকের দিন নিয়ে কী জানাচ্ছেন জ্যোতিষী চিরাগ দারুওয়ালা
রাজ্য জুড়ে প্রতি বুথে ১০০ জন করে সদস্য করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে গেরুয়া শিবির। এর জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার সমস্ত স্তরের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বাংলা দখলের স্বপ্নভঙ্গ থেকে শিক্ষা নিয়ে সম্প্রতি বঙ্গ সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লক্ষ্য স্থির করে দিয়ে গিয়েছেন। তবে আরজিকর আন্দোলনে সেভাবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হয়েও দলের আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা না থাকা নিয়ে রাজ্য বিজেপির অন্দরেই নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিজেপির অন্দরে কান পাতলে এও শোনা যায়, বিজেপির থেকে বামেরা বেশি সক্রিয় ছিল আরজিকর ইস্যুতে। তবে এসব নিয়ে ভাবিত নয় পদ্ম শিবির। আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। সেই আবহে রাজ্যে অমিত শাহ এলেও ‘টার্গেট’ যে ২৬ তা স্পষ্ট করেন শাহ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে লক্ষ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ করেছিল বিজেপি। কিন্তু ভোটের পরিসংখ্যানে যারা বিজেপির সদস্য হয়েছিল কার্যত তাদেরই ভোট পাইনি বিজেপি বলে দলের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে বলে খবর। নতুন সদস্যদের নিয়ে ত্রুটি যে ছিল তা স্বীকার করে নিয়ে ২৬-এর বিধানসভা ভোট নিয়ে আশাবাদী রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। শাহী ফর্মুলার ওপরই ভরসা রাখছে বঙ্গ পদ্ম শিবির। মূলত আগামী বিধানসভা নির্বাচনে হিন্দুত্ব অস্ত্রে শান দিয়ে ৩ থেকে ৪ শতাংশ ভোট বৃদ্ধির লক্ষ্যে ময়দানে নেমেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল।
রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সদস্য সংগ্রহ অভিযানের যে টার্গেট দেওয়া হয়েছে সেই লক্ষ্য পূরণ করে তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। মানুষ আজ তৃণমূলের সঙ্গে নেই। বামেরা শূন্য। এ রাজ্যে কংগ্রেসেরও কোনও অস্তিত্ব নেই। বাংলার মানুষ বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার ব্যাপারে বাইনারি সেট করে নিয়েছেন।’’ তবে একুশে স্বপ্নভঙ্গ। ফের ২৪ থেকেই ২৬-কে পাখির চোখ করে সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে ময়দানে নেমে পড়েছে বঙ্গ পদ্ম ব্রিগেড। ১ কোটি সদস্য করার টার্গেট পূরণ করে ২৬-এর ভোটে বঙ্গ জয়ের স্বপ্নপূরণ করা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই একাংশের মনে নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও সব প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়ই বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।